পশ্চিমবঙ্গ: বিরাম নেই বারিধারার। বছরভর ১২০০ থেকে ১৪০০ মিলিলিটার বৃষ্টি হয়ে থাকে রাজ্যে। গত কয়েকদিনে নির্ধারিত পরিমাণের অর্ধেকেরও বেশী বৃষ্টি হয়েছে। প্রায় ৭০০ মিলিলিটারেও বেশী বৃষ্টি হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দক্ষিণের একাধিক জেলায়। প্রবল বর্ষায় জলস্তর বেড়েছে ভাগরথীর। নদীর পাড় ভেঙে প্লাবিত হচ্ছে মালদা জেলার গ্রামের পর গ্রাম। জল বাড়ছে মুর্শিদাবাদের ফারাক্কায়। সেখানে বিপদসীমার অনেকটাই উপরে উঠে এসেছে নদী। অতিবৃষ্টিতে জল বেড়েছে গঙ্গা সংযুক্ত খালগুলিতে। দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু এলাকায় গঙ্গার জলস্তর বাড়তে থাকায় হু হু করে জল বাড়ছে। গঙ্গার জল ঢুকতে থাকায় প্লাবিত হচ্ছে নদীয়ার শান্তিপুরের একাধিক গ্রাম। ভেঙে গেছে বহু রাস্তা। নতুন করে মাটি ফেলে যাতায়াতের রাস্তা তৈরি করতে হচ্ছে শান্তিপুরের চৌধুরীপাড়া, নরসিংহ হাউস কলোনি সহ একাধিক গ্রামে। নিরাপদস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে গ্রামবাসীদের। ডিভিসি জল ছাড়ায় শীলাবতী, দ্বারকেশ্বর নদী ফুঁসছে। অবিরাম বৃষ্টিতে বান ডেকেছে দামোদর নদীতেও।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টে পেগাসাস নিয়ে শুনানি একটু পরেই
সমস্যায় পড়েছে পশ্চিমের জেলাগুলিও। ঝাড়খন্ডে প্রবল বৃষ্টির কারণে তেনুঘাট থেকে জল ছাড়া হচ্ছে। সেখানে জপলা নামক অঞ্চলে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে সোন নদী। সাহিবগঞ্জের কাছে বিপদসীমার উপরে রয়েছে গঙ্গা। সেই জলেও পশ্চিমের জেলাগুলি প্লাবিত হয়েছে। অবিরাম বৃষ্টির জেরে সঙ্কটজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বিহারে। পুনপুন, কোশী, বুড়ি গণ্ডক নদীর জল বাড়তে থাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে মুজাফফর নগর সংলগ্ন এলাকায়। ভাগলপুর, দীঘাঘাট, গান্ধীঘাট এলাকায় ভগীরথী নদীর জল ঢুকে ভাসিয়ে দিয়েছে একাধিক গ্রাম। জল ছাড়া নিয়ে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী চিঠি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন,’ডিভিসির ইচ্ছে মতো জল ছাড়ার কারণে ফের এ বছর রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হল।’ এই তিন রাজ্যের পাশাপাশি বন্যার কবলে পড়েছে উত্তর ও মধ্য প্রদেশ। মরসুমে স্বাভাবিকের থেকেও বেশী বৃষ্টিপাতের জেরে যমুনা, গঙ্গায় জলস্তর বেড়েছে। কয়ানো, সারদা, বেটয়া নদীর জল বাড়ায় উত্তরপ্রদেশে বন্যা হচ্ছে একাধিক গ্রামে। অতিবৃষ্টির কারণে রাজস্থানের চম্বল নদীর জলস্তর বেড়েছে। বিপদসীমার প্রায় ১৩.৭৪ মিটার উপর দিয়ে বইছে চম্বল নদী। পার্বতী নদীর জলে প্লাবিত হয়েছে রাজস্থানের কোটা শহর। উত্তরভারতের একাধিক রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেও আশারবাণী শোনাতে পারেনি দিল্লি মৌসম ভবন। সক্রিয় মৌসুমী অক্ষরেখায় জুলাইয়ের পর অগস্টেও জারি থাকবে ভারী বৃষ্টি। এর আগে ১৯৯৬ সালে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছিল রাজস্থানে।