কাবুল: সপ্তাহ তিনেক ধরে তালিবানের দখলে রয়েছে আফগানিস্তান। অনেক হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে কাবুলিওয়ালার দেশে। অনেক মানুষের প্রাণ গিয়েছে। বহু মানুষ নিজের ভিটে মাটি ছেড়ে পালিয়েছেন তালিবান আতঙ্কে। ভয় কাটাতে নানাবিধ আশ্বাস দেওয়া হয়েছে তালিবানের তরফে।
এরই মাঝে প্রকাশ্যে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। এক মহিলা পুলিশকর্মীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে তিন তালিব জঙ্গি। প্রথমে বাড়িতে ঢুকে বন্দুকের নলের সামনে পরিবারের সকল সদস্যকে এক জায়গায় করা হয়। তারপরে ওই মহিলা পুলিশকর্মীকে দড়ি দিয়ে বেঁধে বেদম প্রহার করে তিন জঙ্গি। তারপরে গুলি করে হত্যা করা হয় ওই মহিলাকে।
আরও পড়ুন- তালিবান শাসিত আফগানিস্তানের পাশে থাকার বার্তা রাষ্ট্রসঙ্ঘের
সমগ্র হত্যাকাণ্ড সম্পন্ন হয়েছে ওই মহিলার স্বামী এবং সন্তানদের সামনে। এমনই সংবাদ পরিবেশন করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা বিবিসি। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ওই স্থানীয় একটি সংশধনাগারের কর্মী ছিলেন ওই মহিলা। মৃত্যুর সময়ে তিনি আট মাসের গর্ভবতী ছিলেন। সেকথা জানার পরেও কোনও দয়া-মায়া দেখায়নি জঙ্গিরা। বেঁধে মারতে মারতে মুখ থেঁতলে দেওয়া হয়। তারপরে গুলি করে হত্যা করা হয়।
ঘরের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে রক্ত
ঘটনাটি আফগানিস্তানের ঘোর প্রদেশের রাজধানী ফিরোজকোহ এলাকার। গত শনিবার সেখানের প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে ঢুকে শাস্তি দিচ্ছিল তালিব জঙ্গিরা। সেই সময়েই বানু নেগার নামক ওই মহিলার বাড়িতে প্রবেশ করে জঙ্গিরা। শনিবার রাতের ওই ঘটনা কিছুতেই ভুলতে পারছেন না মৃতার স্বামী এবং সন্তানেরা। ওই নৃশংস হত্যা এবং স্ত্রীর ক্ষতবিক্ষত মুখটার কথা মনে করলেও শিউরে উঠছেন তিনি।
আরও পড়ুন- তালিবানের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করতে কাবুলে পাক গুপ্তচর সংস্থার প্রধান
১৯৯০ সালে আফগানিস্তানে মহিলাদের লেখাপড়া বন্ধ করে দিয়েছিল তালিবান। পরে ২০০১ সালে তালিবানের হাতছাড়া হয় আফগানিস্তান। দুই দশক পরে ফের ক্ষমতা দখলের পরে মহিলাদের লেখাপড়া এবং চাকরি বা রাজনীতির ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার কথা বলে তালিবান। তবে সবই করতে হবে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে। সেই ঘোষণা যে সোনার পাথর বাটি তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে পুলিশকর্মী বানু নেগারের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়। যদিও ফিরোজকোহ-র মহিলা পুলিশকর্মীর হত্যার ঘটনার দায় স্বীকার করেনি তালিবান।