কাবুল: প্রবাদ রয়েছে মানুষ যা থেকে মুক্তি পেতে চায় সেটাই তাকে আঁকড়ে ধরে। সেই প্রবাদের বাস্তবতা যেন বৃহস্পতিবার ঘটে যাওয়া কাবুল বিমানবন্দরের বিস্ফোরণ। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ সমবেত হয়েছেন কাবুল বিমানবন্দরে। অন্য দেশে গিয়ে পরিত্রাণ পাওয়াটাই লক্ষ্য। আর সেই বিমানবন্দরেই ঘটে গেল ভয়াবহ একাধিক বিস্ফোরণ।
দেশ ছাড়ার জন্য বিমানবন্দরে গিয়ে পৃথিবী ছাড়তে হবে কিংবা বিস্ফোরণে জখম হতে হবে- তা মনে হয় কেউই ভাবেননি। কিন্তু সেটাই হল। বিকেলের পরে কাবুল বিমানবন্দর চত্বরের ছবিটা যেন ইঙ্গিত দিচ্ছে অদূর ভবিষ্যতে আরও সমস্যা রয়েছে। যার সমাধান খুব সহজে হবে না।
বিমানবন্দরের পাঁচিলের পাশের নালা ভেসে যাচ্ছে রক্তে। আর সেই রাস্তায় পরে রয়েছে বহু মানুষ। যাদের অনেকের শরীরেই প্রাণ নেই। কেউ বিস্ফোরণের কারণে সংজ্ঞা হারিয়েছেন। যাদের গায়ে বিস্ফোরণের আঁচ লাগেনি বা অল্প জখম হয়েছেন তাঁরা সাহায্য করছেন আহতদের। জনা কয়েক স্বেচ্ছাসেবীকেও দেখা যাচ্ছে। হাত ধরে বা কারও পা ধরে টেনে অনেককে বের করে আনা হচ্ছে কিছু লাশ বা জখম মানুষদের গায়ের উপর দিয়ে। পরিশ্রমের পরে কখনও আবার দেখা যাচ্ছে ওই উদ্ধার করা ব্যক্তির দেহে প্রাণ নেই।
পাশেই রাস্তায় শুয়ে আর্তনাদ করছেন অপর এক জখম ব্যক্তি। হাত দিয়ে ইশারা করছেন, চলার ক্ষমতা নেই। কারণ পা উড়ে গিয়েছে বিস্ফোরণে। তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধারের চেষ্টা। কিন্তু সেই ব্যক্তির কাছে পৌঁছাতে গেলেও পার করতে হচ্ছে কয়েকটা সম্ভাব্য লাশ। এই অবস্থায় নিজেকে সামাল দেওয়ার জন্যেও যথেষ্ট মানসিক শক্ত থাকার দক্ষতা লাগে। তারপরে আসে অন্যকে সাহায্যের কথা। সেই দর্শন যেন উধাও হয়ে গিয়েছে কাবুল বিমানবন্দরে জরো হওয়া ব্যক্তিদের মগজ থেকে।
আরও পড়ুন- চতুর্থ স্তম্ভ: কার বিকাশ?(26/08/2021)
তালিবান শাসনের আতঙ্কের মাঝেই এই বিস্ফোরণ প্রবল প্রতিকূলতার সৃষ্টি করেছে কাবুলে। ‘গোদের উপর বিষ ফোড়া’র যেন আদর্শ উদাহরণ। বিভিন্ন সংস্থা হতাহতের সংখ্যা নিয়ে নানান মত পোষণ করছে। কিন্তু সেই সংখ্যা যে অনেকটাই বেশি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে তা অনুমেয়।