কলকাতা: তিনি এলেন ৷ দেখলেন ৷ কথা বললেন ৷ ওঁদের হৃদয়ে নিজের আসন আরও পাকা করে নিলেন ৷ তিনি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ কিন্তু, তিনি আজ ভবানীপুর গুরুদ্বারে গিয়েছিলেন ভোটের প্রচারকে সামনে রেখে ৷ এক জন প্রার্থী হিসেবে ৷
কিন্তু, তিনি যে ঘরের মেয়ে ৷ সেটা বুঝিয়ে দিতে বিন্দুমাত্র সময় নেননি গুরুদ্বারে উপস্থিত শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজন ৷ দিদিকে কাছে পেয়ে ছবি তোলার আবদান করেছিলেন মহিলারা ৷ অতি উৎসাহের সঙ্গে সেই আগ্রহ মেনে নিলেন ৷ আর পাঁচ জনের সঙ্গে যখন ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালেন, মিশে গেলেন সক্কলের সঙ্গে, যেন আরও একবার প্রমান হল… তিনি কেন মানুষের এত কাছের, তিনি কেন সকলের দিদি ৷
ঘড়িতে তখন বিকেল চারটে ৷ ভবানীপুরের গুরুদ্বারে উপস্থিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ দিদির আসার খবর, আগের থেকেই ছিল ৷ ঘরের মেয়েটাকে দেখার জন্য সাগ্রহে অপেক্ষা করেছেন ৷ কোভিড প্রোটোকলের জন্য বেশি জমায়েত করা সম্ভব নয় ৷
দিদি এলেন ৷ গুরুদ্বার তখন দিদি… দিদি ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে গেল ৷
আরও পড়ুন: কলকাতা টিভি ডিজিটালের খবরের জের, পুজোর আগেই ভ্যাকসিন পেলেন অসুরেরা
গাড়ি থেকে নেমে ভিতরে ঢুকলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ উদ্দেশ্য অবশ্যই ভোট প্রার্থনা ৷ শিখ ভোটকে নিজের পক্ষে নিশ্চিত করা ৷ মিনিট ১৫-২০ ছিলেন ৷ শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজনের অভাব-অভিযোগ শুনলেন ৷ আগামী দিনে তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দিলেন ৷ ভারতের মত ধর্ম নিরপেক্ষ দেশও যে শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজনের, সে কথা ঠারে ঠোরে বুঝিয়ে দিলেন ৷ বললেন, কৃষক আন্দোলনের প্রতি তাঁর সমর্থনের কথাও ৷ যে ভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষক বিরোধী নীতির প্রতিবাদে রাকেশ টিকায়েতদের নেতৃত্বে দিল্লির রাজপথে আন্দোলন-প্রতিবাদ চলছে—তার প্রতি নিজের সমর্থনের কথা ফের একবার দৃপ্ত কন্ঠে ঘোষণা করলেন ৷
মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জাতীয় সঙ্গীত শুরু করেছিলেন পঞ্জাবের নাম দিয়ে। শেষ করেছিলেন বাংলায়।’’ প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই আবৃত্তিও করেন জাতীয় সঙ্গীতের ওই ছত্রটি—‘‘পঞ্জাব সিন্ধু গুজরাট মরাঠা দ্রাবিড় উৎকল বঙ্গ।’’ আবৃতি শেষ করেই তৃণমূল নেত্রীর মন্তব্য, ‘‘স্বাধীনতার লড়াই সম্পূর্ণই হত না, যদি পঞ্জাব না থাকত। স্বাধীনতার যুদ্ধে বিপ্লবীদের মধ্যে বাঙালি আর পঞ্জাবিদের সংখ্যাই বেশি।’’
Today, @MamataOfficial visited Gurdwara Sant Kutiya.
Glimpses from the day ? pic.twitter.com/rF2jCVLNJj
— All India Trinamool Congress (@AITCofficial) September 15, 2021
কথায় কথায় বলেন ফেললেন, বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারে শিখ গ্রন্থ সাহেবের ভুমিকার কথা ৷ জানালেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা রুটিন করে আসেন এই ভবানীপুর গুরুদ্বারে ৷ শিখ ধর্মগ্রন্থ ‘গ্রন্থ সাহেব’-এর প্রতি রুজিরার আগ্রহের কথা ৷ কথা গুলো যখন বলে চলেছেন, তখন বোঝার উপায় নেই, তিনি মুখ্যমন্ত্রী ৷ তিনি ভবানীপুরের তৃণমূল প্রার্থী ৷ আসলে তখন তিনি সকলের দিদি ৷
আরও পড়ুন: মমতার দাবিকে সিলমোহর, এনসিআরবি’র রিপোর্টে দেশের মধ্যে নারী সুরক্ষায় এগিয়ে কলকাতা
এর পরই গুরুদ্বারে উপস্থিত মহিলারা আবদার করলেন, ছবি তোলার ৷ রাজি হলেন মমতা ৷ ছবি উঠল ৷
সকলে এক সঙ্গে বলে উঠলেন, জো বোলে সো নিহাল/ সত শ্রী অকাল…