কলকাতা: যাবজ্জীবন কারাদণ্ড (Life Imprisonment) আইন, মৃত্যুদণ্ড (Capital Punishment) তার ব্যতিক্রম। এই অভিমত জানিয়ে হোটেল রুমে মহিলা খুনের আসামির মৃত্যুদণ্ড রদ করল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)।
২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল। বিকেল তিনটে নাগাদ সমর পাত্র ও দুর্গারানি মাঝি বারুই বিকেল তিনটে নাগাদ বকখালির (Bakkhali) একটি বেসরকারি হোটেলে চেক-ইন করেন। পরের দিন সকাল ন’টা নাগাদ রুম বয় হোটেল ম্যানেজারকে জানায়, সমরদের ঘর ভিতর থেকে বন্ধ। পুলিশকে জানানো হলে সেই ঘরের দরজা ভাঙা হয়। বিছানায় দুর্গারানির মৃতদেহ উদ্ধার হয়। মৃতের গলায় শ্বাসরোধ করার চিহ্ন। সংলগ্ন বাথরুমের কাচের জানালা ভাঙা। সমরের হদিশ নেই।
ফ্রেজারগঞ্জ থানায় (Frazerganj PS) দাখিল হওয়া অভিযোগের সূত্রে ধৃত সমরের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ। ২০২৩ সালের ২২ মার্চ কাকদ্বীপ আদালতের দ্বিতীয় অতিরিক্ত দায়রা বিচারক সমরকে মৃত্যুদণ্ড দেন। সেই রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন জমা পড়ে হাইকোর্টে।
আরও পড়ুন: লিভ-ইন সম্পর্ক মধ্যবিত্ত মূল্যবোধের পরিপন্থী: এলাহাবাদ হাইকোর্ট
আবেদনকারীর দাবি, পেশ হওয়া প্রমাণ বিতর্কিত। সিসিটিভি ফুটেজ নেই। সেদিন রাতে দু’জনে মদ খাই। ঘুমিয়ে পড়ি। রাত তিনটে নাগাদ ঘুম ভাঙতে দেখি দুর্গারানি পাখা থেকে ঝুলছে। সেখান থেকে দেহ নামিয়ে বুঝতে পারি সে মৃত। ভয়ে পালিয়ে যাই। তাই দুর্গরানির মৃত্যু আত্মহত্যা, হত্যা নয়।
হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, মহিলাকে মৃত দেখে হোটেল কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশকে জানানো উচিত ছিল সমরের। দরজা ভিতর থেকে বন্ধ রেখে জানালা দিয়ে পালানো স্বাভাবিক নয়। ঘরে তৃতীয় কোনও ব্যক্তির অস্তিত্ব মেলেনি। শ্বাসরোধ করে হত্যার প্রমাণ পর্যাপ্ত। তাই হত্যার কারণে সাজার সিদ্ধান্ত সঠিক। কিন্তু ঘটনাটি বিরলের মধ্যে বিরলতম নয়। ৩৩ বছর বয়সি আসামি আগে থেকেই গাঁজা এবং মদে আসক্ত হলেও তাঁর মানসিক সমস্যা নেই। তাই সংশোধন অযোগ্য ব্যক্তি নয়। ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত এবং নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড নয়। আগেও ওই জুটি ওই হোটেলে গিয়েই থেকেছে। ফলে তাদের মধ্যে শত্রুতার তত্ত্ব খাটছে না। এছাড়া সমাজের জন্য সে আতঙ্ক নয়। এমন আসামির ক্ষেত্রে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডই যথেষ্ট বলে রায় বিচারপতি সব্বর রশিদির।
দেখুন অন্য খবর: