ঝাড়গ্রাম: হাতির (Elephant) আক্রমণে প্রাণহানির ঘটনা ঘটলে মৃতের পরিবার পাবে নির্দিষ্ট ক্ষতিপূরণ (Compensation)। সঙ্গে পরিবারের একজনের চাকরির ব্যবস্থা করবে সরকার। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এমন ঘোষণা রয়েছে। হাতির আক্রমণে এক বছর আগে প্রাণহানি হলেও এখনও সরকারি সহায়তা কিংবা চাকরি কিছুই পায়নি বলে অভিযোগ। ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইলের লাউদহ গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘোড়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা জিতুরাম হেমব্রমের পরিবার অসহায় হয়ে দিন কাটাচ্ছেন। অভিযোগ গত বছরের ১৮ মার্চ হাতির হানায় মারা গেলেও এখনো কোনও সরকারি সাহায্য আসেনি পরিবারের হাতে।তাই বাধ্য হয়ে একপ্রকার সহায় সম্বলহীন ভাবে জীবনযাপন করছে জিতুরামের পরিবার।
মৃত জিতুরামের প্রতিবেশি কিসুন বেরা বলেন, মৃতের স্ত্রী সুমি হেমব্রম একেবারে প্রান্তিক মানুষ। স্বামীর যাবতীয় কাগজপত্র বন দফতর সহ জেলা প্রশাসনের কাছে জমা করেছিলেন। তাঁকে সবরকমের সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হলেও তিনি আজ পর্যন্ত কিছুই পাননি। ফলে আর্থিক অনটনে দিন কাটছে তাঁর।
আরও পড়ুন: লাগাতার ১৫ দিন ধরে লোডশেডিং, প্রতিবাদে অবরোধ, ঘটনাস্থলে পুলিশ
হাতির হানায় কারও মৃত্য হলে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সুনির্দিষ্ট ক্ষতিপূরণের প্যাকেজ রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা অনুযায়ী মৃতের পরিবার আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি পরিবারের একজন চাকরি পাবেন। কিন্তু জিতুরাম হেমব্রমের পরিবার কিছুই পাননি। স্থানীয় শাসকদলের নেতা মথুর মাহাত এই বিষয়ে সহানুভূতি না দেখিয়ে উল্টে রাজনীতি দেখছেন। তাঁর দাবি, মৃতের পরিবারই নাকি প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। বরং লোকসভা ভোটের মুখে তৃণমূলকে বদনাম করার চেষ্টা করছেন।
বিরোধীদের প্রশ্ন, যেখানে রাজ্য সরকার নির্দিষ্ট ক্ষতিপূরণের প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সেখানে একবছর কেটে গেলেও কেন জিতুরাম হেমব্রমের পরিবার ক্ষতিপূরণ পাননি? তাঁর দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েই ভোট বৈতরণী পার করতে চান।
তবে খড়গপুর বন বিভাগের ডিএফও মনীশ যাদবের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তার কথায় হাতির আক্রমণে প্রাণহানি ঘটনা ঘটলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ক্ষতিপূরণ এর ব্যবস্থা হয়। তবে বন দফতর, প্রশাসন ও হাসপাতালের রিপোর্ট এক হলে ক্ষতিপূরণ মেলে। এক্ষেত্রে হয়তো কোনও অসুবিধা হয়েছে বলে তাঁর দাবি। পাশাপাশি তিনি জানান মাত্র চার মাস আগে তিনি দায়িত্ব নিয়ে এসেছেন। স্বাভাবিক ভাবেই সবটা নিয়ে তিনি অবগত নয় বলে দাবি করেন।
ঝাড়গ্রামে জিতুরাম হেমব্রমের মতো অনেক মানুষ আছেন যারা হাতির হানায় মৃত্যুবরণ করেছেন। বহু ক্ষেত্রেই তাঁদের পরিবার নির্দিষ্ট আর্থিক ক্ষতিপূরণ বা সরকারি চাকরি পাননি বলে বিরোধীদের অভিযোগ। লোকসভা ভোটের মুখে এই ইস্যু নিয়ে প্রচার শুরু করতেই শাসকদল অস্বস্তিতে পড়েছে। স্থানীয়দের দাবি, বন দফতর ও জেলা প্রশাসনের দড়ি টানাটানির ফলেই আটকে থাকে ক্ষতিপূরণ। ফলে চরম সংকটের মুখে পড়েন মৃতের পরিবারগুলি।
আরও খবর দেখুন