কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: দীর্ঘ ২০ বছরের প্রতীক্ষার অবসান। কিডনি পাচারের পর্দাফাঁস করলেন চক্রের এক শিকার ।
ঠিক কী হয়েছিল?
দু’দশক আগের কথা। ২০০১ সাল। আর্থিক অনটনে ভুগছিলেন বাঁশদ্রোণীর বাসিন্দা অরূপকুমার দে। সেই সময় এক দৈনিক পত্রিকায় কিডনি ডোনারের বিজ্ঞাপন দেখেন। আর্থিক অনটনের কারণে নিজের কিডনি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেন। বিজ্ঞাপনে দেওয়া নম্বরে যোগাযোগ করেন। অরূপবাবুকে বলা হয় কিডনি দিলে মিলবে ৩ লক্ষ টাকা। সেই মত তিনি অপারেশন করেন। অপারেশনের পর থেকেই আর বিজ্ঞাপনদাতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি তিনি। বুঝতে পারেন তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। একদিকে শারীরিক অসুস্থতা ও অর্থনৈতিক টানাপোড়েন। একইসঙ্গে বুঝতে পারেন এ ভাবে কিডনি বিক্রি সম্পূর্ণ বেআইনি। তাই আর কোনওরকম পদক্ষেপ নেননি তিনি।
কুড়ি বছর পর
২০২১ সালের ৮ অগস্ট। একই ভাবে সংবাদপত্রে তিনি কিডনি চাই-এর বিজ্ঞাপন দেখেন। তাঁর মনে হয় বিজ্ঞাপনটি ওই চক্রের দেওয়া। তিনি বিজ্ঞাপনে দেওয়া নম্বরে যোগাযোগ করেন। বুঝতে পারেন ওই একই প্রতারণা চক্র এই বিজ্ঞাপন দিয়েছে। ফোনে কথা বলে বুঝতে পারেন একই চক্রের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। এরপর অরূপ স্থির করেন সামনাসামনি দেখা করবেন। সিদ্ধান্ত নেন ভুয়ো কিডনি চক্রের পর্দাফাঁস করার।
সেই মত রুবি হাসপাতালের সামনে ওই চক্রের একজনের সঙ্গে দেখা করেন অরূপকুমার দে। যাঁর নাম নীতীশ গুপ্ত। তাঁকে চেপে ধরতেই স্বীকার করে পাচার চক্রের কথা। তিনি জানান, নিজেও কিডনি পাচার চক্রের শিকার। তাঁর সঙ্গেও এমন প্রতারণা করা হয়েছে। এরপর আর্থিক অনটনের কারণে তিনি নিজেও কিডনি পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছেন। এখন তিনিও লোকেদের সঙ্গে এভাবেই প্রতারণা করেন।
মঙ্গলবার অরূপকুমার দে নামের ওই ব্যক্তি আনন্দপুর থানায় গিয়ে অভিযোগ জানান। তবে, পুলিশ এই অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে। এরপর বুধবার লালবাজারের দ্বারস্থ হন অরূপবাবু।