দুর্গাপুর : কয়লা খাদানের কাজ খুব ঝুঁকির। পরিজনেরা ফিরে আসবেন তো, তাই নিয়ে চিন্তা থাকে পরিবারের সকলের। একমাত্র ভরসা তখন খাদান কালী। তাই প্রতি বছর নিয়ম মেনে দীপাবলিতে খাদান কালীর পুজো হয়।
কথিত রয়েছে, ১৯৬৮-তে কয়লা বোঝাই ট্রাক ডুবে যায় খাদানে। ইসিএলের কাজোরা এরিয়ার বাবুইশোল ইউনিটের ঘনশ্যাম কোলিয়ারির পরিত্যক্ত জল থেকে ট্রাক তোলার কাজ শুরু হয়। ক্রেন আনা হয়। ডুবুরি ডাকা হয়। সেই ট্রাক তুলতে ক্রেনের চেন বারবার ছিঁড়ে যায়। কোলিয়ারির ম্যানেজার মাতৃসাধক অমর ঘোষকে অনুরোধ করেন মা কালীর কাছে মানত করার জন্য। তারপরই জলভরতি খাদান থেকে উঠে আসে ট্রাকটি।
এক সময় স্থানীয় ব্যক্তি মতিলাল চক্রবর্তী কালী আরাধনা শুরু করেন। প্রায় ১০০ বছর আগেকার কথা। কোনও এক কারণে তিনি পরিবার নিয়ে অন্য জায়গায় চলে যান। তারপর থেকে জঙ্গলে বিনা আরাধনাতেই পড়ে থাকেন মা।
আরও পড়ুন : কালীপুজোয় লাভের আশায় দিন গুনছে ডাকের সাজ তৈরির শিল্পীরা
১৯৭১-এ ঘনশ্যাম কোলিয়ারির লোডিংবাবু অমর ঘোষকে মা কালী স্বপ্নাদেশ দেন। স্বপ্নে মা তাঁর কাছ থেকে পুজো চান। স্বপ্নাদেশ পেয়ে অমরবাবু নিজেই মন্দির তৈরি করা শুরু করেন। আর্থিক দুরবস্থায় মন্দির তৈরির কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
সেই সময় স্বপ্নাদেশ পেয়ে একদল মুসলিম যুবক এগিয়ে আসেন। বেদির চারপাশে ত্রিশুল লাগানো হয়। খাদান কালীর কোনও মূর্তি হয় না। শ্যামাকালীর পট পুজো হয়। মন্দিরের মূল দরজা দক্ষিণ দিকে। একটি ছোট পাথরকেই কালীরূপে পুজো করা হত। অন্ডালের বক্তারনগরের পলাশবনের এই জায়গায় মানুষজন ভয়ে আসতেন না। কয়লা বোঝাই ট্রাক উঠতেই, খাদান কালীর মহিমা ছড়িয়ে পড়ে।