কলকাতা: বাংলায় কংগ্রেসের ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রায় (Congress Bharat Jodo Nyay Yatra) ঝামেলার শঙ্কা করছেন খোদ দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে। তাই সেই যাত্রার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) চিঠি দিলেন কংগ্রেস সভাপতি। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, এই যাত্রা বাংলার কিছু প্রতিবেশী রাজ্যে দুষ্কৃতী হামলার শিকার হয়েছে। যাত্রীরা আক্রান্ত হয়েছেন। রাজনৈতিক মদতে এই সব ঘটনা ঘটেছে। এখন যাত্রা পশ্চিমবঙ্গে ঢুকেছে। এখানেও কিছু দুষ্কৃতী যাত্রার উপর হামলা করতে পারে বলে আমি জানতে পেরেছি। আমি নিশ্চিত নই যে, রাজ্য প্রশাসনের বদনাম করার জন্যই এই সব করা হবে কি না।
কংগ্রেস নেতা মুখ্যমন্ত্রীকে আরও লিখেছেন, এই যাত্রা যাতে বাংলায় মসৃণভাবে হয়, তার জন্য তিনি যেন যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। আমি জানি, আপনার সঙ্গে গান্ধী পরিবারের সম্পর্ক খুবই আন্তরিক। প্রসঙ্গত, দুই দিনের বিরতির পর আগামিকাল রবিবার থেকে আবার বাংলায় শুরু হচ্ছে রাহুলের ন্যায় যাত্রা। গত ২৫ জানুয়ারি অসম থেকে বক্সিরহাট হয়ে ওই যাত্রা কোচবিহারে ঢোকে। রাহুলের যাত্রাপথে বাংলায় দিদি একাই যথেষ্ট, অধীর চৌধুরী দূর হটো প্রভৃতি স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে স্থানীয়রা বিক্ষোভল দেখান। ওই সব স্লোগানের নীচে লেখা ছিল, কোচবিহারের নাগরিকবৃন্দ। কংগ্রেসের অভিযোগ, নাগরিকদের নাম করে বকলমে তৃণমূলই ওই বিক্ষোভ দেখিয়েছে। যদিও তৃণমূলের জেলা নেতা পার্থপ্রতিম রায়ের দাবি, ওই বিক্ষোভের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক ছিল না। স্থানীয় মানুষ তাদের ক্ষোভের থেকে কর্মসূচি নিয়েছিলেন।
এদিকে কংগ্রেস সভাপতি যখন তৃণমূলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীকে ন্যায় যাত্রার জন্য নিরাপত্তা চেয়ে চিঠি দিয়েছেন, তখন দলের মিডিয়া সেলের জাতীয় মুখপাত্র জয়রাম রমেশ ফের ন্যায় যাত্রায় মমতাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সম্ভব হলে মমতা যদি এই যাত্রায় উপস্থিত থাকেন, তবে আমরা গর্বিত হব। গত ২৪ জানুয়ারি মমতা বলেছিলেন, ওই ন্যায় যাত্রার কথা কংগ্রেস নেতারা আমাকে একবারও বলেননি। আমাদের রাজ্যে আসছে। অথচ আমাকে একবারও জানানো হয়নি। জয়রাম অবশ্য দাবি করেন, মমতাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে মেল করা হয়েছে। রাহুল গান্ধী, খাড়্গে তাঁকে ফোন করেছেন।
আরও পড়ুন: টাকার টোপ, বিধায়ক ভাঙাতে চাইছে বিজেপি, অভিযোগ অরবিন্দ কেজরিওয়ালের
জয়রাম বলেন, মমতা বারবার বলছেন, বিজেপিকে হারানোই তাঁর অগ্রাধিকার। কংগ্রেস এবং ইন্ডিয়া জোটও সেটাই চায়। এই অবস্থায় আমরা রবিবার থেকে আবার ন্যায় যাত্রা করছি বাংলায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাতে শামিল হলে আমরা খুশি হব। উল্লেখ্য, রাহুলের যাত্রা চলাকালীনই মমতা উত্তরবঙ্গে থাকবেন।
কলকাতায় তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক এবং মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, খাড়্গের চিঠি নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না। সেটা তাঁর আর মুখ্যমন্ত্রীর বিষয়। তবে এর থেকে কংগ্রেস সভাপতি যদি ইন্ডিয়া জোটকে (INDIA Alliance) শক্তিশালী করার দিকে বেশি জোর দেন, তাহলে ভালো হয়। একদিকে ভারত জোড়ো যাত্রা হচ্ছে, অন্যদিকে মিলিন্দ দেওরার মতো কংগ্রেস নেতারা বিজেপিতে চলে যাচ্ছেন। খাড়্গেজি সেদিকে নজর দিন। কুণাল বলেন, তার থেকেও বড় কথা, লোকসভার বিরোধী দলনেতা অধীর চৌধুরী (Adhir Chowdhury) রোজ বিজেপির দালালি করে চলেছেন। রোজ আমাদের নেত্রী সম্পর্কে যা খুশি তাই বলে চলেছেন। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব কি তার জন্য একবারও দুঃখপ্রকাশ করেছেন?
আরও অন্য খবর দেখুন