নয়াদিল্লি: দিল্লির (Delhi) যমুনা (Yamuna) নদীর দূষণ সমস্যার কোনও কার্যকর সমাধান এখনও হয়নি। রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া লিখিত তথ্য অনুযায়ী, গত তিন বছরে ৫,৫৩৬ কোটি টাকা খরচ হলেও যমুনার জলের মানের উন্নতি হয়নি। কেন্দ্রের দাবি, প্রতিদিন ৪১৪ মিলিয়ন লিটার অপরিশোধিত বর্জ্য*সরাসরি নদীতে পড়ছে, যা দূষণের সবচেয়ে বড় কারণ (The Yamuna chokes as Delhi drains spew plastic)।
এছাড়া, শিল্পাঞ্চলে কমন এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (CETP) না থাকা, নতুন সিওয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (STP) নির্মাণে দেরি, এবং প্রতিদিন জমা হওয়া ৪,২২১ টন অপরিশোধিত কঠিন বর্জ্য দূষণ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে। দিল্লি দূষণ নিয়ন্ত্রণ কমিটির মতে, শহরের বিশাল অংশের বর্জ্য এখনও সঠিকভাবে পরিশোধিত হয় না।
আরও পড়ুন: SIR ইস্যুতে সংসদে আলোচনা, বাইরে মকর দ্বারে ইন্ডিয়া জোটের বিক্ষোভ
‘নমামি গঙ্গা’ প্রকল্পে ৬,৫৩৪ কোটি টাকার ৩৫টি প্রকল্প অনুমোদন হলেও, কেন্দ্রের বক্তব্য, দিল্লির বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মূল সমস্যা সমাধান না হলে যমুনাকে পরিষ্কার করা সম্ভব নয়। রাজনৈতিক মহলেও এই ইস্যুতে বিরোধ বাড়ছে। আপ ও বিজেপির দোষারোপের রাজনীতি চললেও যমুনার দূষণ কমার কোনও লক্ষণ এখনও দেখা যাচ্ছে না।
দূষণ বিশেষজ্ঞদের মতে, যমুনার অবস্থা উন্নত করতে হলে প্রথমেই স্যুয়ারেজ লাইনের সংস্কার, শিল্পাঞ্চলে বাধ্যতামূলক বর্জ্য শোধন ব্যবস্থা এবং কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কঠোরতা আনতে হবে। দিল্লির দ্রুত বাড়তে থাকা জনসংখ্যা এবং নির্মাণ বৃদ্ধি বর্জ্যের পরিমাণ বাড়িয়ে দিচ্ছে, কিন্তু সেই অনুপাতে পরিশোধন পরিকাঠামো তৈরি হয়নি। ফলে সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করলেও বাস্তবে নদীর উপর চাপ আরও বাড়ছে।
এদিকে পরিবেশবিদরা অভিযোগ তুলেছেন, সরকারি প্রকল্পে ব্যয়ের হিসেব থাকলেও মনিটরিংয়ের ক্ষেত্রে গুরুতর ত্রুটি রয়েছে। পরিশোধন প্ল্যান্টগুলির দৈনিক কার্যকারিতা, শিল্প ইউনিটগুলির বর্জ্য নিঃসরণ এবং ড্রেনের জলমান নিয়ে নিয়মিত নজরদারি দুর্বল। তাদের দাবি, কাগজে-কলমে প্রকল্প অনুমোদন থাকলেই হবে না—স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি রক্ষণাবেক্ষণ, কঠোর আইন প্রয়োগ এবং জনসচেতনতা বাড়ানো। যমুনার বর্তমান পরিস্থিতি দেখে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, মৌলিক পরিবর্তন না হলে আগামী বছরগুলিতেও দূষণ কমার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
দেখুন আরও খবর: