জলপাইগুড়ি: ফোনে দিনের পর দিন বাড়ছিল আসক্তি। নেশা কাটাতেই স্থানীয় রিহ্যাব সেন্টারে পাঠিয়েছিল বছর ১৫-র ময়ুখ গুহকে তাঁর পরিবার। শেষমেশ হাতে পেলেন ছেলের নিথর দেহ। জলপাইগুড়িতে এই ঘটনায় শোরগোল পড়েছে। রিহ্যাব সেন্টারের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ মৃতের পরিবারের। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে রিহ্যাব সেন্টারের কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন পাপড়ি শুকিয়ে গিয়েছে, বিজেপির ভরসা তাই কাজলের ছবি, খড়দহে মোদি-দিলীপকে কটাক্ষ অভিষেকের
পড়াশোনার বদলে সারাদিন হাতে মোবাইল। বাড়ছিল আসক্তি। তাই আসক্তি থেকে মুক্তির উপায় খুঁজছিলেন ময়নাগুড়ি ফার্ম শহিদগড় পাড়ার বাসিন্দা ময়ুখ গুহর পরিবার। শেষমেশ দেখা মেলে শহরের একটি রিহ্যাব সেন্টারের। সেখানেই গত ২৫ জুলাই ভর্তি করা হয় সেই তাঁকে। সেইমতোই চলছিল তাঁর চিকিৎসা। কিন্তু ব্যাঘাত ঘটল গত বৃহস্পতিবার। রিহ্যাব সেন্টারের তরফে জানানো হয় ময়ূখের মৃত্যুর কথা। আকাশ থেকে পড়েন মৃতের পরিবার। জানানো হয়, বৃহস্পতিবার হঠাৎই শুরু হয় ময়ূখের পেটে ব্যাথা। ভর্তি করা হয় জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। সেখানেই মারা যায় ময়ুখ। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ালে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ জানায় পরিবার। ধৃতদের তরফে ঘটনাটি স্বাভাবিক মৃত্যু বলে জানানো হলেও ময়ূখের দেহে একাধিক ক্ষতচিহ্নের দাগ স্পষ্ট। তাই ঘটনাটি খু বলেই দাবি পরিবারের। এ বিষয়ে পরিস্কার কিছুই জানানো হয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে। শুরু হয় তদন্ত। প্রথমে পলাতক থাকলেও পরে রিহ্যাব সেন্টারের ২ কর্তৃপক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন সদ্যোজাতকে নিয়ে তোলপাড় লালগড় থানা
ঘটনায় তদন্তের ভিত্তিতে সামনে আসে আরও তথ্য। জানা যায় যে রিহ্যাব সেন্টারটিতে চিকিৎসা চলছিল মৃত ওই যুবকের। আদতে সেই সেন্টারের কোনও বৈধ কাগজই নেই! সম্পূর্ণ ভুয়ো একটি সেন্টার। অভিযোগ পাওয়া মাত্রই রিহ্যাব সেন্টারে খোঁজ শুরু করে বন্ধ করে দেওয়া হয়। দু’টি সেন্টারে প্রায় ৪০জন আবাসিক ছিল সকলকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। একটি সাংবাদিক বৈঠক করে জানানো হয় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শহরের সমস্ত রিহ্যাব সেন্টারগুলিকে তাঁদের সরকারি নথি দেখাতে হবে। নাহলে বন্ধ করে দেওয়া হবে সেন্টার গুলিকে। পুলিশি তৎপরতায় সামনে আসে আরও ৩ টি ভুয়ো রিহ্যাব সেন্টাঢ়। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সেন্টারগুলিকে। রিহ্যাব সেন্টারের দায়িত্বে থাকা এক কর্মী তন্ময় রায় বলেন, করোনার কারণে কিছু কাগজ পত্রে সমস্যা ছিল। এভাবেই চলে আসছিল। পুলিশ নির্দেশ দেয় সেন্টার বন্ধ করতে হবে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সেন্টার৷ সব আবাসিককে বাড়ি পাঠানো হয়েছে।