কলকাতা: ২০১৪ সালের ১৩ ডিসেম্বরের আগে যারা আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে সংখ্যালঘুরা ভারতবর্ষে এসেছেন তাঁদের অনুপ্রবেশকে বেআইনি হিসাবে ধরা যাবে না। কিন্তু তা স্বত্তেও বহু মানুষকে জেলে আটকে রাখা হয়েছে। এই বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের কাছে রিপোর্ট অফ কলকাতা হাইকোর্টের।
২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় সরকার বিজ্ঞপ্তি জারি করে। নাগরিক আইনে কিছু সংশোধনী আনা হয়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়। নাগরিক আইন অনুযায়ী, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪ আগে আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে যে সমস্ত হিন্দু , শিখ, বুদ্ধিস্ট, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ ভারতবর্ষে প্রবেশ করেছেন তাঁদের বেআইনি অনুপ্রবেশকারী হিসাবে গণ্য করা হবে না।
সুধারানি দাস চলতি বছরের ৯ অগস্ট বিএসএফ দ্বারা গ্রেফতার হন বনগাঁ অঞ্চল থেকে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে তিনি বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করেছেন। জামিন পেতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন সুধারানী। মামলার সওয়ালে তাঁর আইনজীবী মৃত্যুঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় আদালতে বলেন, ‘১৯৮৯ সালে সুধারানি দেবী সঙ্গে বিবাহ হয় বনগাঁর বাসিন্দা বিষ্ণুপদ দাসের৷ ১৯৯১ সালে তাঁদের এক পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। তখন থেকেই সুধারানি বনগাঁর শ্বশুরবাড়িতেই বসবাস করেন৷ ভারতবর্ষের ভোটার ও আধার কার্ডও তাঁর রয়েছে। এছাড়াও, কেন্দ্রীয় সরকারের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ২০১৪ সালের ৩১শে ডিসেম্বরের আগেই তিনি ভারতবর্ষে এসেছেন। তাই, তাঁকে বেআইনি অনুপ্রবেশকারী হিসাবে চিহ্নিত করা যায় না।
আরও পড়ুন-Sudirman Cup: সিন্ধু-সাইনা-চিরাগদের ছাড়াই খেলতে নামছে ভারত
আদালতের নির্দেশ, অবিলম্বে সুধারানি দাসকে জামিনে মুক্তি দিতে হবে।এই মামলার বিচারের পাশাপাশি বিচারপতি কৌশিক চন্দের মন্তব্য করে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলকে নির্দেশ দেন। সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে সরকারের ওই বিজ্ঞপ্তি না মেনে বহু ব্যক্তিকে জেলে আটক করে রাখা হয়েছে বেআইনি অনুপ্রবেশকারী তকমা দিয়ে। এ বিষয়ে বহু মামলাও হাই করো্টে বিচারাধীন৷ ২০১৯ সালের নাগরিক সংশোধনী আইনের বিজ্ঞপ্তি কেন মানা হচ্ছে না এবং সে ক্ষেত্রে সরকারের অবস্থান কি তা রেজিস্টার জেনারেলের মাধ্যমে অ্যাডভোকেট জেনারেলকে জানাতে হবে।
আইনজীবীদের মতে, বিএসএফ সঠিকভাবে সরকারি আইন মানছে না। ফলে বিএসএফ যখন গ্রেফতার করে সীমান্তবর্তী থানায় অভিযুক্তদের চালান করে, তখন তাদের নিয়ম মেনে বাধ্য হয়ে আটকে রাখতে হচ্ছে অভিযুক্তদের। এ ক্ষেত্রে সরকারি আইনকে ভালোভাবে জেনে বিএসএফের আরও সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন।