কলকাতা: বড়বাজারের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড (Fire Broke Out) যেন শহরের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এই বিপর্যয়ের ফলে। কলকাতার মাঝেরহাট অঞ্চলের মেছুয়া ফলপট্টিতে (Mechua Falpatti Fire) ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত অন্তত ১৪ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। গতকাল গভীর রাতে ধোঁয়ার চাদরে ঢেকে যাওয়া হোটেলটি কার্যত এক মরণফাঁদে পরিণত হয়েছিল।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ হঠাৎই আগুন লাগে ফলপট্টির ওই বহুতল হোটেলে। সঙ্গে সঙ্গে ছুটে আসে দমকলের একাধিক ইঞ্জিন। মোট ১০টি ইঞ্জিন প্রায় ৮ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনলেও, ধোঁয়ার তীব্রতা এতটাই ছিল যে হোটেলের ভেতরে ঢোকা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, হোটেলটি যেন এক ‘গ্যাসচেম্বারে’ পরিণত হয়েছিল।
আরও পড়ুন: হোটেলে আগুনের জেরে আটক বহু! চলছে উদ্ধার কাজ
ধোঁয়ার ঘনঘটার মধ্যে অনেকেই প্রাণ বাঁচাতে জানলা দিয়ে বাইরে বেরোনোর চেষ্টা করেন। আনন্দ পাসোয়ান নামে এক ব্যক্তি আগুন থেকে বাঁচতে উপর থেকে ঝাঁপ দেন। তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হলেও, চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। হোটেলে থাকা অনেকেই ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন বলে অনুমান। চার ও পাঁচতলার জানলা ভেঙে মই দিয়ে ভিতরে ঢুকে উদ্ধার করেন দমকল কর্মীরা। আতঙ্কে হোটেলের কার্নিশে চলে আসেন অনেকে। তাঁদেরও উদ্ধার করা হয়।
জানা গিয়েছে, হোটেলটিতে প্রায় ৪৭টি রুম ছিল। অধিকাংশ রুমেই ছিলেন রাজ্য ও ভিন্রাজ্য থেকে আসা অতিথিরা। ঘটনাস্থল মধ্য কলকাতার একটি ঘিঞ্জি অঞ্চল হওয়ায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও তৈরি হয়েছিল। ঘটনার গুরুত্ব বুঝে রাতভর ঘটনাস্থলে ছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম, নগরপাল মনোজ বর্মা এবং রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা।
কলকাতার নগরপাল মনোজ বর্মা জানান, ঘটনার তদন্তে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে। ফরেন্সিক দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘটনার প্রকৃত কারণ খতিয়ে দেখবে। এদিকে এখনও চলছে উদ্ধারকাজ। ধোঁয়া পুরোপুরি কাটেনি। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দেখুন আরও খবর: