কলকাতা: হাজিরা এড়ালেন না। বরং এক দিন আগেই হাজির হলেন কলকাতা টিভির সম্পাদক কৌস্তুভ রায়। এনফোর্স ডিপার্টমেন্ট কিছুদিন আগে তাঁকে নোটিস পাঠায়। বুধবার সকালে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির হন কৌস্তুভ।
কেন হঠাৎ করে তলব? কৌস্তুভ রায়ের বক্তব্য, ‘কোন মামলায় ডেকেছে তা জানি না। কেন ডেকেছে তা বুঝতে পারছি। গোটা দেশে যারা যারা নরেন্দ্র মোদি আর বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে যে সব মিডিয়া প্রশ্ন করছে তাদেরকেই ডেকে পাঠানো হচ্ছে। কোথাও নিউজ লন্ড্রি, কোথাও দৈনিক ভাস্কর, কখনও এনডিটিভি। তো সেই তালিকায় কলকাতা টিভিরও নামও সংযোজিত হল।’ এরপরেও কলকাতা টিভির সম্পাদকের স্পষ্ট জবাব, তিনি বা তাঁর প্রতিষ্ঠান প্রশ্ন বন্ধ করবেন না। অন্যায়, না পাওয়া, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রশ্ন জারি থাকবে।
এর আগে ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের ঠিক আগে ডেকে পাঠানো হয়েছিল কৌস্তুভ রায়কে। এরপর তিন বছর কোনও সাড়াশব্দ নেই। কলকাতা টিভি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সম্পাদকীয় প্রতিবেদন ‘চতুর্থ স্তম্ভ’। যেখানে সরাসরিই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের একধিক ভুল নীতির বিরুদ্ধে চোখে চোখ রেখে প্রশ্ন করে গিয়েছে কলকাতা টিভি। স্পেডকে স্পেড বলতে, কালোকে কালো বলতে কখনওই পিছপা হয়নি। সংবিধানকে মর্যাদা দিয়ে প্রতিদিনই এভাবে ‘চতুর্থ স্তম্ভ’ নিজের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছে। হয়তবা সে কারণেই শাসকের কোপে পড়তে হয়েছে কলকাতা টিভিকে।
ইডি দফতরে কৌস্তুভ রায় ৷ বুধবার ৷
এ রাজ্যে বিধানসভা ভোটে বিজেপির ভরাডুবি হয়েছে। তারপরেই শুরু হয়েছে ভাঙন। একের পর বিজেপি নেতারা দল ছেড়েছেন। দিন কয়েক আগে পরপর দু’বারের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। একই ভাবে ভোটের পরই একাধিক তৃণমূলের একাধিক নেতাকে কখনও সিবিআই, কখনও ইডি ডেকে পাঠিয়েছে। এ রাজ্যের মামলা হলেও তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। সবমিলিয়ে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত, এজেন্সি ব্যবহার করে ঘরের ভাঙন আটকাতে চাইছে বিজেপি। এর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই অভিযোগ বারবার করেছেন।
কলকাতা টিভির সম্পাদক কৌস্তুভ রায়ের বক্তব্য, ‘সরকারে যে থাকবে সংবাদ মাধ্যম তাকে প্রশ্ন করবেই। সংবাদ মাধ্যমের কাজই সেটা। এরপরেও প্রয়োজনে সরকারি সংস্থা ডাকলে তিনি হাজির হবেন। সব রকমের সহায়তা করবেন।’