কলকাতা: কালীপুজোর (Kali Puja 2025) আগের দিনই ভূত চতুর্দশী (Bhoot Chatursadhi)। বাঙালির ঘরে ঘরে এদিন খাওয়া হয় চোদ্দরকম শাক, আর সন্ধ্যায় জ্বলে ওঠে ১৪ প্রদীপ। কিন্তু জানেন কি কেন এই রীতি? কী অর্থ লুকিয়ে আছে এই প্রাচীন প্রথার পেছনে?
পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী, ভূত চতুর্দশীর দিনেই নরকাসুর দানবকে ভগবান কৃষ্ণ ও সত্যভামা বধ করেছিলেন। আবার অন্য মতে, শিবভক্ত রাজা মহাবলি এদিন তাঁর অনুচর ভূতেদের সঙ্গে পৃথিবীতে আসেন মানুষের কাছ থেকে পুজো গ্রহণ করতে। সেই কারণেই অন্ধকার দূর করতে ও অশুভ শক্তি বিতাড়িত করতে ঘরে ঘরে ১৪ প্রদীপ জ্বালানোর প্রথা প্রচলিত হয়।
আরও পড়ুন: ফের বর্ষার চোখ রাঙানি! কালীপুজোয় কেমন থাকবে আবহাওয়া? শীত আসবে কবে?
বিশ্বাস করা হয়, পরিবারের ১৪ প্রজন্মের পূর্বপুরুষের আত্মা এদিন মর্ত্যে ফিরে আসেন তাঁদের প্রিয়জনদের দেখতে। সেই আত্মাদের পথ দেখানোর জন্য এবং দুষ্ট আত্মাদের দূরে রাখতেই বাড়ির চারপাশে, বিশেষত অন্ধকার কোণগুলোতে, ১৪টি প্রদীপ জ্বালানো হয়।
শুধু প্রদীপ নয়, ভূত চতুর্দশীর অন্যতম প্রধান প্রথা হলো চোদ্দ শাক খাওয়া। এই ১৪ রকম শাকের মধ্যে সাধারণত থাকে ওল, ভাটপাতা, কেঁউ, শাঞ্চে, কালকাসুন্দে, পলতা, বেতো, সরষে, নিম, গুলঞ্চ, শুশনি, হিলঞ্চ, জয়ন্তী ও শৌলফ।
এই রীতির পেছনে আছে এক বৈজ্ঞানিক কারণও। আশ্বিন ও কার্তিক মাসকে বলা হয় ‘যম দশ্টা কাল’—এই সময়ে ঋতু পরিবর্তনের কারণে ভাইরাল জ্বরসহ নানা অসুখ-বিসুখ দেখা দেয়। নানা গুণসম্পন্ন শাক শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, পোকামাকড়ের উপদ্রব থেকেও রক্ষা করে। দিনভর ১৪ শাক খেয়ে সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বালিয়ে পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে প্রার্থনা, এইভাবেই ভূত চতুর্দশীর দিন জেগে ওঠে বাঙালির ঘর, আলো আর সংস্কারের মেলবন্ধনে।
দেখুন আরও খবর: