কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: চাঁদিফাটা রোদ। রাস্তায় জুতোর শব্দ৷ চারপাশে পর পর গুলির শব্দ৷ এরই মাঝে তারস্বরে কেঁদে চলেছে এক শিশু ৷ কতক্ষণ মাকে দেখেনি তার ইয়ত্তা নেই৷ যেন নাগাড় খুঁজে চলেছে প্রিয়জনকে৷ এ দৃশ্য হলিউডের কোনও ছবির নয়৷ এটা তালিবানদের দখলে যাওয়া কাবুল বিমানবন্দরের৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া এমন ছবি মনে করিয়ে দিল বছর কয়েক আগের সিরিয়ার ছবিটা৷ যেখানে, ছোট্ট আলান কুর্দির নিথর ছবিটা চোখে জল এনে দিয়েছিল গোটা বিশ্বের৷
আরও পড়ুন: কাবুল বিমান বন্দরের চরম অব্যবস্থা-বিশৃঙ্খলার ছবি ধরা পড়ল স্যাটেলাইট ক্যামেরায়
An internally displaced child from the northern provinces, who fled from his home due fighting between Taliban and Afghan security forces, shelters in a public park in Kabul, Afghanistan. More photos of the week: https://t.co/26cpv9pVEW pic.twitter.com/vO8e0yFHET
— Reuters Pictures (@reuterspictures) August 15, 2021
এরকম একজন নয়, বেশ কিছু শিশুর ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতে। কী হবে তাদের ভবিষ্যৎ জানে না কেউ। শুধু বিমানবন্দরই নয়, আফগানিস্তানের রাস্তায় পড়ে আছে শিশুরা। এদের ভবিষ্যৎ কী, জানে না কেউ। কেউ হারিয়েছে বাবা-মাকে। কারও বাবা কিংবা মা প্রাণের ভয়ে তাড়াহুড়োতে শিশুকে নিয়ে যেতে ভুলে গিয়েছে। যেন থমকে গিয়েছে শৈশব। হাজার হাজার মানুষ ছুটছে সন্ত্রাস থেকে বাঁচতে। ভিড় জমাচ্ছে বিমানবন্দরে। বিমানবন্দর না দুর্গাপুজোর কলকাতা তা বোঝার উপায় নেই। প্রবাসীরা তো বটেই, আফগানরাও সিঁটিয়ে রয়েছেন ভয়ে।
আরও পড়ুন: তালিবানদের সমর্থন করলেই ফেসবুক ডিলিট, ঘোষণা মার্ক জুকারবার্গের
১৫ অগস্ট কাবুলের দখল নেয় জঙ্গি তালিবান। তারপর থেকে সেই দেশ ছেড়ে পালাতে চাইছে সে দেশের নাগরিক সহ প্রবাসীরা। জঙ্গিরা দখল করে নিয়েছে সমস্ত স্কুল। বন্ধ করে দিয়েছে দূতাবাস। আতঙ্কে রয়েছেন সেই দেশের মানুষজন। অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন পার্কে। বিভিন্ন দেশ তাদের নাগরিকদের ফেরত আনতে বিমান পাঠিয়েছে। ইতিমধ্যেই তালিবানরা হুঁশিয়ারি দিয়েছে আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ার। চিন্তায় রাষ্ট্রপুঞ্জ। এর মধ্যেই ভাইরাল হয়েছে বহু অসহায় শিশুর ছবি।
আরও পড়ুন: কাবুলের পথে লস্কর-জইশ জঙ্গিরা, জটিল হচ্ছে পরিস্থিতি
২০১৫ সালে ভাইরাল হওয়া আলান কুর্দির নিথর দেহ
২০১৫ সালে ছোট্ট আলান কুর্দি সাগরপাড়ে মুখ থুবড়ে পড়েছিল। আইএস জঙ্গিদের সঙ্গে সরকারি বাহিনীর লড়াইয়ে সে সময় উত্তপ্ত ছিল তুরস্ক। গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্থ ছিল সিরিয়া। উদ্বাস্তু হয়েছিলেন হাজার খানেক মানুষ। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে জাহাজে করে পালিয়ে যাচ্ছিল বাবা-মায়ের সঙ্গে ছোট্ট আলান। কিন্তু শেষপর্যন্ত আর যাওয়া হয়নি বাবার সঙ্গে। পথেই মারা গিয়েছিল মাত্র তিন বছর বয়সী আলান। সমুদ্রপাড়ে ভেসে উঠেছিল তার দেহ। এই ঘটনা গোটা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিল।