অমৃতসর: দ্বন্দ্ব সরিয়ে নবজ্যেত সিং সিধুকে কথা বলার আহ্বান জানালেন পঞ্জাবের নয়া মুখ্যমন্ত্রী চরনজিৎ সিং চান্নি। সদ্য গঠিত মন্ত্রিসভায় মন্ত্রীদের নিয়ে সম্প্রতি আপত্তি জানিয়েছিলেন পাঞ্জাবের প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি। গতকাল মঙ্গলবার সেই ইস্যুতেই রাজ্যের প্রদেশ সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন সিধু।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন “আমার অহংকার এর সমস্যা নেই। আমি চাই যে বিষয়গুলি নিয়ে কোনও আপত্তি দেখিয়েছেন সেগুলো নিয়ে আলোচনা করুক। ইচ্ছাকৃতভাবে কিছু করা হয়নি। যদি কারো কোন নিয়োগ নিয়ে আপত্তি থাকে তাহলে বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই চিন্তাভাবনা করা যাবে। পাশাপাশি তিনি আরো বলেন আমি অনমনীয় নই। আমার অহংকার এর ঝামেলা নেই। ” গোটা বিষয়টিতে সিধুর সঙ্গে রফা সূত্রে পৌঁছোনোর ইঙ্গিত দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: সিধুর ইস্তফা গ্রাহ্য করল না হাইকমান্ড, ‘দ্বন্দ্ব’ মেটাবে পঞ্জাব কংগ্রেস
দলের সঙ্গে কোনও পরামর্শ না করেই পদত্যাগ করেছেন তিনি। নয়া সরকারের কয়েকটি নিয়োগ নিয়ে তিনি বিরক্ত ছিলেন। বেশকিছু মামলায় অভিযুক্ত দুর্নীতিগ্রস্ত প্রার্থীদের পদে নিয়োগ নেই ক্ষুব্ধ ছিলেন সিধু। সেই বিষয়ে সম্প্রতি একটি ভিডিও প্রকাশ করেছিলেন পঞ্জাবের কংগ্রেস নেতা। নৈতিকতার সঙ্গে তিনি কখনোই আপোস করবেন না বলেও সেই ভিডিওতে জানিয়েছিলেন তিনি। ভিডিওতে তিনি স্পষ্ট বলেন, দুর্নীতিগ্রস্ত মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের সরকারি স্থান দেওয়া যাবে না। আমি এই ধরনের নিয়োগের সম্পূর্ণ বিরোধিতা করি। রানা গুরু জিৎ সিং এর প্রসঙ্গ টেনে রীতিমতো অসন্তোষ প্রকাশ করেন। উল্লেখ্য ২০১৮ সালে বালি উত্তোলন কেলেঙ্কারির সঙ্গে নাম জড়িয়েছিল রানা গুরু জিৎ সিং এর। ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং এর মন্ত্রিসভা থেকে তিনি পদত্যাগ করেন। পরবর্তীকালে তার বিরুদ্ধে একটি তদন্ত প্যানেলে গঠিত হয়।
এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী এসএস রন্ধাওয়াকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া নিয়েও ক্ষুব্ধ সিধু।
মন্ত্রিসভা ছাড়াও পুলিশ প্রশাসনে নিয়োগ নিয়ে আপত্তি রয়েছে সিধুর। সিনিয়র আইপিএস অফিসার ইকবাল প্রীত সিংহ সাহোতাকে নিয়ে আপত্তি রয়েছে তাঁর। ২০১৫ সালে গুরুগ্রন্থ সাহেব এর অবমাননার ঘটনায় তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আপত্তি জানিয়েছিলেন সিধু। এছাড়াও এপিএস দেওলকে এডভোকেট জেনারেল হিসেবে নিযুক্ত করাকে এবং দুঃখজনক বিষয় বলে দাবি করেছেন সিধু। ২০১৫ সালে ধর্ম অবমাননা মামলায় এবং বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালনায় অভিযুক্ত প্রাক্তন পুলিশ প্রধানের আইনজীবী ছিলেন।
আরও পড়ুন: গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সহ একদল কংগ্রেস নেতা তৃণমূলে যোগ দিলেন
ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং এর পর মঙ্গলবার প্রদেশ কংগ্রেসের প্রত্যেক ইস্তফা দেন সিধু। পঞ্জাবে এই টালমাটাল রাজনৈতিক পরিস্থিতি আগামী নির্বাচনে বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এমন পরিস্থিতিতে ঘর গোছানোর পাশাপাশি পাঞ্জাবে হাত শক্ত করতে সিধুর জনসমর্থনকে কাজে লাগাতে তৎপর নয়া মুখ্যমন্ত্রী চরনজিৎ সিং চান্নি। তাই অভিমানী সিধুর মান ভাঙাতে চেষ্টার ত্রুটি রাখছেন না মুখ্যমন্ত্রী। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।