তুফানগঞ্জ: দিনহাটা উপনির্বাচনে (TMC) রেকর্ড ভোটে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী উদয়ন গুহ। তার পর মাসখানেক কেটে গেলেও কোচবিহারে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব (TMC in Coochbehar) থামছেই না। দিন দুয়েক আগেই তৃণমূলের এক কর্মী খুন হয়েছেন কোচবিহারে। দলেরই একটা অংশের দিকে আঙুল উঠেছে। দলীয় সভাকে কেন্দ্র করে ফের প্রকাশ্যে চলে এলে (TMC) রবীন্দ্রনাথ ঘোষ (Rabindranath Ghosh) ও উদয়ন গুহের (Udayan Guha) গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। নাম না করে নাটাবাড়ির প্রাক্তন বিধায়ক রবীন্দ্রনাথকে কটাক্ষ করলেন উদয়ন। বলাই বাহুল্য, বার বার দলের কোন্দল এভাবে প্রকাশ্যে চলে আসায় বেশ অস্বস্তিতে জোড়াফুল শিবির। জেলা নেতৃত্বর কাদা ছোড়াছুড়িতে দলের কর্মী-সমর্থকরাও কিছুটা বিরক্ত।
রবীন্দ্রনাথ ঘোষের একসময়ের খাসতালুক বলে পরিচিত নাটাবাড়িতে তৃণমূলের একটি কর্মীসভা ছিল রবিবার। আমন্ত্রণপত্রে এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষের নাম না থাকায় বিতর্ক দানা বাঁধে। আজ রবীন্দ্রনাথকে বাদ দিয়েই কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয় নাটাবাড়ি হাইস্কুলের মাঠে। উপস্থিত ছিলেন কোচবিহার জেলার তৃণমূলের চেয়ারম্যান উদয়ন গুহ, এনবিএসটিসির চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায়, তুফানগঞ্জ-১ ব্লকের সভাপতি জগদীশ বর্মন জেলা পরিষদের সদস্য আব্দুল জলিল আহমেদরা। কোচবিহার জেলা সভাপতি গিরীন্দ্রনাথ বর্মনকে অবশ্য মঞ্চে দেখা যায়নি। পরে জানা যায়, অসুস্থতার কারণে তিনি সভায় আসতে পারেননি।
উদয়ন, পার্থ তাঁদের বক্তব্যের সিংহভাগটা ব্যয় করেছেন রবীন্দ্রনাথকে আক্রমণ করে। তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য, জেলায় যারা সাংগঠনিক দায়িত্বে রয়েছেন দলে তাদের কথাই শেষ কথা। উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘লম্বা নেতা, সরু নেতা, মোটা নেতার কথায় জেলা সংগঠন চলতে পারে না। কেউ যদি ভাবে কেবল নিজের হাতেই দলের ক্ষমতা থাকবে, সেটা ভুল। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন যাকে জেলার দায়িত্ব দেবেন, তখন মাথা পেতে তাঁকে মেনে নিয়ে কাজ করতে হবে। এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত রয়েছে উদয়ন গুহ এবং গিরীন্দ্রনাথ বর্মনের উপর।’
আরও পড়ুন: TMC Coochbehar: তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে ভাঙচুর দলের শ্রমিক সংগঠনের সভামঞ্চ
নাম না করে রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে কটাক্ষ করতে গিয়ে উদয়ন গুহ বলেন, ‘দল যাকে যখন দায়িত্ব দেবে, তাঁকে মেনেই সকলকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। কোনও লম্বা নেতার কথায় কোচবিহার জেলা দল চলতে পারে না। জেলা সভাপতি ও জেলা চেয়ারম্যানের কথাই শেষ কথা। প্রকাশ্যে ব্লক সভাপতিকে চড় মারে কিংবা কথায় কথায় বুক ফুলিয়ে চলার চেষ্টা করলেই নেতা হওয়া যায় না। লম্বা নেতা দলীয় নির্দেশ না মেনে ইচ্ছামত কাজ করছেন। দলে বাপ-বেটা শেষ কথা নয়। এবারে বিধানসভা নির্বাচনে নাটাবাড়ি এলাকার সাধারণ মানুষ যোগ্য জবাব দিয়ে দিয়েছে।’