ওয়েবডেস্ক- কাশ্মীরের (Kashmir) পহেলগাম (pahalgam) কাণ্ডের পরের দিন, অর্থাৎ ২৩ এপ্রিল পাক রেঞ্জার্সের হাতে গ্রেফতার হন বিএসএফ জওয়ান পূর্ণমকুমার সাউ (BSF jawan Purnam Kumar Shaw) । ২২ দিনের মাথায় ভারতের হাতে তাঁকে হস্তান্তর করল পাক সেনা (pakistan) । আজ সকাল সাড়ে ১০ টা নাগাদ আটারি ওয়াঘা সীমান্ত (Attari Wagah Border) পার করেন তিনি। পূর্ণম এই বাংলার রিষড়ার যুবক। পূর্ণমের দেশের ফেরার খবরে রিষড়া বাড়িতে খুশির হাওয়া।
পূর্ণমের ফিরে আসাতে খুশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) । কারণ পূর্ণমকে ফেরানোর দাবিতে বার বার ফ্ল্যাগ মিটিং হয়েছে, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় স্বামীকে ফিরিতে আনতে ভাই, বোন ও নিজের আট বছরের ছেলেকে নিয়ে পাঠানকোটে গিয়েছিলেন রজনী।
কিন্তু কোনও আশার আলো পাননি রজনী, ফলে খালি হাতে ফিরতে হয় তাঁকে। রজনীর শেষ আশা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইমতো গত রবিবার মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হন তিনি। ফোনে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে ভরসা দেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার তিনদিনের মাথাতে পাক সেনার হাত থেকে মুক্তি পেলেন বিএসএফ জওয়ান পূর্ণমকুমার সাউ। আজও নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করার সময় মুখ্যমন্ত্রী জানান, আমরা পূর্ণমের পরিবারে পাশে ছিলাম। রাজ্যে থেকে পূর্ণমকে ফেরানোর জন্য অনেক চেষ্টা করা হয়েছিল। বিএসএফ কর্তারা কথা বলেছিলেন।
আরও পড়ুন- দেশে ফিরলেন BSF জওয়ান পূর্ণম কুমার সাউ
পূর্ণমের মুক্তির খবর পাওয়া মাত্রই জওয়ানের স্ত্রীকে ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দীর্ঘক্ষণ কথা হয় তাদের। রজনীকে ফোনে মুখ্যমন্ত্রী জিজ্ঞাসা করেন, আমার ভাই কেমন আছে? রজনী জানান, হ্যাঁ উনি চলে এসেছেন। মুখ্যমন্ত্রী সবাইকে শুভকামনা জানিয়ে বলেন, আপনার সবাই ভালো থাকুন। সন্তান পরিবার নিয়ে সবাই সুখে থাকুন, হাসি খুশি থাকুন। রজনী সংবাদমাধ্যমকে জানান, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সকালে কথা হয়েছে। তিনি আমাকে বলেছেন, দেশে ভাই চলে এসেছেন চিন্তা করো না। আমাকে বলেন, আপনি আমার বোনের মতো কোন চিন্তা করবেন না।
রজনী আরও জানান, মুখ্যমন্ত্রী আমাকে আগেই বলেছিলেন, আপনি অন্তঃসত্তা কোথাও যেতে হবে না । আমি এক সপ্তাহর মধ্যেই সব ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। সবার চেষ্টাতে আমার স্বামী ফিরেছেন এসেছেন। দেশের সব মানুষ আমার পাশে ছিলেন। খুব আনন্দের বিষয় আমার কাছে। শারীরিক দিন আমার স্বামী সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন। তার সঙ্গে আমি ভিডিও কলে কথাও বলেছি। এই ২১টা দিন খুব চিন্তার মধ্যে কাটিয়েছি।
ছেলের মুক্তিতে খুশিতে আত্মহারা পূর্ণম কুমারের বাবা ভোলানাথ সাউ। তিনি জানান, দেশে ফিরেছেন তার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। আমি চাই, দেশ রক্ষার্থে আমার ছেলে ফের সীমান্তে গিয়ে তার কাজ করুক।
উল্লেখ্য, বিএসএফ জওয়ান পূর্ণমকুমার সাউ পঞ্জাবের ফিরোজপুর সেক্টরে মোতায়েন ছিলেন। গত ২৩ এপ্রিল ফিরোজপুর বর্ডারে ডিউটি করার সময় পাক রেঞ্জারের হাতে বন্দি হন। পূর্ণম সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ২৪ নম্বর ব্যাটালিয়নের কনস্টেবল। শারীরিক ক্লান্তির কারণে তিনি পাক সীমানায় ঢুকে পড়েন। তখনই তাকে আটক করে পাক রেঞ্জার্স। স্বামীকে ফেরাতে হিমাচল প্রদেশের কাংড়ায় অবস্থিত বিএসএফের সদর দফতরেও গিয়েছিলেন স্ত্রী রজনী।
দেখুন ভিডিও-