খেলা খেলা দিয়ে শুরু
খেলতে খেলতে শেষ
কেউ বলেছিল ছিঃ ছিঃ
কেউ বলেছিল বেশ,
এই খেলা আজও অব্যাহত। অগষ্ট মাসের এই ৩১ তারিখেই তাঁর জন্মদিন। প্রখ্যাত পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষ। বাঙালির মননকে অন্য ধারায় ভাবতে শিখিয়েছিলেন তিনি।
বিজ্ঞাপনী দুনিয়া থেকে কাজ শুরু করেছিলেন তিনি । বাংলা ছবির অত্যন্ত খারাপ সময়ে সাহিত্য ,কৃষ্টি নিয়ে বড় পর্দায় নানা চরিত্রের আলপোনা দিয়ে সাজিয়ে তোলেন। ১৯৯২ সালে তাঁর প্রথম ছবি ‘হিরের আংটি’ মুক্তি পায়। ছোটদের এই ছবি দেখে অনেকেই বুঝতে পারেননি বাংলা ছবির নতুন অধ্যায় শুরু হতে চলেছে। ১৯৯৪ ঋতুপর্ণ ঘোষের দ্বিতীয় ছবি ‘উনিশে এপ্রিল ‘ মুক্তি পায়। এর পর বাঙালির ছবিতে ঋতুরাজ চলতে থাকে, ‘দহন’, ‘অসুখ’, ‘বাড়িওয়ালি’, ‘রেনকোট’,’অন্তরমহল’,’চোখের বালি’, ‘আবহমান’ বক্স অফিস হোক বা জাতীয়, আন্তর্জাতিক স্তরে বাংলা ছবির জয়যাত্রা অব্যাহত। ঋতুপর্ণ ঘোষের ছবি মানেই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারের সম্ভার।
ঋতুপর্ণ মানেই তো সৃষ্টি, নতুনের আমন্ত্রন, ক্লাসিক গল্প বলার ধরন। আজ বুঝেছেন সকলেই, যাঁরা সেদিন চোখ টাটিয়েছিলেন। তবে এসব সমালোচনাকে মোটেও আমল দিতে চাননি ঋতুপর্ণ, নিজের মত করেই গল্প শুনিয়ে দর্শকদের ।
আরও পড়ুন: বুদ্ধদেব গুহ: শরীরী প্রেম, অশরীরী উপস্থিতি
পুরুষ হলেও নিজের অন্তরেই লুকিয়ে ছিল নারীত্ব। তার লিঙ্গ নিয়ে হাজারও সমালোচনার পরেও নিজের দৃঢ় আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ঋতুর জবাব ছিল, শিল্পীর কোন লিঙ্গ হয় না। সমকামীতা নিয়ে একসময় গোটা বিনোদন দুনিয়া উত্তাল হলেও তার অবদান আজও সকল সিনেপ্রেমীর মনে অমলিন ‘ঋতুরাজ’ এক অনন্য ‘ঋতুপর্ণ ঘোষ’। পরিচালনার পাশাপাশি অভিনয়েও নিজের স্বাক্ষর রেখেছেন ।
রোজকার জীবনের থেকেই তাঁর চরিত্ররা রূপ পেতো বড়পর্দায়। নারী মনের গহন হৃদয়ের কথা তাঁর চিত্রনাট্যে উঠে এসেছে বারবার। অসময়ে চলে গেলেও আজও তিনি রয়েছেন দর্শক মনে। হাজার মন খারাপের দিস্তা
জমানো থাকলেও জন্মদিনের অনেক শুভেচ্ছা, ঋতুপর্ণ ঘোষ। সিনেমা নিয়ে আলোচনা যতদিন থাকবে, সব ঋতুতেই তাঁর উজ্জ্বল উপস্থিতি অপরিহার্য।