কলকাতা: আগামিকাল বৃহস্পতিবারও দুর্যোগের আশঙ্কা উত্তরবঙ্গ জুড়ে৷ পরপর তিন-চারদিনের বৃষ্টি-ধসে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের কোনও ভাবেই সঙ্গ দিচ্ছে না আবহওয়া৷ হাওয়া অফিস বলছে, শেষ পাওয়া স্যাটেলাইট তথ্য বলছে আরও কয়েকদিন উত্তরবঙ্গের জেলা গুলিতে বৃষ্টি হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে৷ তার মধ্যে আলিপুরদুয়ার জেলায় ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা বেশি। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, কালিম্পঙেও বৃষ্টি ও বজ্রপাতের পূর্বাভাস। তাই, আবহওয়াবিদরা উত্তরবঙ্গের জন্য হলুদ সতর্কতা জারি করেছে৷
বৃষ্টিতে জল বৃদ্ধি তিস্তায়। নিজস্ব চিত্র।
উত্তরবঙ্গে দুর্যোগের আশঙ্কা থাকলেও কাল থেকেই দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়ার উন্নতির সম্ভাবনা। শুক্রবার থেকে রাতের তাপমাত্রাও কমবে। সপ্তাহান্তে শীতের আমেজ অনুভূত হবে দক্ষিণবঙ্গে।
আবহওয়া অফিসের মতে, নিম্নচাপ রয়েছে বিহার ও সংলগ্ন এলাকায়। এই নিম্নচাপ থেকে অক্ষরেখা বরাবর উত্তরপ্রদেশ পর্যন্ত ঘূর্ণাবর্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর প্রভাবে ওড়িশা-বিদর্ভ, মধ্যপ্রদেশ এবং উত্তরপ্রদেশে ভারী বৃষ্টির সর্তকতা রয়েছে। নতুন করে পশ্চিমী ঝঞ্ঝার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে উত্তর-পশ্চিম ভারতে। জম্মু-কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ, তুষারপাতের সম্ভাবনা সপ্তাহান্তে। বৃষ্টির সম্ভাবনা উত্তর-পশ্চিম ভারতের রাজ্যগুলিতেও।
বালাসন সেতুতে ফাটল। নিজস্ব চিত্র।
আরও পড়ুন-তিস্তার জলস্তর কমতে উঠে গেল লাল সতর্কতা
বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত শিলিগুড়ির বালাসন সেতু। সেতুর একটি পিলার কিছুটা বসে যাওয়ায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। জলমগ্ন গোটা এলাকা। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সেতু দিয়ে সমস্ত রকমের যান চলাচল। টানা বৃষ্টির জেরে জলপাইগুড়ির তিস্তা সংলগ্ন ১৭টি গ্রাম জলের তলায়। কয়েক হাজার পরিবার বিপাকে। কেউ উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন, অনেকে আবার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাড়ির চালে আশ্রয় নিয়ে আছেন। প্রশাসনের তরফে মাইকিং করে সতর্ক করা হচ্ছে সকলকে।
আরও পড়ুন-বুধবারও করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি রাজ্যে, শীর্ষে কলকাতা, দ্বিতীয় উত্তর ২৪ পরগনা
বুধবার সকাল থেকেই তিস্তা সংলগ্ন গ্রামের বাসিন্দারা বাঁধে উঠে আসতে শুরু করেছেন। গরু, ছাগল নদীর চর থেকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসছেন বাসিন্দারা। টাকি মারি চর, সুকান্তনগর কলোনি, সারদা পল্লি, বিবেকানন্দ পল্লি, মোয়া মারির চর বাসিন্দারা আশ্রয় নিয়েছেন উঁচু জায়গায়।
বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত পাহাড়৷ বুধবার৷ নিজস্ব চিত্র৷
এ দিকে তিস্তা নদীর জলস্ফীতিতে ভাঙল মালবাজার মহকুমার বাসুসুবার মাটির বাঁধ। তিস্তা,ধরলা,ও ডাঙ্গী নদীর মিলনস্থল চাপাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় অবস্থিত বাসুসুবা বাঁধ। গত কয়েকদিনের পাহাড়ে এবং সমতলে প্রবল বৃষ্টির কারণে মঙ্গলবার রাতে তিনটি নদীর জলস্তর প্রবলভাবে বেড়ে যায়। ডাঙ্গী নদীর জল জলস্ফীতি হয়ে উত্তর বাসুসুবা এলাকায় বাঁধ ভেঙে যায়। নদীর জল উত্তর বাসুসুবা হয়ে ময়নাগুড়ি ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় ঢুকে যায়।
আরও পড়ুন-সিকিম ঘুরতে গিয়ে মৃত্যু শিক্ষকের, দেহ ফেরাতে বিপাকে পরিবার
মেখলিগঞ্জ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় তিস্তা নদীর জল প্লাবিত হয়ে বসতি এলাকায় ঢুকে পড়েছে। ফলে আতঙ্কিত এলাকার মানুষ। মেখলিগঞ্জ-হলদিবাড়ি যোগাযোগের জন্য তিস্তা নদীর ওপর থাকা জয়ী সেতু সংলগ্ন কয়েকটি এলাকা জলমগ্ন হয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের দুর্ভোগের সীমা ছাড়িয়েছে। বন্যা পরিস্থিতিতে এলাকার মানুষ আতঙ্কিত। বন্যা কবলিত এলাকার মানুষদের সুরক্ষিত এলাকায় সরিয়ে নিতে চেষ্টা চালাচ্ছে প্রশাসন।