কলকাতা: বড়বাজারের হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের পরিবারের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বৃহস্পতিবার দিঘা থেকে কল কাতায় ফিরেই মেছুয়া বাজারের দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান মমতা (Mamata Visits Burrabazar Hotel)। ঘটনাস্থল ঘুরে দেখার পর মুখ্যমন্ত্রী বলেন,’আগুন লাগার খবর পাওয়ার পর সারা রাত তদারকি করেছি। এই হোটেলটা ১৯৮৯ সাল থেকে চলছে, বহু পুরনো। বড়বাজার, জোড়াসাঁকো এলাকায় অনেক বাড়িরই বিপজ্জনক বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। সেই সব বাড়িতে প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই সেখানে থাকছেন বাসিন্দারা। আপনাদের বুঝতে হবে এটি জীবন-মরণের প্রশ্ন। তিনি বললেন, ‘এসব বলার জন্য যদি ভোট না দেন, তো না দেবেন, ভোটের জন্য বলছি না, জীবনের জন্য বলছি। মমতা বলেছেন, ‘কেউ কেউ ব্যবসায়িক স্বার্থে আগুন লাগান, জীবন বিপন্ন করে আগুন নিয়ে খেলবেন না।’
অগ্নিকাণ্ডের প্রসঙ্গে ক্ষোভপ্রকাশ করে মমতা বলেন, এই হোটেলটা বহুদিনের পুরনো। বিল্ডিংয়ের অবস্থা খুব খারাপ ছিল। অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থাও ছিল না। ওই হোটেলে ধোঁয়া নির্গমনেরও ব্যবস্থা ছিল না। লেএই ধরনের বিপজ্জনক বাড়ি বা হোটেল চিহ্নিত করতে বলব। বড়বাজারে অগ্নিকাণ্ডের তদন্ত পুরসভা আলাদা করে করবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। হোটেলের মধ্যে দোকান করা যাবে না এবং প্লাস্টিক, রাসায়নিক মজুত করা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ১৫ দিনের মধ্যে পুরনো বাড়ি পর্যবেক্ষণ করে ব্যবস্থা নিতে হবে বলে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এই ধরণের বেআইনি হোটেলে পুলিশকে সারপ্রাইজ ভিজিট করতে বলব। কলকাতা পুলিশ, ফায়ার ব্রিগেডের সঙ্গে কমিটি গঠন করে ভেঙে যাওয়া বাড়ি পুর্নগঠন করা হবে। এই ধরনের ঘটনাগুলিতে কোনও জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসনের কেউ সাহায্য করে থাকলে, তাঁদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। যে রাজনৈতিক দলেরই হোন, কাউকে রেয়াত করা হবে না। বেনিয়মে কেউ মদত দিলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেই জানালেন মমতা। তিনি বলেন, এই সব ব্যাপারে আমি খুবই ‘রাফ অ্যান্ড টাফ’।
আরও পড়ুন: মেছুয়া অগ্নিকাণ্ডে বিরাট মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রীর
শহরের বিপজ্জনক নিয়ে মমতা বলেন, কিছু কিছু বাড়ি দেখছি ছাদ ভেঙে পড়ছে। বহুতলেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। কলকাতার বহু বাড়িকে বিপজ্জনক ঘোষণা করেছে পুরসভা। পুলিশ, কর্পোরেশনকে বলব বৈঠক করে নিজেরা মেরামতির ব্যবস্থা করতে। অনেক বাড়িতে মালিকানা সংক্রান্ত জটিলতায় বাড়ির মেরামত হয়নি। প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই সেখানে থাকছেন বাসিন্দারা। আপনাদের বুঝতে হবে এটি জীবন-মরণের প্রশ্ন। যদি ভাল ভাবে জীবন কাটাতে চান, তা হলে যাঁরা এখানে বাস করেন, তাঁদের সঙ্গে পুলিশ-পুরসভা কথা বলবে। অনেক বাড়িতে ১০টি করে পরিবার থাকেন। মানুষের জীবনের নিরাপত্তা সবার আগে। তাঁদের সকলকে বসে আলোচনার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।
দেখুন ভিডিও