পূর্ব বর্ধমান : কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে রোগী শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ উঠল এক অস্থায়ী সাফাই কর্মীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, রবিবার রাতে মহিলা ওয়ার্ডের ভিতরে ঢুকে ওই রোগীর সঙ্গে অভব্য আচরণ করে। এমনকী তাঁকে শ্লীলতাহানি করার পাশাপাশি নানা কটু কথাও বলে। ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরেই হাসপাতালের ওই অস্থায়ী সাফাই কর্মী দেবু কুন্ডুকে গ্রেফতার করেছে কাটোয়া থানার পুলিশ। এই ঘটনায় হাসপাতালের ভিতর মহিলা ওয়ার্ডের নিরাপত্তা নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছে।
জানা গিয়েছে, রবিবার সকালে কেতুগ্রাম থানা এলাকার এক মহিলা শ্বাসকষ্ট নিয়ে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের মহিলা বিভাগে ভর্তি হন। তিনি পাঁচবছর ধরে শ্বাসকষ্ট রোগে ভুগছেন। তাঁর স্বামী ভিনরাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে কাজ করেন। তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে ওয়ার্ডে তাঁর মা ছিলেন। রাতে খাওয়াদাওয়ার পর তাঁর মা বাসন ধুতে যান। আর সেই সুযোগে হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে ঢুকে পড়েন দেবু কুন্ডু নামে ওই অস্থায়ী সাফাই কর্মী।
ওই মহিলার অভিযোগ, এদিন রাত সাড়ে আটটা নাগাদ আচমকা ঢুকে দেবু কুন্ডু তাঁর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। এমনকী ওই মহিলাকে নানারকম কুরুচিকর কথাও বলে অভিযুক্ত। এরপর সোমবার সকালে ওই মহিলা তাঁর পরিবারের লোকজনদের রাতের সব ঘটনার কথা জানান। এরপর ওই মহিলা হাসপাতালের সুপারকে লিখিতভাবে অভিযোগ জানান। কাটোয়া থানাতেও অভিযোগ দায়ের করা হয়। হাসপাতালের পক্ষ থেকেও পুলিশকে লিখিত দেওয়া। এর পরেই পুলিশ এসে অভিযুক্ত অস্থায়ী সাফাই কর্মী দেবু কুন্ডুকে গ্রেফতার করে।
এই বিষয়ে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার ধীরাজ রায় বলেন, ‘আমি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশকে জানিয়েছি। তবে, ওই নামে আমাদের হাসপাতালের কোনও স্টাফ নেই। তা সত্বেও দেবু কুন্ডু হাসপাতালের ভিতরে কীভাবে কাজ করে তা আমি তদন্ত করে দেখব।’
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, দেবু কুন্ডু কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে প্রায় কয়েক দশক ধরে অস্থায়ী সাফাই কর্মী হিসাবে কাজ করেন। হাসপাতালের সাফাই কর্মীর পোশাক পড়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডে তাঁর অবাধ বিচরণ। রোগীদের দেখভাল করেন। এছাড়াও রোগীদের বিছানা পরিষ্কার থেকে শুরু করে সবই দেবু কুন্ডু করেন দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে। এখানেই প্রশ্ন উঠেছে, হাসপাতালে কোনও স্টাফ না হয়ে কীভাবে সে বছরের পর অস্থায়ী সাফাই কর্মী হিসাবে কাজ করে। তাছাড়া হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ডে নিজস্ব সিকিউরিটি থাকা সত্বেও রাতে কীভাবে অভিযুক্ত মহিলা ওয়ার্ডের ভিতরে ঢুকেছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।