শ্রীরামপুর: রোগীর প্রতি গাফিলতি তথ্য লুকোনো ও হেনস্থার অভিযোগ শ্রীরামপুর মহকুমা হাসপাতালের বিরুদ্ধে ‘রাইট টু ইনফরমেশন অ্যাক্ট’ তথা আরটিআই কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল মৃত এক রোগীর পরিবার। কমিশনের নির্দেশেই ওই পরিবারের থেকে আড়াল করা সমস্ত তথ্য তাদের হাতে তুলে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
পরিবারের অভিযোগ, গত ১৯ মে শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে শ্রীরামপুরে একটি নার্সিংহোমে যাওয়া হয় শ্রীরামপুরের বাসিন্দা অহীন্দ্র বিশ্বাসের স্ত্রীকে। তবে করো না পরীক্ষা না হওয়ায় তাঁকে ভর্তি নিতে চাননি তাঁরা। এরপর করোনা পরীক্ষা করা হলে তার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও চিকিৎসা না মেলায় শ্রীরামপুর মহাকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় অহীন্দ্র বাবু স্ত্রীকে।
তবে কি কারণে তাঁর শারীরিক অসুস্থতা স্পষ্ট করে তখনও জানায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনার দুদিন পর অর্থাৎ ২২ মে করোনায় মৃত্যু হয় অহীন্দ্র বাবু স্ত্রীয়ের। রাতে ফোন করে তা জানানো হয় মৃতের পরিবারকে।
আরও পড়ুন: করোনায় মৃতের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রির অভিযোগ, ফের ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিল হাইকোর্ট
তারপর দিন বেশ কিছু কাগজপত্র সই করিয়ে ধরিয়ে দেওয়া হয় মৃতের পরিবারের হাতে। তুলে দেওয়া হয় মৃতের করোনা পজিটিভ রিপোর্টও। পরিবারের অভিযোগ মৃতদেহ সৎকারের জন্য বারবার আর্জি জানানো সত্ত্বেও দেহ দিতে রাজি হয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সরকারি নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও তা মানেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ মৃতের পরিবারের।
স্থানীয় পুরসভার দ্বারস্থ হয়েও মেলেনি ফল। ডেথ সার্টিফিকেট এর জন্য হন্য হয়ে ঘুরে বেড়াতে হয় মৃতের পরিবারকে।
সেই পরিস্থিতিতে একটি প্রশ্নে সন্দেহ জাগে মৃতের পরিবারের। ওই মহিলা যদি করোনায় আক্রান্ত হয়েই মারা যান তাহলে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রিপোর্টে ‘নেগেটিভ’ বলা হল কেন? আবার শ্রীরামপুর মহকুমা হাসপাতালের রিপোর্ট পজেটিভ করে কেন দেখানো হয়েছে? এই রহস্য ভেদ করতেই আরটিআই কমিশনের দ্বারস্থ হয় মৃতের পরিবার পরিজন।
আরও পড়ুন: ১২ দিন পর কলকাতার দৈনিক করোনা সংক্রমণ একশোর নীচে
করোনায় মৃত্যু হলে সরকারি নির্দেশ রয়েছে মৃতের পরিজনকে শ্মশানে উপস্থিত থাকার। কিন্তু গোটা প্রক্রিয়াটি রোগী পরিবারের অগোচরে হওয়ায় হাসপাতালের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছে ওই পরিবার।
অভিযোগের ভিত্তিতে শ্রীরামপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপারকে তলব করে কমিশন। সমস্ত তথ্য মৃতের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় কমিশনের তরফে। দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে সমস্ত কাগজ মৃত রোগীর পরিবারকে হস্তান্তরিত করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।