তিনি শুধু মিউজিক কম্পোজার নন। তিনি একজন সুলেখক, কবি, থিয়েটার অভিনেতা এবং রাজনীতিবিদও বটে। ২৪ পরগনার গাজীপুরের একটি গ্রামে কিংবদন্তি সঙ্গীত পরিচালক সলিল চৌধুরী জন্মগ্রহণ করেছিলেন আজকের দিনে। তিনি ইন্ডিয়ান পিপলস থিয়েটার অ্যাসোসিয়েশন অর্থাৎ আইপিটিএ- এর পক্ষ থেকে স্ট্রীট থিয়েটার করে লড়াই চালিয়েছেন। তিনি একজন বামপন্থী সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন। বাম রাজনীতির সঙ্গে তিনি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে ছিলেন। সলিল চৌধুরীর পিতা ছিলেন পেশায় ডাক্তার। কিন্তু তার সংরক্ষণে ছিল বহু গানের রেকর্ড। যা শুনতে শুনতে বেড়ে উঠেছিলেন সলিল।ক্রমশ অনুপ্রাণিত করেছিল তাঁকে। ছোটবেলায় বেশ কিছুটা সময় তিনি আসামেও কাটিয়েছিলেন। তিনি নিজেই এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন যুবক বয়সে তিনি সক্রিয়ভাবে ছাত্র আন্দোলনে সাড়া দিয়েছিলেন।
ছাত্র- কৃষকদের আন্দোলন নিয়ে গান তৈরি করেছিলেন। এক সময় যখন তার নামেও গ্রেফতারি পরোয়ানা বেরিয়েছিল তখন তিনি সুন্দরবনে গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন। সেখানে বসেও আন্দোলনের গান বেঁধেছিলেন। আইপিটিএ তে থাকাকালীন তিনি অসংখ্য শৃংখল-মোচনের গান বেঁধেছিলেন। তার অনেক পরে তাঁর ছবির দুনিয়ায় প্রবেশ। শুধু বাংলা ছবির জগৎ নয় হিন্দিতে তিনি একজন সফল সঙ্গীত পরিচালক। কৃষকদের নিয়ে উদ্বাস্তুদের নিয়ে সলিল চৌধুরীর লেখা চিত্রনাট্য প্রখ্যাত বাঙালি চিত্রপরিচালক হৃষিকেশ মুখার্জী রং দারুণ পছন্দ হয়েছিল। যা নিয়ে ১৯৫৩ সালে তৈরি হয়েছিল ‘জামিনদার’। বাংলা ও হিন্দি ছাড়াও তিনি ২৬ টি মালায়ালাম ছবি এবং দশটি অন্যান্য ভাষার ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনার কাজ করেছেন। সলিল+সংগীত মানে দেশীয় ও পাশ্চাত্যের সুন্দর আকর্ষণীয় মিশেল। তিনি একজন সফল ইউনিভার্সাল মিউজিক তৈরির কারিগর।বহু গণসঙ্গীতের স্রষ্টা তিনি। তিনি নিজেই বলেছিলেন,’আমি এমন সংগীত তৈরি করতে চাই যা কাঁটাতার ভেদ করতে পারবে’।