নয়াদিল্লি: বেসরকারি সংস্থার হাতে বিমানবন্দর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হলে তারা পরিকাঠামো ঢেলে সাজাবে। ফলে যাত্রীরা অত্যাধুনিক সুযোগসুবিধা পাবেন। এই যুক্তিতেই দেশের ৬টি বিমানবন্দর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত গৌতম আদানির মালিকানাধীন আদানি গোষ্ঠীর হাতে তুলে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। আরও ২৫টি বিমানবন্দর বেসরকারিকরণের ভাবনা রয়েছে কেন্দ্রের।
প্রথম ধাপে আহমেদাবাদ, লখনউ ও মেঙ্গালুরু বিমানবন্দর ৫০ বছরের জন্য লিজ দেওয়া হয় আদানি গোষ্ঠীকে। পরে গুয়াহাটি, জয়পুর ও তিরুঅনন্তপুরম বিমানবন্দরও তাদের হাতে তুলে দেয় কেন্দ্র। শেষ তিনটি বিমানবন্দর লিজ দেওয়ার সময় মোদি সরকার দাবি করেছিল, ওই তিনটি বিমানবন্দরের জন্য সরকার প্রথমেই বেসরকারি সংস্থার থেকে ১০৭০ কোটি টাকা পাবে। সেই অর্থ অন্য শহরে ছোট বিমানবন্দর তৈরিতে ব্যয় হবে।
আরও পড়ুন: চতুর্থ স্তম্ভ: আদানির জন্য কৃষি আইন
বিরোধীরা একসময় বিরোধিতা করলেও পরে সেসব চাপা পড়ে যায় মোদি সরকারের ‘উন্নয়ন’-এর চাপে। এই অবধি সব ঠিকই ছিল। কিন্তু এর পর আসল তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই দেশজুড়ে শোরগোল পরে গিয়েছে। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেসরকারিকরণের আগে ওই ৬টি বিমানবন্দরের পরিকাঠামোকে ঢেলে সাজিয়েছে কেন্দ্র। এর জন্য ২০১৭-২০১৮ থেকে ব্যয় করা হয়েছে ১৪ হাজার ৫০০ কোটি। বেসরকারিকরণের আগে খরচ করা হয়েছে জনগণের করের কোটি কোটি টাকা।
মোদ্দা কথা হল, পরিকাঠামো ঢেলে সাজানোর পরই বিমানবন্দরগুলি মোদি ঘনিষ্ঠ শিল্পপতির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে যাত্রীদের সুযোগসুবিধা বৃদ্ধির অজুহাতে। বলাই বাহুল্য, পুরো ঘটনাপ্রবাহেই প্রমাণিত ঠিক কী কারণে একজন নির্দিষ্ট শিল্পপতির হাতেই বিমানবন্দরগুলির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাও আবার সরকারের তরফে বিমানবন্দরের পরিকাঠামো ঢেলে সাজিয়ে দেওয়ার পর। হাতে ৬টি বিমানবন্দর। বলাই যায় যে অসামরিক বিমান পরিবহন ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ধাপে ধাপে এগিয়ে চলেছে আদানি গোষ্ঠী, সৌজন্যে কে? ঠিক ধরেছেন, নরেন্দ্র মোদি।
আরও পড়ুন: সাত দিনে ৪৭০০ কোটি খোয়ালেন গৌতম আদানি