নয়াদিল্লি: ভয়ানক অবস্থার মধ্যে রয়েছে রাজধানী কাবুল-সহ সমগ্র আফগানিস্তান। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে গিয়েছে যে তা কল্পনা করা যায় না কিংবা ভাষায় প্রকাশ কড়া যায় না। ভারতে এসে এমনই জানালেন আফগানিস্তানের সাংসদ আনারকলি কৌর হোনায়ার।
ভারতীয় বায়ু সেনার বিশেষ বিমানে করে দিল্লিতে এসেছেন ওই সাংসদ। তারপরে সংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি বলেছেন, “ভারত সরকার, প্রধানমন্ত্রী মোদি, ভারতের বিদেশমন্ত্রক এবং ভারতীয় বায়ুসেনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসার জন্য।” সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেছেন, “আফগানিস্তানের অবস্থা কল্পনাতীত। ওখানে কোন সরকার নেই, প্রেসিডেন্ট দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। আশা করেছিলেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। কিন্তু কিছুই হল না।”
১৫ অগস্ট কাবুলের দখল নেয় তালিবান। সেই সঙ্গে সমগ্র আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় ওই জঙ্গিগোষ্ঠীর দখলে। তারপর থেকেই চরম অরাজক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে কাবুলিওয়ালার দেশে। যা নিয়ে ওই দেশের মহিলা সাংসদ বলেছেন, “অনেক আফগান নাগরিকের উপযুক্ত নথি নেই। উষ্ণ আবহাওয়ার জন্য আমরা রাত ১২টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি। নিত্যাদিন বিমানবন্দর চত্বরে গুলি চলছে। তিন-চার জন করে মানুষ রোজ প্রাণ হারাচ্ছেন।”
আরও পড়ুন- CAA-র নিয়মে নাগরিকত্ব পাবে না আফগানরা, যুক্তি দিলেন আসাদুদ্দিন
নিজের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সাংসদ হয়ে ওই দেশে সংখ্যালঘু মানূষদের অবস্থা বেশ ভালোই জানেন আনারকলি। যা দিল্লিতে এসে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, “২০ বছর আগে, তালিবান মনে করতো মুসলিম না হয়ার কারণে হিন্দু বা শিখদের কোন অধিকার নেই। কাবুলের দখল নেওয়ার পড়ে তালিবান যে সাংবাদিক সমেলন করেছে সেখানেও হিন্দু বা শিখদের কোন উল্লেখ নেই। তাই ভবিষ্যতে আফগানিস্তানে সংখ্যালঘুদের কোন নিশ্চয়তা নেই।”
আনারকলির মতো অনেক আফগান সংখ্যালঘু ভারতে এসেছেন। সেই তালিকায় এর এক সাংসদ রয়েছেন। তাঁর নাম নরেন্দ্র সিং খালসা। তিনি বলেছেন, “২০ বছর ধরে যা তৈরি কড়া হল, কয়েক মাসের মধ্যে তা শেষ হয়ে গেল। আমার কান্না পাচ্ছে।”
অন্যদিকে, আফগানিস্তানের অমুসলিম সংখ্যালঘুদের CAA-র অধীনে নাগরিকত্ব দেওয়ার দাবি উঠতে শুরু হয়েছে ভারতের মাটিতে। যা অসম্ভব বলে দাবি করেছেন হায়দরাবাদের সাংসদ আসাদুদ্দিন ওয়াইসি। কারণ, নয়া নাগরিকত্ব আইনের নিয়ম অনুসারে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যারা ভারতে এসেছেন তারাই কেবল নাগরিকত্ব পেতে পারে। এমনই লেখা রয়েছে আইনে।