Placeholder canvas
কলকাতা সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫ |
K:T:V Clock
চতুর্থ স্তম্ভ : উপনির্বাচন কী বলল?
সম্পাদক Published By:  • | Edited By:
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২ নভেম্বর, ২০২১, ১০:৩০:৫৮ পিএম
  • / ৫৫৮ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • • | Edited By:

এখন যে মানুষজন ৪০ কি ৫০ এর কোঠায়, তাঁদের মধ্যে যাঁরা খড়দাতে থাকতেন, ১৫/২০ বছর আগে একজনও স্বপ্নেও ভেবেছিলেন, খড়দহে সিপিএম হেরে যাবে? দিনহাটার কোনও বাসিন্দা স্বপ্নেও ফব, মানে ফরোয়ার্ড ব্লক ছাড়া আর কেউ দিনহাটাতে জিততে পারে, ফবর জামানত জব্দ হতে পারে, ভেবেছিলেন? গোসাবাতে তখন মানুষ মানে আর এস পি, কোদাল বেলচা। শান্তিপুরে অবশ্য বনেদিয়ানা কংগ্রেসেরই ছিল।

সেই বনেদিয়ানার কোঁচা ধরেই, এঁড়েদার ঘোষাল ফ্যামিলির ঋজু ঘোষাল, কং প্রার্থী হয়েছিলেন গতবার, হেরেছেন। আসলে সারা রাজ্যেই কংগ্রেস নেই তো শান্তিপুরে আসবে কোথ্বেকে? সেই খড়দা, শান্তিপুর, গোসাবা আর দিনহাটায় এখন তৃণমূলের ঘাসফুল সর্বত্র, কোনজন জিতলেন আর কোনজন হারলেন জানানোর কোনও মানেই হয় না, কারণ যাঁরা হেরেছেন, কাল তাঁরাই, হাতে তৃণমূলের পতাকা নিয়ে উন্নয়ন যজ্ঞে সামিল হতেই পারেন, এটাই এখন চল। কাজেই এসব উপনির্বাচন কিছুই বলছে না, এর রেজাল্ট থেকে কোনও সিদ্ধান্তে আসা অবান্তর, অর্থহীন।

আমাদের দেশের রাজনীতিতে স্বাধীনতার পরে কংগ্রেস, এক আদর্শ নিয়ে এসেছিল বৈকি, নেহেরুর সমাজতান্ত্রিক ধাঁচের অর্থনীতির আদর্শ, রাষ্ট্রায়ত্ব শিল্প হবে, মানুষ চাকরি পাবে, খেতে পাবে আবার টাটা, বিড়লা, ডালমিয়া, গোয়েঙ্কারাও পুঁজি খাটাবে, লাভ কামাবে। ইন্দিরা গান্ধীও খানিক সেরকম ভাবনা চিন্তা করতেন, রাজন্য ভাতা বিলোপ, কয়লা খনি, ব্যাঙ্ক ন্যাশনালাইজেশন, গরিবী হঠাও স্লোগান ইত্যাদি তারই অংশ, তারপরে কংগ্রেস এসব ধারণা ঝেড়ে ফেলে বাজার অর্থনীতি, বিশ্বায়নের ধ্বজা নিয়ে মাঠে নামার পরে তেরঙ্গার ওপর চরকা, আর গান্ধী টুপি ছাড়া কংগ্রেসের আর কিছুই অবশিষ্ট থাকেনি, নেইও, আপাতত ভোটে জেতার জন্য যা করা যায় তাই করো।

