জঙ্গলমহলের পুরুলিয়ার বিজেপি ও কংগ্রেসে শিবিরে বড়সড় ভাঙন। পুরুলিয়া জেলাপরিষদের বিরোধী দলনেতা বিজেপির অজিত বাউড়ি-সহ গেরুয়া শিবিরের বেশ কয়েকজন এবং কংগ্রেস শিবিরের মোট ৪ সদস্য তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করলেন। এঁদের মধ্যে ছিলেন জেলাপরিষদের সদস্যরাও। শনিবার পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে জেলা পরিষদের এই ৪ সদস্য ছাড়াও পুরুলিয়া বিধানসভার কংগ্রেসের প্রার্থী তথা প্রদেশ কংগ্রেসের সম্পাদক পার্থপ্রতিম বন্দ্যোপাধ্যায়, পুরুলিয়া শহর কংগ্রেস সভাপতি বিশ্বরূপ পট্টনায়ক, পুরুলিয়া পুরসভার দু’নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেসের কো-অর্ডিনেটর তথা প্রাক্তন কাউন্সিলর ববিতা কর্মকার, ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর কথা প্রাক্তন কাউন্সিলর আরতি পান্ডে এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেসের প্রাক্তন কাউন্সিলর জয়দেব দত্ত তৃণমূলে যোগ দেন। এ দিন তাঁদের গলায় উত্তরীয় পরিয়ে দলে বরণ করে নেন রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক।
আরও পড়ুনঃ রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব ফের আন্তেনিও গুতেরেসই
পুরুলিয়া জেলাপরিষদের সভাধিপতি তথা দলের কো-অর্ডিনেটর সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই যোগদান হয়। এই যোগদান-পর্বে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন বিভাগের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্তমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু, পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা পুরুলিয়া জেলা পরিষদের শিক্ষা-সংস্কৃতি-তথ্য-ক্রীড়া সমিতির কর্মাধ্যক্ষ গুরুপদ টুডু ও দুই কো-অর্ডিনেটর সুষেনচন্দ্র মাঝি ও মিনু বাউরি।
আরও পড়ুনঃ ভাঙন অব্যাহত পূর্বস্থলীতে, বিপর্যস্ত জনজীবন
পুরুলিয়া জেলা পরিষদের মোট ৩৮ টি আসন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী তৃণমূল কংগ্রেস জেতে ২৬ টি আসনে। বিজেপি পায় ৯ টি ও কংগ্রেস ৩ টি আসন দখল করে। সেই পঞ্চায়েত ভোট প্রক্রিয়া মিটে গেলে রঘুনাথপুর দু নম্বর ব্লক এলাকার বিজেপির জেলাপরিষদ সদস্য লিপিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বাঘমুন্ডি ব্লকের আরেক জেলাপরিষদ সদস্য সুবোধকুমার তৃণমূলে এসেছিলেন। ফলে শাসক দলের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ২৮। এই যোগদানের ফলে পুরুলিয়া জেলা পরিষদের তৃণমূলের আসন সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩২। ফলে বিজেপির আসন সংখ্যা কমে হল ৫ আর কংগ্রেসের ১।
আরও পড়ুনঃ ৮ বছর পর জামিন দেবযানীর
যোগদান পর্ব শেষে মন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে শামিল হতেই এই যোগদান। অন্যদিকে, শাসক দলে যোগ দিয়ে বিরোধী দলনেতা অজিত বাউরী বলেন, প্রয়াত নেতা অটলবিহারী বাজপেয়ীর জমানায় বিজেপি যা ছিল এখন আর তা নেই। বিজেপি আদর্শচ্যুত হওয়াতেই আজ এই অবস্থা। তাই তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নে শরিক হতেই এই যোগদান। বিজেপি ও কংগ্রেস মিলিয়ে বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী শাসক দলে যোগদান করায় এই জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের আরও শক্তি বৃদ্ধি হল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।