হলদিয়া: পুরী ও মাহেশের পরেই মহিষাদলের রথ (Mahishadal Rath Yatra 2025)। মহিষাদলে ২৪৯ বছরের রথযাত্রা (249 year Old Mahishadal Rath Yatra) উৎসব পালিত হচ্ছে। ভারতে একমাত্র কাঠের রথ হল মহিষাদলের প্রাচীন এই রথ। মহিষাদলের রথ মদনগোপাল জিউ-র রথ নামে খ্যাত। মদনগোপল জিউর সঙ্গে থাকেন জগন্নাথ ও রাজবাড়ির শালগ্রাম শিলা শ্রীধর জিউ। আজও রাজবাড়ির ঐতিহ্য মেনেই পালিত হয় রথযাত্রা (Rath Yatra 2025)। রাজপরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মিললে এই উৎসব শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, সামাজিক মিলনমেলাও বটে।
জগন্নাথের সঙ্গে পূজিত হন রাজপরিবারের গোপালজিউ। এখানে স্নানযাত্রার প্রচলন নেই। তার পরিবর্তে রথযাত্রার আগের দিন আয়োজিত হয় নেত্র উৎসব। এই উৎসবে রথের রশি বাঁধা হয়। এরপরেই রথযাত্রার সূচনা হয়। রাজ পরিবারের সদস্য হরপ্রসাদ গর্গ আজও প্রথা মেনে পালকিতে চড়ে রথের কাছে আসেন। রাজবাহাদুরের দেহরক্ষী ও রাজছত্রধারীও উপস্থিত থাকে। রাজা প্রথম রশিতে হাত দেন। এরপরেই গড়াতে শুরু করে রথের চাকা। এই রথের আরও এক বৈশিষ্ট্য হলো কাদা খেলা। রথযাত্রা দিন যে রাস্তা দিয়ে রথ যাবে তা জল দিয়ে ভেজাতে হয়। সেই কাদায় গড়াগড়ি খান অনেকে।
আরও পড়ুন: আজ রথ, এই মুহূর্তে দিঘায় কী অবস্থা? দেখুন সরাসরি
রথের ইতিহাস বহু প্রাচীন। এই রথযাত্রা শুরু হয়েছিল মহিষাদলে রাজবংশের পৃষ্ঠপোষকতায়। ১৭৭৬ সালে রানি জানোকি দেবি মিলনমেলার উদ্দেশ্যে এই রথ তৈরি করা শুরু করেন। কিন্তু তাঁর আমলে সেই রথ চলা শুরু হয়নি। ১৮০৫ সালে রাজবংশের মতিলাল পাঁড়ে (উপাধ্যায়) এর সময়ে সেই রথ চলা শুরু হয়। রথের নকশা ও গঠনশৈলীও এককথায় অনন্য। আগে সতেরো চূড়া রথ ছিল। এখন তেরো চূড়া রথ হয়েছে। তেরো চূড়া রথের ঢাকার উচ্চতা ৪ ফুট। বেধ ৮ ইঞ্চি ও পরিধি ১২ ফুট। লোহার পাত দিয়ে মোড়া মোট ৩৪টি চাকা আছে। রথের উচ্চতা প্রায় ৫৫ ফুট। তবে কলস ও ধ্বজা দিয়ে সাজানো হলে উচ্চতা ৭০ ফুটের বেশি হয়ে যায়। প্রথম রথ তৈরি করতে খরচ হয়েছিল প্রায় চৌষট্টি হাজার টাকা।
অন্য খবর দেখুন