ওয়েবডেস্ক- দূষণে (Pollution) নাজেহাল হয়েছে দিল্লি (Delhi)। কোনও সময় বায়ু সূচকের হার বেড়েছে আবার কমেছে। কিন্তু বিপদসীমার নীচে নামেনি সেই সূচক। এবার আগেভাগেই দিল্লিবাসীর জন্য বিশেষ পদক্ষেপ নিতে চলেছে রেখা গুপ্তা (Cm Rekha Gupta) নেতৃত্বাধীন পরিবেশ দফতর। সব কিছু ঠিক মতো এগোলে রাজধানী আগামী ৪ থেকে ১১ জুলাই পরীক্ষামূলক ‘ক্লাউড সিডিং’ (Cloud seeding) বা কৃত্রিম বৃষ্টি করা হবে।
প্রায় তিন কোটির বেশি খরচ করে এই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। দিল্লির পরিবেশমন্ত্রী মনজিন্দর সিং সিরসা ঘোষিত মনজিন্দর সিং সিরসার ঘোষিত ৩.২১ কোটির প্রজেক্টে বিমান থেকে আর্দ্রতাপূর্ণ মেঘে সিলভার আয়োডাইড ন্যানো পার্টিকেল, আয়োডিনযুক্ত লবণ এবং শিলা লবণের মিশ্রণ স্প্রে করা হবে। দিল্লির উপকণ্ঠে এবং উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে হবে এই ক্লাউড সিডিং। মোট পাঁচটি বিমান এই প্রক্রিয়ায় অংশ নেবে। ৯০ মিনিটের প্রতিটি উড়ান ১০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা কভার করবে।
আরও পড়ুন- ৪ নয়, এবার ৮ ঘণ্টা আগেই মিলবে সংরক্ষিত আসন চার্ট
আইআইটি কানপুর এবং আইএমডি পুনের সমন্বয়ে পরিচালিত এই অভিযানটি দিল্লির জন্য একটি অভিনব উদ্যোগ। ৯০ মিনিটের পাঁচটি অভিযানের প্রতিটিতে ১০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে চলবে। দিল্লির পরিবেশমন্ত্রী সিরসা জানিয়েছেন আরও জানিয়েছেন, বিমান কোন পথে উড়বে, তা ঠিক করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল আইআইটি কানপুরকে। তারা ইতিমধ্যেই সেই ‘ফ্লাইট প্ল্যান’ পুনের ইন্ডিয়ার মিটিওরোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট (আইএমডি)-কে জমা দিয়েছে। রিপোর্টে ৪ জুলাই থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত এই সময়ের মধ্যে প্রক্রিয়া চালানোর কথা বলা হয়েছে।
ক্লাউড সিডিং কি-
ক্লাউড সিডিং হল এক ধরনের আবহাওয়া পরিবর্তন, যার লক্ষ্য হল বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বা ধরন পরিবর্তন করা, শিলাবৃষ্টি প্রশমিত করা বা কুয়াশা ছড়িয়ে দেওয়া। স্বাভাবিক উদ্দেশ্য হল বৃষ্টি বা তুষার বাড়ানো, হয় তার নিজের স্বার্থে বা পরবর্তী দিনের মধ্যে বৃষ্টিপাত রোধ করা। এটি বিমান, রকেট বা মাটিতে মেশিন ব্যবহার করে করা যেতে পারে।
চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রভৃতি বিভিন্ন দেশে খরা মোকাবিলা, তুষারপাত বৃদ্ধি, শিলাবৃষ্টি কমানো, কুয়াশা পরিষ্কার করা বা বায়ুর মান উন্নত করার জন্য ক্লাউড সিডিং ব্যবহার করা হয়। এটি সাধারণত তখনই কাজ করে যখন আকাশে ইতিমধ্যেই মেঘ থাকে এবং প্রায় ৫-১৫ শতাংশ বৃষ্টিপাত বৃদ্ধি করতে পারে।
ক্লাউড সিডিং কী কার্যকর-
সাধারণভাবে কার্যকর বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা, কারণ দিল্লির মতো ঘনজনবতিপূর্ণ এলাকায় এই ক্লাউড সিডিং কতখানি কাজ করবে তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত নয় তাঁরা। তবে এটি সঠিক পরিস্থিতিতে বৃষ্টিপাত বা তুষারপাত প্রায় ৫-১৫ শতাংশ বৃদ্ধি করতে পারে। পাশাপাশি দিল্লির মতো ঘনবসতিপূর্ণ শহরে ক্লাউড সিডিং কতটা কাজ করবে, সেটাই দেখার। সিলভার আয়োডাইডের মতো রাসায়নিক পদার্থ পরিবেশের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
এদিকে ক্লাউড সিডিং নিয়ে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে। ২০২৩ সালে শীতের আগে পূর্ববর্তী আপ সরকার এই পরিকল্পনা কথা জানিয়েছিল। প্রতিকূল আবহাওয়ার সেটি বাস্তবায়িত হয়নি। গত বছরও উদ্যোগী ছিলেন কেজরিওয়াল। কিন্তু কেন্দ্র ছাড়পত্র দেয়নি। এদিকে দিল্লির বর্তমান পরিবেশমন্ত্রীর মন্তব্য, ওরা খালি বড় বড় কথা বলেছে। কাজের কাজ কিছু করেনি। আমরা মউ স্বাক্ষর করেছি আইআইটি কানপুরকে বরাদ্দ অর্থ দিয়েছি, আমাদের মন্ত্রিসভা থেকে প্রস্তাব পাশ করিয়েছি।
দেখুন আরও খবর-