নরসিমহা রাও কংগ্রেস আদর্শের বিসর্জন দেন, মনমোহন সিংহ কোনও দিনও কংগ্রেসী ছিলেনই না। কিন্তু সেই নরসিমহা রাও, মনমোহন অন্তত ১৫ বছর দেশ শাসন করেছেন, দেশের পুরনো কংগ্রেসীরা মারা গেছেন, প্রাক্তন হয়ে গেছেন, ক্যালেন্ডারেই আছেন জহর ইন্দিরা। কংগ্রেস এখন ক্ষমতা চায়, ক্ষমতা ফিরে পেতে চায়, কিন্তু এই বিরাট সময়ে, অন্তত একটা আদর্শ তাদের এখনও টিঁকে আছে, ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ, তারা আর যাই হোক কোনওদিনও কমিউনাল পলিটিক্সের শরিক হন নি, এটা ছাড়া অ্যালান অক্টভিয়ান হিউমের জাতীয় কংগ্রেসের আর কিছুই পড়ে নেই, ইদানিং ইয়েচুরির সংসর্গে রাহুল গান্ধী ক্রোনি ক্যাপিটাল, ন্যাশনাল ওয়েলথ ইত্যাদি কিছু জারগন ব্যবহার করছেন বটে, কিন্তু ক্ষমতায় এলে টাটাকে দিয়ে দেওয়া এয়ার ইন্ডিয়া আবার ফিরিয়ে নেবেন কিনা, তা নিয়ে স্পিকটি নট।

স্বাধীনতার বহু আগে থেকেই দেশে বামপন্থী, মার্কসিস্ট, সোশ্যালিস্টরা ছিলেন, প্রারম্ভিক পর্বে তাদের অসম্ভব কংগ্রেস বিরোধিতাই ছিল, তাদের রাজনীতি, তাদের আদর্শ। এক আবছা বিপ্লবের কথা বলে গেছেন মূল ধারার মার্কসিস্টরা, কিন্তু ক্ষমতায় আসার পরে তাদের শিল্পনীতি বিশ্বায়নের পথেই চলেছে, কৃষকের জমি অধিগ্রহণ করে টাটাকে জমি দেবার নীতিতেই চলেছেন শুধু নয়, তার তত্বায়নও হয়েছে। অন্যদিকে সোশ্যালিস্টদের আলাদা কোনও অর্থনৈতিক প্রোগ্রাম? ছিলই বা কবে? উলটে তাদের অনেকেই, অত্যন্ত পিছিয়ে পড়া সামন্ততান্ত্রিক ধ্যান ধারণা নিয়েই চলেছেন, লালু বা মুলায়মের দিকে তাকান। একদা লোহিয়াইট সমাজবাদী নীতিশ কুমার, জর্জ ফার্ণান্ডেজ তো বিজেপির শরিক হয়েছেন, আছেন।

আর ঠিক এই মুহূর্তে কমিউনিস্ট মার্কসিস্টরা কেরালায় টিঁকে আছেন, তা তাদের আদর্শের জন্য নয়, গভর্নেন্স এর জন্য, কেরালায় বিপ্লবের চর্চা হচ্ছে না, সেখানে উন্নয়ন, প্রশাসন এর কথা হচ্ছে, তাঁরাও শেষমেষ আদানিকে আটকানোর জন্য জান প্রাণের লড়াইও লড়লেন না, সবরিমালাই নিয়ে এখনও দোদুল্যমান, জঘন্য সিডিশনের মামলা, ইউএ পি এ লাগু করা এখন তাদের আদর্শের পরিপন্থী নয়, তার সঙ্গে দোটানা আছে কংগ্রেসের রাজনীতি নিয়ে, বিলক্ষণ জানেন সারা দেশে কংগ্রেসের হাত ধরে চলা সি পি আই, সি পি এম, রাজ্যে কংগ্রেসের বিরোধিতা আদর্শের জন্য নয়, ক্ষমতায় টিঁকে থাকার জন্যই করছে।

