কলকাতা: মুকুল রায়, তন্ময় ঘোষ, বিশ্বজিৎ দাস৷ বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন৷ শুধু তারা নয়, জেলা স্তরে শয়ে শয়ে বিজেপি কর্মী-সমর্থক তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন৷ যা চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের৷ এরকম পরিস্থিতিতে সাধারণ কার্মীদের আটকাতে না পারলেও বিধায়ক আটকাতে মরিয়া গেরুয়া শিবির৷ মঙ্গলবার রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, যারা দল ছাড়ছে তাঁদের সকলের বিরুদ্ধে দল ত্যাগ বিরোধী আইনের সাহায্য নেওয়া হবে৷
দল ত্যাগীদের বিষয়ে শমীক ভট্টাচার্য বলেন, এদের ছাড়াই বিজেপি ১৮ আসন পেয়েছে। কেউ চলে গেলে কিছু করার নেই। এরা শাসনের অলিন্দে থাকতে চান। লোকসভা নির্বাচনের প্রেক্ষিত আলদা। কারা পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি করেন, আর কারা চলে যাচ্ছেন তা মানুষ খুব ভালো করে জানে। সঠিক সময়ে মানুষ উত্তর দেবে। এরপরেই শমীকবাবু বলেন, যারা দল থেকে চলে যাচ্ছেন, যে কোনও মূল্যে তাঁদের বিরুদ্ধে দল ত্যাগ বিরোধী আইন আমরা কার্যকর করে দেখাবো।
আরও পড়ুন-তালিবানের সঙ্গে আলোচনায় ভারতীয়দের দ্রুত দেশে ফেরা ও নিরাপত্তা নিয়ে কথা হয়েছে
সোমবার সকালে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু তাঁর হাতে দলীয় পতাকা নিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ। এরপরই তন্ময় ঘোষ বলেন, জোর করে বাংলা দখলের চেষ্টা করেছিল বিজেপি। বাঙালি অধিকার, ঐতিহ্য কোনও কিছুকেই ওরা সম্মান দিতে পারে না। তন্ময়বাবু আরও বলেন, বিজেপি ফাঁকা গলায় বেশি আওয়াজ দেয়। বুথ স্তরে সংগঠন বলে কিছু নেই ওদের। ২০০ আসন পাবে না অনেক দিন আগেই বুঝে গিয়েছিল। বিজেপির টিকিটে যারা জিতেছে নিজেদের ক্যারিশমায় জিতেছেন। এতে দলের কোনও ভূমিকা নেই। দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলের স্থানীয় নেতা ছিলেন ব্যবসায়ী তন্ময়। বিধানসভা ভোটের আগে আচমকা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। গেরুয়া শিবিরে যোগদানের পরদিনই বিষ্ণুপুরের বিজেপি প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করা হয়।
ভোটের আগে দলে থেকে অনেকেই কাজ করতে পারছিলেন না বলে তৃণমূল(TMC) ছেড়েছিলেন। যাদের সকলেরই গন্তব্য ছিল পদ্ম শিবির। ভোটের পরে অবশ্য ছবিটা বদলে গিয়েছে। বহু রাজনৈতিক ব্যক্তি এখন বিজেপি(BJP) ছেড়ে তৃণমূলে নাম লেখাচ্ছেন। তেমনই বাগদার বিজেপি বিধায়ক মঙ্গলবার হাতে তুলে নিলেন তৃণমূলের পতাকা।
‘দলে থেকে কাজ করতে না পারা’র কারণ দেখিয়ে মঙ্গলবার বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন৷। তবে এক্ষেত্রে দল বলতে বিজেপিকে বোঝাতে চেয়েছেন তিনি। একসময়ে তৃণমূলের সঙ্গেই ছিলেন বিশ্বজিৎ দাস। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পরে তিনি যোগ দেন বিজেপি শিবিরে। দিল্লিতে গিয়ে গায়ে গেরুয়া নামাবলী চাপিয়ে নিয়েছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন- ঘুরে দাঁড়াচ্ছে অর্থনীতি, চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে জিডিপি বৃদ্ধির হার ২০.১ শতাংশ
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে উত্তর ২৪ পরগণা জেলার বাগদা কেন্দ্র থেকে বিশ্বজিৎ দাসকে প্রার্থী করে বিজেপি। বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া ওই কেন্দ্র থেকে জয় হাসিল করেন বিশ্বজিৎ। সেই ফলাফল ঘোষণার চার মাসের মাথায় দলবদল করে ফের তৃণমূল শিবিরে নাম লেখালেন বাগদার বিধায়ক। এদিন পুরনো দলে ফিরে তিনি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বিজেপির বিরুদ্ধে। তাঁর মতে, “বিজেপিতে কাজ করার পরিবেশ নেই।”