কলকাতা: ‘দাদার জন্য নাড়ু বানিয়ে রাখা হয়েছিল। ভাইফোঁটার বাকি সমস্ত আয়োজনও মোটামুটি হয়েই গিয়েছিল। তারই মধ্যে দুঃসংবাদটা আসে।’ কথাগুলো বলতে বলতে গলা ভার হয়ে আসে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বোন তনিমা চট্টোপাধ্যায়ের। দাদা যে নেই, তা এখনও তাঁর বিশ্বাস হচ্ছে না।
প্রতিবার তনিমাদেবী বাড়িতেই ভাইফোঁটার আয়োজন হত। চার বোন একসঙ্গে বাজার করতেন। সেদিন বাড়ির রাঁধুনির ছুটি থাকত। বোনেরাই রান্না করতেন দাদার প্রিয় সব খাবার। তনিমাদেবীর কথায়, দাদা ছোট বোনের হাতের নাড়ু ভালোবাসত। ওটা ছাড়া ভাইফোঁটাটা ঠিক জমতই না দাদার।
আরও পড়ুন: কেমন ছিলেন ব্যক্তি সুব্রত? স্মৃতিচারণায় শাসক থেকে বিরোধীরা
চার বোন একই রকমের শাড়ি পরতেন ওইদিন। আর দাদা সুব্রত পরতেন ধুতি-পাঞ্জাবি। ভাইফোঁটার উপহার নিয়েও মজার স্মৃতি রয়েছে বলে জানালেন তিনি। তনিমাদেবী বলেন, দাদাকে উপহারের প্রতি বিশেষ নজর দিতেন। কী কী উপহার রয়েছে, তা ফোঁটা শুরুর সময়ই দেখে নিতেন। গুনেও নিতেন।
ভাইফোঁটার খাবার নিয়েও অনেক স্মৃতি রয়েছে তনিমাদেবীর। তিনি বলেন, দাদার জন্য সেরা আতা আনতাম। অনেক রকমের রান্না হতো। একের এক দোকানের এক-একটা মিষ্টি পছন্দ ছিল দাদার। খেতে বসে সমস্ত রান্নাই চেখে দেখতেন দাদা। অল্প হলেও প্রতিটা খাবার খেতেন।
আরও পড়ুন: সাংবাদিকদের কাছে শেষ দিন পর্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন মন্ত্রী সুব্রত
বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ২২ মিনিট নাগাদ মৃত্যু হয় সুব্রতর। বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। ২৪ অক্টোবর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাতে এসএসকেএম হাসপাতালে যান তিনি। চিকিৎসকের পরামর্শে সেদিনই হাসপাতালে ভর্তি হন। শ্বাসকষ্ট বাড়ায় উডবার্ন ওয়ার্ডের আইসিসিইউ-তে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। পরে অবস্থার অবনতি হয়। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ।