ওয়েব ডেস্ক: ছোট থেকেই কুলোপাড়াতে মেধাবী ছাত্রী হিসাবে পরিচিত ছিল থৈবি। এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল সে। আর স্কুলের মধ্যে সবার সেরা ফলাফল করে। কিন্তু এত কিছুর পরেও কাঁদছে স্কুল থেকে পাড়া-প্রতিবেশী। ফল বেরোনোর পরেও আজ আর নেই থৈবি। হঠাতই পরীক্ষার কিছুদিন আগে শরীরে বাসা বাঁধে জন্ডিস রোগ। আর তার ফলেই শরীর খারাপ নিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল আসানসোল উমারানি গড়াই স্কুলের সব সময়ের টপার থৈবি মুখোপাধ্যায়। এবারও মাধ্যমিকেও স্কুলে টপার রইল থৈবি (WBBSE Madhyamik result 2025)।
কিন্তু পরীক্ষার আগে জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ছিল সে। অসহ্য পেটে যন্ত্রনা নিয়ে পরীক্ষা দিলেও ফলাফল আর দেখতে পারল না ছোট্ট মেয়েটি। ১৬ এপ্রিল লিভার জন্ডিসে মারা যায় থৈবি। শুধমাত্র সুস্থ ছিল বাংলা পরীক্ষার দিন। আর বাংলাতেই তার প্রাপ্ত নম্বর ৯৯। তারপর থেকেই নম্বর কিছুটা কমতে থাকে। অঙ্ক ৯৮, ফিজিক্যাল সায়েন্স ৯৭, লাইফ সায়েন্স ৯৮, ইতিহাস ৯৫, ভূগোল ৯৫। থৈবির এতটাই মেধা ছিল। সুস্থ অবস্থায় পরীক্ষা দিতে পারলে হয়ত রাজ্যে টপ হতে পারত। এমনটাই দাবি স্কুলের শিক্ষিকাদের। পড়াশুনার বাইরে আঁকা, গান, এক্সট্রা ক্যারিকুলারি সবেতেই প্রথম সে।
আরও পড়ুন: মাধ্যমিকে দশম, কী বললেন জেনে নিন
থৈবির বাবা বিবেকানন্দ মুখোপাধ্যায় পেশায় হোমিওপ্যাথি ডাক্তার। মা পিউ মুখোপাধ্যায় গৃহবধূ। মাধ্যমিক পরীক্ষা আগে তাঁর লিভার জন্ডিস ধরা পড়ে। চিকিৎসার জন্য চেন্নাই, ভেলোর সর্বত্র ছুটে যায় বাবা-মা। লিভার ট্রান্সফার করার জন্য ১ কোটি খরচ। এগিয়ে আসে স্কুল, শহরবাসী। চিকিৎসার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেদনে সাড়া দেয় শহরবাসী। ৪৫ লাখ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার খরচ যোগানো হয়। তবু বাঁচানো যায়নি থৈবিকে।
স্কুল থেকে শুরু করে পাড়া-প্রতিবেশী প্রত্যেকেই আশা করেছিল পশ্চিমবঙ্গে মাধ্যমিক পরীক্ষায় এক থেকে দশের মধ্যে জায়গা করে নেবে থৈবি। কিন্তু অসুস্থ অবস্থায় পরীক্ষা দেওয়াই এক থেকে দশের মধ্যে জায়গা না করতে পারলেও স্কুলে সর্বোচ্চ নম্বর সে পেয়েছে। জেলায় ছাত্রীদের মধ্যে টপ নম্বর। মাধ্যমিকের রেজাল্টের দিনের ধাক্কা ও অস্বস্তি কাটাতে কয়েকদিনের জন্য থৈবির মা বাবা চলে যান আসানসোলের ইসমাইলের ঘর ছেড়ে। বাড়িতে থৈবির বৃদ্ধ দাদু ও ঠাকুমা। ছবি বুকে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন তাঁরা। একটি স্বপ্নের অপমৃত্যু ঘটল। তাই রেজাল্ট আনতে গেলেন না তারা।
দেখুন আরও খবর: