ফলে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে যা আমাদের ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখে এবং যে কোনও রকমের ত্বকের সমস্যা থেকে বাঁচিয়ে রাখে। তাই নিত্যদিনের খাদ্যতালিকায় ফল রাখা অত্যন্ত উপকারী। তবে শুধু যে শাঁস কাজে আসে তা কিন্তু নয় বেশ কয়েকটি ফল রয়েছে যেগুলির খোসায় বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে যা আমাদের ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। তাই ফল খেয়ে এবার ফলের খোসা ফেলে না দিয়ে এই ভাবে সেরে ফেলুন ত্বকের পরিচর্যা। দেখবেন কেমন সুন্দর তর তাজা হয়ে উঠবে আপনার ত্বক।
কমলালেবু
কমলালেবুর শাঁস ও খোসা দুটোতেই ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়াম রয়েছে প্রচুর পরিমানে। কমলালেবুর অ্যান্টি ব্যক্টেরিয়াল ও অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল কার্যকারিতা রয়েছে যা ব্রণ সারাতে কাজে আসে। এই কারনে তৈলাক্ত ত্বকের জন্য কমলালেবু ভীষণ উপকারী। ভিটামিন সি সিবামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এর ফলে ত্বক অতিরিক্ত তৈলাক্ত হয় না। এছাড়া ন্যাচারাল ক্লেনজার হিসেবে, ত্বকের পিগমেন্টেশন কম করতে এবং সান ট্যান সারাতে, ত্বকের আর্দ্রতা জোগাতে ও ত্বক উজ্জ্বল করে।
কী ভাবে ব্যবহার করবেন দেখে নিন-
প্যাক ১
কমলা লেবুর খোসা ভাল করে শুকিয়ে মিহি করে পিষে নিন।
এই গুঁড়ো ইয়গহার্টের সঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে নিন। এই প্যাক রোদে পোড়া ত্বকে খুব ভাল কাজ করে।
প্যাক ২
কমলালেবুর খোসার গুঁড়োর সঙ্গে চন্দনের গুঁড়ো, গোলাপ জল ও লেবুর রস ভাল করে মিশিয়ে নিন। এই প্যাক স্কিন এক্সফোলিয়েট হিসেবে খুব ভাল কাজ করে। হালকা হাতে এই প্যাক ত্বকে লাগিয়ে ঘষে জমে থাকা মৃত কোষ ঝেরে ফেলুন। জলে দিয়ে ধুয়ে নিন। দেখবেন ত্বক মসৃণ হয়েছে এবং সুন্দর আভা ফুটে উঠেছে।
অ্যাভোকাডো
অ্যাভোকাডোতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে পুষ্টিকর উপাদান। ভিটামিন বি, ভিটামিন ই ও অ্যামিনো অ্যাসিড। তাই অ্যাভোকাডোকে সুপারফু়ডও বলা হয়।এবং শুধু শাঁসেই নয় অ্যাভোকাডোর খোসাতেও এই পুষ্টিকর উপাদানগুলি রয়েছে। তাই অ্যাভোকাডো খাওয়ার পাশাপাশি এর খোসা বাইরে থেকে সহজেই ত্বকে পুষ্টি জোগায়। শুষ্ক, খসখসে ত্বক তো বটেই ত্বকে চুলকানির সমস্যায় ভাল কাজ করে অ্যাভোকাডোর খোসা।
কী ভাবে ব্যবহার করবেন
ত্বক এক্সফোলিয়েট করতে ব্যবহার করতে পারেন অ্যাভোকডোর খোসা। খোসার ভিতর দিকটা ত্বকের ওপর হালকা হাতে ঘষে নিন। খোসার সঙ্গে লেগে থাকা যেটুকু শাঁস থাকবে সেটা ত্বক আর্দ্রতা জোগাবে। এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এগুলি ত্বকের বয়স বাড়তে দেয় না।
বেদানা
বেদানার খোসা ময়শ্চারাইজার, সানস্ক্রিন, ফেস স্ক্রাব যেভাবে ইচ্ছে ব্যবহার করতে পারেন বেদানার খোসা। ফলের থেকে বেশি না হলেও ফলের মতই ভীষণ কার্যকরী বেদানার খোসা। বেদানার খোসায় প্রচুর পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এর ফলে খোসার অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল ও অ্যান্টি ইনফ্লেমেটারি কার্যকারিতা রয়েছে। এটি ত্বকে কোনও সংক্রমন, ত্বকের জ্বালা ভাব কম করে এবং ব্রণ ও ফুসকুড়ির উপশমে কাজে আসে। এখানেই শেষ নয় বেদানার খোসা ত্বকে ফ্রি রেডিকেল্স কড়া নিয়ন্ত্রণে রাখে। এর ফলে এগুলি ত্বকের কোষের কোনও ক্ষতি করতে পারে না।
কীভাবে ব্যবহার করবেন
বেদানার খোসা ভাল করে রোদে শুকিয়ে নিয়ে গুঁড়ো করে নিন। এবার এই গুড়ো দিয়ে নানা ধরনের প্যাক বানিয়ে নিন। যেমন ব্রণ, ফুসকুড়ির হাত থেকে রেহাই পেতে বেদানার গুঁড়ো লেবুর রস, গোলাপ জলের সঙ্গে মিশিয়ে নিন এবং ত্বকে লাগিয়ে নিন। আবার ত্বকে বয়সের ছাপ পড়লে ইয়গহার্টের সঙ্গে মিশিয়ে ত্বক ময়শ্চারাইজ করে নিন। স্ক্রাবার হিসেবে ব্যবহার করতে চাইলে ব্রাউন সুগার, মধু ও আপনার পছন্দের এসেনশিয়াল অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে নিন।
অ্যাপেল
ত্বকের উপকারী সব রকম পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে আপেলে। বিশেষ করে এতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি রয়েছে। এর ফলে ত্বকের প্রয়োজনীয় প্রোটিন কোলাজেন তৈরি কাজে সাহায্য করে আপেল। এছাড়া রোদে পোড়া ত্বক, মুখ পরিষ্কার ও রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে আপেল।
কীভাবে ব্যবহার করবেন
মুখ পরিষ্কার ও ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে আপেল খোসা মুখে ঘষে নিন এবং জল দিয়ে ধুয়ে নিন। প্রয়োজনে ময়শ্চারাই করে নিন।