মেদিনীপুর: কাগজ কুড়িয়ে সামান্য কিছু টাকা আয় হত৷ তাতে তিন পুত্রসন্তানের ভরণপোষণে নাকানি-চোবানি খেতেন মা৷ অভাবের সংসারে আসে চতুর্থ সদস্য৷ শনিবার ভোরে ফুটফুটে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন মা৷ আর জন্মের পরই বিক্রি করে দেন মেয়েকে৷ শহরের এক বাসিন্দাকে মাত্র ৫ হাজার টাকায় মেয়েকে বিক্রি করে দেন তিনি৷ কন্যাশ্রী দিবসের দিন এই ঘটনার কথা জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়৷ খবর পেয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ৷
আরও পড়ুন: বাঁকুড়ায় পুকুর থেকে উদ্ধার ৮৮টি মোবাইল ফোন, সাইবার প্রতারণায় যোগ খুঁজছে পুলিশ
শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে মেদিনীপুর শহরে৷ আজ সকালে রাস্তাতেই কন্যা সন্তানের জন্ম দেন ইদকুরিমাঠ সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা বুধনি ভুঁইঞা৷ জন্মের পরই সিপাই বাজার এলাকার কোনও এক ব্যক্তিকে ৫ হাজার টাকায় মেয়েকে বিক্রি করে দেন৷ তার পর তিন সন্তানকে নিয়ে রাস্তায় ইতিউতি ঘুরছিলেন৷ ততক্ষণে এলাকায় চাপা গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে ওই মহিলা সদ্যোজাত সন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছেন৷ স্থানীয়দের মারফত খবর যায় কোতয়ালি থানার পুলিশের কাছে৷ পুলিশ ওই মহিলাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়৷ শুরু হয়েছে তদন্ত৷
আরও পড়ুন: ভুয়ো মহিলা আইপিএসকে ৫ দিনের পুলিশি হেফাজত, নির্দেশ আদালতের
পুলিশের কাছে ওই মহিলা জানিয়েছেন, পাঁচ মাস আগে তাঁর স্বামী মারা যান৷ অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি৷ তার পরই মারা যান৷ স্বামী মারা যাওয়ার পর নতুন সন্তানের পিতৃপরিচয় নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন বুধনিকে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়৷ তার পর থেকে তিন সন্তানকে নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেরাতেন৷ কাগজ-আবর্জনা কুড়িয়ে সংসার চলত৷ শনিবার সকালে রাস্তায় কন্যা সন্তানের জন্ম দেন৷ আশেপাশের কয়েকজন লোকের পরামর্শে মেয়েকে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন৷ এখনও পর্যন্ত ক্রেতা ও সদ্যোজাত সন্তানের খোঁজ পাওয়া যায়নি৷ এর আগেও পেটের দায়ে সন্তান বিক্রির ঘটনা ঘটেছিল মেদিনীপুর শহরের জজকোট সংলগ্ন এলাকায়৷ সেবার পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করেছিল৷