বিজেপি,  ১৯২৫ সালে যে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ তৈরি হয়েছিল, তাদেরই রাজনৈতিক শাখা, তাদের রাজনীতির সঙ্গে হিন্দুত্বকে মেলাতে পেরেছে, সফলভাবেই পেরেছে, কিন্তু তাদের সমস্যা অর্থনীতি নিয়ে, সেখানে তারা সম্পূর্ণ দিশাহীন, মোদি সরকার খোলা বাজার অর্থনীতির কথা বলছে, রাষ্ট্রায়ত্ব শিল্পের অবসানের কথা বলছে, কর্পোরেট গ্রোথের কথা বলছে, নয়া শ্রম কোড, নয়া কৃষি বিলের কথা বলছে বটে, কিন্তু নাগপুর যে সবক্ষেত্রে একমত তা নয়, খোলাবাজার অর্থনীতি বা বিশ্বায়ন নয়, তাদের এক নিজস্ব স্বদেশী অর্থনীতির চিন্তাধারা আছে, যা স্বদেশী জাগরণ মঞ্চ, গোবিন্দাচার্য ইত্যাদির ভাষণে পাওয়া যায়, সরকারের শ্রম আইন বা নতুন শ্রম কোডের সঙ্গে হিন্দ মজদুর সভা, আর এস এস এর শ্রমিক সংগঠন, একমত নয়, আর এস এস এখনও কৃষি বিল নিয়ে ধন্দে, নরেন্দ্র মোদি জয় এনে দিয়েছেন বটে, আনছেনও, কিন্তু আর এস এস এর আদর্শ?

আর এস এস এর বহু নেতা, প্রচারক, কর্মীর এ নিয়ে প্রশ্ন আছে, যে ভাবে কংগ্রেস বা অন্য আর চার পাঁচটা দল ভেঙে নির্বাচন জেতার চেষ্টা হচ্ছে, তা নিয়েও নাগপুরের নেতারা খুশি নন, এখনও ভোট আনতে পারছেন, এখনও কেন্দ্রে সরকার আছে বলে সেই মতবিরোধ সামনে আসছে না, ক্ষমতা না থাকলে, চলে গেলে সেই ঘায়ের দগদগে চেহারাটা বাইরে চলে আসবে। তাদেরও এখন লক্ষ্য যে কোনও ভাবে, অন্য দল ভাঙিয়ে ক্ষমতা বাগিয়ে নেওয়া।

অন্য আর পাঁচটা আঞ্চলিক দলের ওসব আদর্শ, ইত্যাদি কিছুই নেই, আছে বলে তাঁরা দাবীও করেন না, সে দমদমে মমতাবাদী ভবন খুলে বসলেও না। মানে, একবিংশ শতাব্দীর রাজনৈতিক আদর্শ ক্রমশ উইদারিং অ্যাওয়ে, ক্রমশ লোপ পাচ্ছে, তার জায়গায় আসছে গভর্নেন্স, পাইয়ে দেওয়া, বিভিন্ন জনগোষ্ঠির ইকুয়েশন, ক্ষমতার ভাগাভাগি, সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য অংক কষা। কোনও রাজনৈতিক রসায়ন নয়, কোনও আদর্শ নয়, কেবল সংখ্যাতত্ত্বের ওপর দাঁড়িয়ে আছে আজকের রাজনীতি, না হলে এই কদিন আগে দিনহাটায় তৃণমূলের হার, আজকে রেকর্ড জয়কে ব্যাখ্যা করা যাবে না।

আমি ভুল করিয়াছি মা গো, বলে যে সব নেতারা আবার তৃণমূলে ফিরে আসছেন, তাঁরা কদিন আগে যে বিষ ছড়িয়েছেন, আজ যা বলছেন, তার ব্যাখ্যা করা যাবে না, ব্যাখ্যা করা যাবে না সেই লোকটির যার হাতে আজও চে গুয়েভারার উল্কি আঁকা, যিনি মার্কসিস্ট কমিউনিস্ট থেকে এখন হিন্দু রাষ্ট্রের উদগাতা, কোনও যুক্তি দিয়েই সেই ছেলেটির রাজনীতিকে বোঝা যাবে না, যে কদিন আগে ডফলি নিয়ে আজাদি আজাদী বলে শ্লোগান দিল, যে আজ কংগ্রেসে। মানে ক্রমশ ছায়া ঘনায়েছে মনে মনে, ক্রমশ মিছিলের সেই মুখেরা হারিয়ে গেছে, ক্রমশ স্বপ্ন দেখার সাহস দেখাতে ভুলে যাচ্ছে মানুষ, কি ৮০-র বৃদ্ধ, কি ২১ এর যুবক, সবার হাতে নোট বই, সরল পাটিগণিতের হিসেব, কড়া নজর হাওয়া মোরগের দিকে, হাওয়া কোন দিকে বয়? পাল্লা কোন দিকে ভারি, সেই দিকেই দিতে হবে পাড়ি। আগে কি বলেছিলাম? আগে কি ভেবেছিলাম? কী এসে যায় তাতে, আপাতত কোন অঙ্কে, কোন সহজ হিসেবে মইয়ে চড়া যাবে, সেটাই বিবেচ্য।

