কলকাতা: সমশেরগঞ্জের পর ভবানীপুরে প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল প্রদেশ কংগ্রেসে৷ মঙ্গলবার প্রদেশ সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী স্পষ্ট জানালেন, ভবানীপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিচ্ছে না কংগ্রেস। যদিও গত সোমবার ভবানীপুরে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে সোনিয়া-রাহুলদের উপর ছেড়েছিল প্রদেশ৷ সূত্রের খবর, দলের সিংহভাগ নেতা ভবানীপুরে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে সম্মত থাকলেও জনাকয়েক শীর্ষ স্থানীয় নেতা আপত্তি তোলেন৷ আর তাই পুরো বিষয়টা দিল্লির সিদ্ধান্তের উপরেই ছেড়ে দিয়েও প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্তে সীলমোহর প্রদেশের।
৩০ সেপ্টেম্বর ভবানীপুর উপ-নির্বাচনের পাশাপাশি সমশেরগঞ্জ এবং জঙ্গিপুরে নির্বাচন রয়েছে৷ সমশেরগঞ্জে প্রার্থী দিচ্ছে না কংগ্রেস৷ ভবানীপুরেও প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রদেশ৷ অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, ‘বামেদের সঙ্গে জোট বজায় রেখে চলতে চায় তারা৷ বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে আলোচনাও হচ্ছে৷ সমশেরগঞ্জে কংগ্রেস প্রার্থী দেবে না বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছে৷ একই সঙ্গে ভবানীপুরে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী না দেওয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।’ তবে, ভবানীপুরে বামেরা প্রার্থী দেবে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়।
আরও পড়ুন-ভবানীপুর উপনির্বাচনের প্রার্থীপদ নিয়ে দলের সিদ্ধান্ত জানালেন দিলীপ
ভবানীপুর উপনির্বাচনের দেয়াল লিখন দেখে দাঁড়িয়ে পড়লেন মমতা।
গত বিধানসভায় রাজ্যে বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোট হয়েছিল৷ সেই মতো বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রার্থী দিয়েছিল তারা৷ কিন্তু, তারপরই সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বিজেপি বিরোধী জোট গঠনের তোড়জোড় শুরু হয় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যাকে সামনে রেখে৷ মমতার ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের একাধিক দলের নেতা-নেত্রীরা বৈঠকও করেন৷ আবার, কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধির ডাকে সাড়া দিয়ে বিরোধীদের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং মমতা৷ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, মমতার বিরুদ্ধে ভবানীপুর উপনির্বাচনে প্রদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্তটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জাতীয় স্তরে আরও একধাপ এগিয়ে দিলো।
আরও পড়ুন-শুধু ভবানীপুর নয়, পড়ে থাকা সব বিধানসভার নির্বাচন চায় বামেরা
ভবানীপুর উপনির্বাচনে দেয়াল লিখছেন তৃণমূল নেতা মদন মিত্র।
যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে গোটা দেশের বিরোধী দলের নেতৃত্ব বিজেপি বিরোধী জোট গঠনকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যাচ্ছেন, তখন খোদ মমতার বিরুদ্ধে প্রার্থী দেওয়া উপযুক্ত সিদ্ধান্ত হবে না বলেই মনে করছে কংগ্রেস। সুতরাং, জাতীয় স্তরে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুরুত্ব যে আরো বাড়তে শুরু করেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ঠিক তেমনি, সন্দেহ নেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া এই মুহূর্তে বিজেপি বিরোধী মুখ আর নেই৷ তার অন্যতম প্রমাণ একুশের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন। তাই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।