নয়াদিল্লি: গাড়ি চাপা দিয়ে কৃষকদের (Lakhimpur Kheri) মেরেছে ছেলে৷ তার জন্য বাবাকে মন্ত্রীর পদ ছাড়তে হবে কেন? কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির (MoS Ajay Mishra Teni) পদত্যাগের দাবিতে বিরোধীরা যতই অনড় থাকুক না কেন, ছেলের পাপের শাস্তি বাবাকে দিতে নারাজ বিজেপির (BJP) শীর্ষ নেতৃত্ব৷ তাছাড়া অজয় মিশ্রকে পদত্যাগ (Ajay Mishra Resignation) করতে বলা হলে ঘুরিয়ে বিরোধীদের দাবিই মেনে নেওয়া হবে৷ যা উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা ভোটের (Uttar Pradesh Assembly Election 2022) আগে কংগ্রেসকে কিছুটা অক্সিজেন জোগাতে পারে বলে মনে করছে গেরুয়া শিবির৷ অতএব সিটের রিপোর্টে যাই বলা হোক না কেন অজয় মিশ্র টেনিকে এখনই পদত্যাগ করতে বলছে না বিজেপি৷ এমনটাই সূত্রের খবর৷
তবে লখিমপুরে গাড়িতে পিষে চার কৃষকের মৃত্যুর ঘটনায় যথেষ্ট অস্বস্তিতে বিজেপি৷ চাপে রয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিজেও৷ বিজেপির চাপ আরও বেড়েছে সিটের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসায়৷ সেই চাপ যে অজয় মিশ্র নিতে পারছেন না, বুধবার লখিমপুরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ব্যবহারেই তা স্পষ্ট হয়েছে৷ সিটের রিপোর্টে বলা হয়েছে, কোনও গাফিলতি নয়, পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করেই ৩ অক্টোবর লখিমপুরে আন্দোলনরত কৃষকদের উপর গাড়ি চালিয়ে দেওয়া হয়েছিল৷ ওই ঘটনায় অভিযুক্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয়ের ছেলে আশিস বর্তমানে জেলে বন্দি৷
বুধবার লখিমপুরে অক্সিজেন প্ল্যান্টের উদ্বোধনে যান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী৷ তাঁর কাছে এক সাংবাদিক জানতে চেয়েছিলেন, সিটের রিপোর্টের পর আশিসের বিরুদ্ধে আর কোনও ধারা যুক্ত হবে কি না? প্রশ্ন শুনেই তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন অজয় মিশ্র৷ সাংবাদিকের সঙ্গে অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করেন তিনি৷ মাইক সরিয়ে তাঁর মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টাও করেন৷ এমনকী সাংবাদিককে ‘চোর’ বলেও কটাক্ষ করেন বিজেপির বিতর্কিত মন্ত্রী৷ ওই দিনই আবার লোকসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে অজয় মিশ্রের অপসারণ চেয়ে জোরালো দাবি তোলে কংগ্রেস৷ যার জেরে দফায় দফায় মুলতুবি হয় অধিবেশন৷ একদিকে সিটের রিপোর্ট, অন্যদিকে বিরোধীদের দাবি৷ এই জোড়া চাপে সাংবাদিকের প্রশ্নে মেজাজ হারান অজয় মিশ্র৷ তাঁর সব রাগ গিয়ে পড়ে সাংবাদিকদের উপর৷
আরও পড়ুন: ১৮ নয়, মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ২১, নয়া প্রস্তাব পাশ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায়
বিজেপি সূত্রে খবর, বুধবারের ঘটনার পর অজয় মিশ্রকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু তাঁকে ইস্তফা দিতে বলা হয়নি৷ বৃহস্পতিবার তাঁকে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়৷ সেই মতো এ দিন সকালে নর্থ ব্লকে ঢুকতে দেখা যায় তাঁকে৷ পরে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী আগেই জানিয়েছেন, বিষয়টি বিচারাধীন বলে লখিমপুর নিয়ে সংসদে আলোচনা করা যাবে না৷
আরও পড়ুন: অজয় মিশ্রের বরখাস্তের দাবিতে ফের উত্তাল সংসদ
কিন্তু বিজেপির দাবিতে চিঁড়ে ভিজছে না বিরোধীদের৷ অজয় মিশ্রের পদত্যাগের দাবিতে অনড় তাঁরা৷ রাজনৈতিক মহলের মতে, উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে লখিমপুরে কৃষক মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে বিজেপির উপর চাপ বাড়ানোর কৌশল নিয়েছে কংগ্রেস৷ তিন কৃষি আইন বাতিলের পর তাদের হাতে অস্ত্র বলতে এখন লখিমপুরই৷ সিটের রিপোর্ট বিরোধীদের সেই অস্ত্রকে আরও ধারালো করে দিয়েছে৷