কলকাতা: তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যের ক্ষমতা দখল করেছে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রীর পদে আসীন হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আদলে দেবী দুর্গার মূর্তি তৈরি হচ্ছে উত্তর কলকাতার কুমোরটুলিতে। যা স্থান পাবে কলকাতা লাগোয়া উত্তর ২৪ পরগণা জেলার একটি মণ্ডপে। সেই মূর্তি নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
গেরুয়া রাজনীতি করা দিলীপ ঘোষ উঠে এসেছেন সংঘ শিবির থেকে। তাঁর কাছে এই মূর্তি যে সুখকর হবে না তা বলাই বাহুল্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদলে দেবী দুর্গার মূর্তি গড়া বাঙালির ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার সমতুল। শুক্রবার সাংবাদিকদের সামনে এমনই মন্তব্য করছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ।
আরও পড়ুন- আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে ডাকাত, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্যাংক ডাকাতি রুখল পুলিশ
দিলীপ ঘোষ বলেছেন, “আমি মা দুর্গার সামনে প্রার্থণা করায় বিশ্বাস করি। নিয়মিত পুজো করি। দেবী দুর্গা বাংলার গর্ব। অন্য কারও আদলে দেবী দুর্গার প্রতিমা নির্মাণ করা অনুচিত।” সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেছেন, “নিজেকে সেকুলার বা ধর্মনিরপেক্ষ বলে দাবি করে বাংলার মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগে বারবার আঘাত করা হচ্ছে। এই কাজগুলো ঠিক হচ্ছে না।”
এর আগে ২০১৬ সালে নদিয়া জেলায় মমতার আদলে দেবি দুর্গার মূর্তি তৈরি হয়েছিল। কুমোরটুলিতে এই প্রথমবার, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মূর্তিতে দেওয়া হচ্ছে দশভুজার রূপ। এর আগে বিভিন্ন বড় মাপের ব্যক্তিত্বদের মূর্তি বানানোর বায়না পেয়েছে কুমোরটুলির শিল্পীরা। তবে মমতার আদলে দেবী বানানোর বায়না এই প্রথমবার।
আরও পড়ুন- আফগানিস্তান জটিলতার মাঝেই দোহা, কাতার, জার্মানি সফরে মার্কিন বিদেশ সচিব
এই অভিনব থিমের পরিকল্পনা করেছে বাগুইহাটি নজরুল পার্কের একটি পুজো কমিটি। তাদের এবারের থিম রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প। যেখানে দেবী দুর্গার পাশে থাকবে দশভুজা রূপে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মূর্তি। এই মূর্তি তৈরির বায়না পেয়েছেন কুমোরটুলির শিল্পী মিন্টু পাল। তাঁর স্টুডিওতেই জোরকদমে চলছে মাতৃরূপে মমতার মূর্তি গড়ার কাজ।
দেবী দুর্গার মতই মমতার মূর্তিতে থাকবে ১০টি হাত। বাগুইহাটির ওই ক্লাবের এক কর্তা বলেন, দেবী দুর্গা যেমন নিজের দশ হাত দিয়ে তার সন্তানদের আগলে রাখেন, সে ভাবেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দশভুজার মত আগলে রেখেছে রাজ্যবাসীকে। তাঁর নিত্য নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে রক্ষা করছেন সাধারণ মানুষকে। তাই মুখ্যমন্ত্রীর মূর্তির ১০ হাতে থাকবে তাঁর উন্নয়নের চিহ্ন স্বরূপ ১০টি প্রকল্পের ঝুলি। দুয়ারে সরকার থেকে আরম্ভ করে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, যুবশ্রী, স্বাস্থ্য সাথী, সবুজ সাথী প্রভৃতি। সঠিক সময়ের মধ্যে এই মূর্তি দ্রুত তৈরি করে ক্লাব কর্তাদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য শিল্পীদের ব্যস্ততা এখন তুঙ্গে। অবশ্য চরম গোপনীয়তা বজায় রেখে সেই মূর্তি তৈরির কাজ চলছে। কারণ শিল্পী জানান, ক্লাব কর্তারা চান না যে, তাঁদের এই অভিনব থিমের কথা বাইরে প্রকাশ পাক।