বালি : আইনজীবী জগৎচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ইংরেজ আমলের দুঁদে আইনজীবী ছিলেন। নিষ্ঠাবান ব্রাহ্মণ। বালির শান্তিরাম রোডের তিন মহলা বনেদি বাড়ির দুর্গাপুজোর দায়িত্বটা তিনিই সামলাতেন। উমা সেখানে মহিষমর্দিনী নন, ঘরের মেয়ে।কালের নিয়মে পরিবর্তন এল বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারে। বোধন সেরে উমাকে ঘরে তোলা হয়েছে। সপ্তমীর সকালে নবপত্রিকা স্নানের জোর তোড়জোড় চলছে। বাড়ির রীতি, গঙ্গায় নয়, ঠাকুরদালানেই স্নান হবে নবপত্রিকার। চৌহদ্দির বাইরে যাওয়ার নিয়ম ছিল না বাড়ির মেয়েদের। গঙ্গাজলের ঘটি ধরতেই বাধ সাধলেন জগৎচন্দ্র। শুধু গঙ্গা জল নয়, নবপত্রিকা স্নান হবে বিশ্বের নানা দেশের জলে। সেই থেকে বিভিন্ন দেশের জলে স্নান হয় নবপত্রিকার।
আরও পড়ুন : কাগজের বাক্সে আঁকা ছবি, তাক লাগাবে পুজোয়
আজও বালির বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের পুজোর এটাই সেরা আকর্ষণ। নবপত্রিকা স্নান দেখতে ঠাকুরদালানে ভিড় জমান বহু মানুষ।বাড়ির পুজোর দায়িত্ব এখন অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় ও রঞ্জিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের। অশোকবাবু বলেছেন, ১৫৫ বছরের পুরনো পুজো। কর্মসূত্রে বা পড়াশোনার জন্য পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন। তবে, পুজোয় সকলকে বাড়ি ফিরতেই হয়। যে যেখানেই থাকুক না কেন, দায়িত্ব নিয়ে সেখানকার নদীর জল নিয়ে আসেন। অশোকবাবুর কথায়, তিনিও অনেকবার বিদেশে যান। তাই জল পেতে অসুবিধা হয় না।
বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়িতে পুজো হয় বৈষ্ণব মতে। পশু বলির কোনও ব্যাপার নেই। ভোগের থালাতেও নিরামিষের আয়োজন। এছাড়াও বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির পুজোর কিছু নিয়ম রয়েছে। আগে একচালার এই প্রতিমার সাজ ছিল মাটির। এখন তা সোনার সাজ। আরও এক বিষয়, বাড়ি থেকে কাঁধে চেপে বিসর্জনে যান দুর্গা। বাড়ির মেয়েকে কাঁধে চাপিয়েই গঙ্গায় নিয়ে যাওয়ার রীতি চালু করেছিলেন জগৎচন্দ্র।