আহমেদাবাদ: হিন্দু (Hindu) এলাকায় মুসলিম (Muslim) হোটেল (Hotel) থাকা চলবে না৷ করাণ, দেশের কোথাও মন্দির (Temple) সংলগ্ন এলাকায় মুসলিম মালিকানাধীন হোটেল নেই৷ বুধবার এমনই ফতোয়া জারি হল গুজরাতের আনন্দ এলাকায়৷ ফতোয়া জারি ছাড়াও ওই এলাকায় মুসলিম মালিকানাধীন দুই হোটেল এলাকার গঙ্গাজল ছিটিয়ে শুদ্ধিকরণ করা হয়৷ একই সঙ্গে বিক্ষোভকারীরা ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান তোলেন৷ তাঁদের স্পষ্ট দাবি,‘ভারতে থাকতে গেলে জয় শ্রীরাম বলতে হবেই’(ইন্ডিয়া মে র্যাহেনা হোগা, জয় শ্রী রাম ক্যাহেনা হোগা)৷
আনন্দ বিশ্বের দরবারে দুগ্ধ শিল্পের জন্য বিখ্যাত৷ একটি বড় শহরও বটে৷ আনন্দের প্রায় প্রটিতি বাড়ির কমপক্ষে একজন সদস্য অনাবাসী ভারতীয়৷ কিন্তু, গত কয়েক বছর ধরে সেখানে মেরুকরণ ও ভারতীয় সংস্কৃতিক বৈচিত্র ধ্বংসের অপচেষ্টা চলছে৷ এমনকী, নিজে না চাইতেও চাপের মুখে নতি স্বীকার করে অনেক হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষকে এই অপচেষ্টায় সামিল হতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ৷ কারও আবার পরিবারের সদস্য আমেরিকায় মুসলিম মালিকানাধীন হোটেলে চাকরি করেন৷ তাঁরাও মুসলিম মালিকানাধীন হোটেল বিরুদ্ধে মিছিলে সামিল হচ্ছেন৷ যেমন, শেখর(নাম পরিবর্তিত)৷ তাঁর ছেলে আমেরিকার এক মুসলিম মালিকানাধীন হোটেলে চাকরী করেন৷ তারপরও এ দিনের মিছিলে শেখরের বক্তব্য, হিন্দু মন্দির সংলগ্ন এলাকায় মুসলিম মালিকানাধীন হোটেল থাকা চলবে না৷ নিজের ছেলে প্রসঙ্গে উঠতেই শেখরবাবুর বক্তব্য, ‘ভারত আমাদের দেশ৷ এটা আমেরিকা আমার দেশ নয়৷ মুসলিমরা ভারতে থাকতে চাইলে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে হবে৷’
এই মিছিলেই স্লোগান দেওয়া হয়, ভারতে থাকতে চাইলে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে হবে৷।
আরও পড়ুন-ত্রিপুরায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের হুঙ্কার যাত্রা ঘিরে রণক্ষেত্র, ধর্মস্থানে ভাঙচুর
ঘটনার সূত্রপাত, আনন্দে বড় তিনটি হোটের মধ্যে দুটি হোটেলের মালিক মুসলিম৷ যাঁরা মাথায় টুপি দিয়ে হোটেলে আসেন না৷ এমনকি, তাঁরা দাড়িও রাখেন না৷ শুধু তাই নয়, তাঁদের হোটেলে কোনও প্রকার আমিষ খাদ্য-খাবার পরিবেশন করা হয় না৷ সাধারণ ডিম ভাজা কিংবা ডিমের পদও পরিবেশন করা হয় না৷ তারপরও এই দুই হোটেলের মালিকের ধর্ম পরিচয় নিয়ে পথে নামলেন একদল শিক্ষিত ডাক্তারি, ইঞিনিয়ারিং পড়ুয়ারা৷ তাঁদের সঙ্গে স্থানীয় রাজনীতিকদের মদত রয়েছে বলেও অভিযোগ৷ এ বিষয়ে এক বিক্ষোভকারী মহিলাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, হিন্দু এলাকায় কোনও প্রকার মালিকানাধীন হোটেল থাকাটাই বিপদজনক৷
আরও পড়ুন-পেগাসাস নিয়ে সংসদে আলোচনার দাবি রাহুলের
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হোটেল মালিক জানান, তিন হোটেল মালিকের মধ্যে একজন গুজরাতি প্যাটেল ও দুই গুজরাতি চেলিয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের৷ তিনি বলেন, ‘আমাদের উপর হামলার হুমকি দেওয়া হয়েছে৷ আমরা অনেক ভয়ে আছি৷ আমাদের হোটেল তৈরি, খাবার পরিবেশন থেকে যাবতীয় কাজ আইন মেনে হয়েছে৷ আমরা কোনও বিদ্বেষ মনোভাব নিয়েও কাজ করি না৷ হোটেল তৈরিতে ১০ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করেছি৷ এখন কী করব বুঝে উঠতে পারছি না৷’
উল্লেখ্য, চেলিয়া মুসলিম সাধারণত গুজরাত ও মহারাষ্ট্রের ছোট মুসলিম সমাজ৷ অন্ধ্রপ্রদেশেও বিশাল এলাকায় চেলিয়া মুসলিমদের একটা অংশ ২০০০ কাছাকাছি হোটেল-রেস্তোরা চালায়৷