এবং তাই খুব স্বাভাবিক, নয়া প্রজন্মের ঝকঝকে তরুণ আজ রাজনীতি বিবর্জিত, ছেলেবেলার নারী বিবর্জিত নাটকের মত আদর্শ বিসর্জন হয়ে গেছে, তাদের চোখের সামনে। তাদের কেউ অধ্যাপক হচ্ছে, কেউ লেখকও, কেউ ডাক্তার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউ বা রাজনৈতিক দলের নেতা, স্বপ্ন নয়, স্বপ্ন নয় ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকে একটাই তাল, কামিয়ে নাও, কামিয়ে নাও। ব্যতিক্রম নেই? ধ্যাৎ, তাই হয় নাকি? ব্যতিক্রম তো নিয়মকেই প্রতিষ্ঠা করে, প্রান্তিক সেসব কিছু মানুষও আছেন, আছে কিছু স্বপ্ন দেখা চোখ, শব্দ গন্ধ বর্ণ নিয়ে তারাই এখনও পৃথিবীর পাঠশালার ভরসা, তারাই জাহাজের মাস্তুল আর হাল ধরে বসে আছে, তারাই নোয়া।

তাদের চোখ আজ টিভির পর্দায় ছিল না যে, টিভির পর্দা কেবল নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত ছিল, যে নির্বাচনে কে জিতল? তাতে কিই বা এসে যায়, জয়ী আর হেরো পক্ষ যে কোনও মুহুর্তে হাত ধরে বলতেই পারে, আয় ভাই, ঘরওয়াপ্সি হোক তোর, স্বাগতম।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১ ১২
১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮ ১৯
২০২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫ ২৬
২৭ ২৮ ২৯ ৩০  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

কেমন যাবে এপ্রিল মাসের এই সপ্তাহ
সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫
জঘন্য ফুটবল, সুপার কাপ থেকে বিদায় ইস্টবেঙ্গলের
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
২০২৬ বিশ্বকাপ খেলবেন? বড় ঘোষণা মেসির
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
সোমবার এসএসসি ভবনের সামনে ধরনায় বসবেন চাকরিহারারা
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
অলৌকিক! মন্দির উদ্বোধনের আগেই দিঘায় ভেসে এল জগ্ননাথ মূর্তি
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
পাকিস্তানে আক্রান্ত হিন্দু মন্ত্রী, নিন্দা শেহবাজ শরিফের
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
‘রাম-বাম’ তত্ত্বে বামেদের ব্রিগেড সমাবেশকে খোঁচা কুণাল ঘোষের
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
নতুন করে অশান্তির খবর নেই, এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার ২৮৯ : জঙ্গিপুর পুলিশ সুপার
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
খেলা হবের পাল্টা ‘নেমে খেলার ডাক’ সেলিমের
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
মুর্শিদাবাদ প্রসঙ্গে সম্প্রীতির বার্তা, ব্রিগেডে কী বললেন সেলিম?
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
ব্রিগেড থেকে তৃণমূল-বিজেপিকে একযোগে আক্রমণ অনাদি সাহুর
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
দার্জিলিং-এ বিকল্প রাস্তা চাইছে মোর্চা, কেন্দ্রকে চিঠি রোশন গিরির
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
ভুল বোঝাবুঝি থেকে মারাত্মক ঘটনা ভাবতে পারছে না বিহারের বেতিয়ার পুলিশ লাইন
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
আজই প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন হতে পারে লিভারপুল!
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দেবেন রাহুল
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.
Developed By KolkataTV Team