শান্তিনিকেতন: দিন কয়েক আগেই হুশিয়ারি দিয়েছিলেন শান্তিনিকেতনে ‘খেলা শুরু’ করবে তৃণমূল। কথা মতো কাজ শুরু করলেন বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। রাখি পূর্ণিমার দিন সকালে বিশ্বভারতী চত্বরে খোল, খঞ্জনি বাজিয়ে মিছিল করল তৃণমূল কংগ্রেস। যা বিশ্বভারতী ইতিহাসে সম্ভবত প্রথম।
রবিবার সকালে বোলপুর পুরসভার নবগঠিত ২ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির তরফে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডল, বোলপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহর ছবি দেওয়া পোস্টার নিয়ে মিছিল শুরু হয়। শান্তিনিকেতনের রতন পল্লী থেকে শুরু হওয়া মিছিলে খোল, খঞ্জনিও বেজেছে। শান্তিনিকেতনের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী প্রাঙ্গণ উপাসনা গৃহের সামনেও যায় এই মিছিল।
মিছিলে রূপপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রমেন্দ্রনাথ সরকার সহ তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বিশ্বভারতীর একাধিক প্রাক্তন পড়ুয়া ছাড়াও বর্তমান ছাত্র-ছাত্রীরাও মিছিলে যোগ দেন।
আরও পড়ুন: বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে ভর্ৎসনা কলকাতা হাইকোর্টের
সম্প্রতি বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার শান্তিনিকেতনে একটি সরকারি কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসেছিলেন। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাধের শান্তিনিকেতনে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর সরকারি অনুষ্ঠানে এক ঝাঁক বিজেপি নেতা-কর্মীকে দেখা গিয়েছিল। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির বীরভূম জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহাও।
সে দিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অনুব্রত বলেছিলেন, অধ্যাপক বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বিশ্বভারতীর উপাচার্য পদে বসার পর থেকেই শান্তিনিকেতনের মাটিকে বিজেপির আখড়া বানিয়ে তুলেছে। তিনি হুশিয়ারি দিয়েছিলেন, ‘এবার থেকে আমি বিশ্বভারতীতে ঢুকে রাজনীতি করব। আমার দল তৃণমূল কংগ্রেস রাজনীতি করবে।’ সেই মতো রবিবার বিশ্বভারতীতে মিছিল করল রাজ্যের শাসকদল।
প্রত্যেক বছর আজকের এই বিশেষ দিনে প্রথা অনুযায়ী শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতীর তরফে রাখী বন্ধন উৎসব পালিত হয়। কিন্তু এ বছর রাখি বন্ধন উৎসবের সকালে কর্তৃপক্ষের তরফে উৎসব পালন করার কোনও উদ্যোগ দেখা যায়নি। যা নিয়ে তৈরি হয়েছে নয়া বিতর্ক।
আরও পড়ুন: দেশে ফিরছেন ‘অপহৃত’ ভারতীয়রা
পরাধীন ভারতবর্ষে ১৯০৫ সালে বাংলা থেকে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ডাক উঠেছিল। ব্রিটিশ শাসিত ভারতবর্ষে ইংরেজরা হিন্দু মুসলমান বিভাজন তৈরি করে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন ভাঙার চেষ্টা করেছিল। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তা আঁচ করতে পেরে রাখি বন্ধন উৎসবের মধ্য দিয়ে হিন্দু মুসলমানকে একত্রিত করে এক সুতোয় গেঁথে দিয়েছিলেন।