বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ত্বকেও পরিবর্তন ঘটে। ষোড়শি ছিলেন যখন, তখন ব্রণ বা অ্যাকনের সমস্যায় জীবন একেবারে জেরবার। কিন্তু যেই কুড়ি ছুঁই ছুঁই তখন কোথায় কী? তখন ত্বক একেবারে স্বচ্ছ । আবার ৩০-র ঘরে পা রাখলেই দেখা দেয় ত্বকের হাজারো সমস্যা। তবে এই বয়সে শরীর ও ত্বকের বিভিন্ন সমস্যাগুলি অনেকটাই বুঝতে শিখি আমরা। তবে শুধু বুঝলেই হবে না, নিতে হবে সঠিক যত্ন । প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ কাজ করা হলে সহজেই সমস্যাগুলির সমাধান সম্ভব হবে।
* অল্প বয়সে ত্বকের পরিচর্যা নিয়ে বেপরোয়া থাকেন অনেকেই। নিয়ম মেনে মুখ পরিষ্কার, টোনিং ও ময়শ্চারাইজার করেন না অনেকেই। তবে অল্প বয়সে এই কাজগুলো না করে থাকলেও ত্বক ভাল রাখতে তিরিশের কোঠায় এগুলি খুবই প্রয়োজনীয়।
* নিউট্রিশনিষ্টের সঙ্গে পরামর্শ করে একটা ডায়েট চার্ট বানিয়ে নিন। এবং প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি খাওয়ার প্রয়োজন। টাটকা শাকসবজি দিয়ে তৈরি স্যালাড কিংবা তাজা ফলের ফ্রুট স্যালাড শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বার করতে সাহায্য করবে।
* ভিটামিন সি ও ভিটামিন ই-র সাপ্লিমেন্ট খেতে পারেন। ত্বকের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে এগুলি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
* কসমেটিক্স ব্যবহারের ক্ষেত্রে উপকরণগুলি বেছে নিন। কেনার সময় এমন সামগ্রী বাছুন যেগুলো আপনার ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে সাহায্যে করে।
* ত্বক ও চুলের পরিচর্যা কিংবা মেকআপ ও স্টাইলিংয়ের সময় অত্যধিক সামগ্রী ব্যবহার করবেন না।
* প্রচুর পরিমাণে জল খান। খুব ভাল হয় যদি প্রত্যেকদিন নিয়ম মেনে ৮ থেকে ১০ গ্লাস জল খেতে পারেন। এটা শুধু আপনার শরীরকেই ভাল রাখবে না, বরং ত্বকের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করবে। শরীরকে বর্জ্য পদার্থ মুক্ত করে তুলবে।
* মাদক সেবন ও ধূমপান যতটা সম্ভব কমিয়ে দিন। বন্ধ করতে পারলে আরও ভাল। দিনে কত পরিমাণ চিনি ও ক্যাফেন আপনার শরীরের যাচ্ছে তা নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
* নাইট ক্রিমের ব্যবহার করুন। এগুলি আপনার ত্বকের প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা বজায় রাখবে। এবং ত্বকের প্রয়োজনীয় প্রোটিন কোলাজেন বাড়িয়ে তোলে।
* হায়ড্রেটিং বা ত্বকে প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা বজায় রাখা খুবই আবশ্যক। এক্ষেত্রে ভাল ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন। প্রয়োজনে কুড়ির ঘরে থাকাকালীন যা ব্যবহার করতেন তা পাল্টে ফেলুন।
* আপনার বয়স যাই হোক না কেন, সানস্ক্রিন ছাড়া বাড়ির বাইরে পা রাখা মানেই ত্বকের বিপদ ডেকে আনা। তবে তিরিশের ঘরে গেলে এসপিএফ ৩০ ছাড়া সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন না। আরও ভাল হয় যদি ইউভিএ ও ইউভিবি-র সুরক্ষা যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। ফাউনডেশন লাগাতে ভালবাসলে এসপিএফ যুক্ত ফাউন্ডেশন ব্যবহার করুন।
* মুখ ও মাথার ত্বক পরিষ্কার করুন। মুখ পরিষ্কার করতে মাইল্ড ক্লেনজার বা জোজোবা অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।
* মাথার ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখুন। সপ্তাহে অন্তত ২-৩ বার মাথা ধুয়ে নিন। মাথার ত্বকে প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা বজায় থাকলে চুলের স্বাস্থ্য ভাল থাকবে। সপ্তাহে অন্তত দুবার মাথায় তেল মালিশ করুন।
* পারলে রাসায়নিকে ভরা প্রসাধন সামগ্রী এড়িয়ে চলুন। বরং গাছগাছালির নির্যাসে তৈরি সামগ্রী ব্যবহার করতে পারেন।
* তিরিশের ঘরে পৌঁছে ত্বকের এই পরিচর্যার পাশাপাশি ঘরোয়া উপায়ে রূপচর্চা করলে ত্বক নিঃসন্দেহে ভাল থাকবে। এর পাশাপাশি মনে ভাল রাখুন, হাসি খুশি থাকুন। ত্বকের তারুণ্য বজায় থাকবে আপনাকেও সুন্দর দেখাবে। অতিরিক্ত মানসিক চাপে বয়স আরও তাড়াতাড়ি বাড়ে।
(ছবি সৌজন্য :Pexels)