ওয়েব ডেস্ক: এও এক দুঃসাহসিক অভিযান। এও এক ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই। আকাশে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে ইউরেশিয়ান গ্রিফন প্রজাতির একটি শকুন (Vulture)। শরীরে জলের পরিমাণ কমে যাওয়ায় ডানা ঝটকানোর আর ক্ষমতা ছিল না তার। শেষমেষ বাধ্য হয়ে নেমে পড়ে মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) সাতনায়। সেখানেই বনকর্মীদের শুশ্রুষায় সুস্থ হয়ে ফের ডানা মেলেছে নীল দিগন্তে।
এই কৃচ্ছসাধন ফি বছরের। প্রতি বারই প্রাণের দায়ে শীত পড়ার আগে ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ার বাসা ছেড়ে পাড়ি দেয় স্পেন, তুর্কি ও কাজাখাস্তানের উদ্দেশে। খুব কমই ভিন পথে পাড়ি দিয়ে উত্তর ও মধ্য ভারতের আকাশে চক্কর কাটে। ইউরেশিয়ান গ্রিফন প্রজাতির শকুনটিও ছিল সেই দলে।
আরও পড়ুন: “অনিচ্ছুক মহিলার স্ত/ন ধরলে…,” এলাহাবাদ হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের
কিন্তু মধ্যপ্রদেশ পৌঁছনোর পরেপরেই অসুস্থ হয়ে দলছুট হয়ে পড়ে শকুনটি। শরীরে জলের পরিমাণ কমে যাওয়ায় ঝিমিয়ে বসে পড়ে মাটিতে। প্রাণ বাঁচে সাতনার কিছু মানুষের জন্য। তারা তড়িঘড়ি খবর পাঠান বন দফতরে। বনকর্মীরা শকুনটিকে নিয়ে যান ভোপাল শকুন সংরক্ষণ কেন্দ্রে। সেখানেই শুরু হয় সেবা-শুশ্রুষা। কিন্তু অচেনা পরিবেশে সঙ্গীহীন পাখিটি খাওয়া বন্ধ করে দিলে বনবিহার ন্যাশনাল পার্কে আরও অনেক শকুনের মাঝে স্থানান্তরিত করা হয় বিদেশি পাখিটিকে। আর তারপরেই স্বাভাবিক জীবন ফিরে পায় সে। সকলের সঙ্গে মিশে আবার ফিরে আসে জীবনীশক্তি।
এমনিতেই বিশ্ব জুড়ে কমছে শকুনের সংখ্যা। প্রাচীন প্রজাতির পাখি বাঁচাতে ভারতেরও বিভিন্ন রাজ্যে তৈরি হয়েছে শকুন প্রজনন ও সংরক্ষণ কেন্দ্র। পশ্চিমবঙ্গের রাজাভাতখাওয়াতেও রয়েছে এমনই সংরক্ষণ কেন্দ্র। শেষমেশ মাস দুয়েকের শুশ্রুষায় শরীরে বল ফিরে পায় সে। স্বপ্ন দেখে আবার আকাশে ডানা মেলার। সেই স্বপ্ন সফল করতে উদ্যোগী হয় মধ্যপ্রদেশ বন দফতরও। সংরক্ষণ কেন্দ্রের বাইরে এনে উড়িয়ে দেওয়া হয় শকুনটিকে। ধীরে ধীরে দৃষ্টির বাইরে চলে যায় সে। তবুও অবুঝ মন স্নেহের কাঙাল। তাই ওড়ানোর আগে তার শরীরে লাগিয়ে দেওয়া হয় জিপিএস ট্র্যাকার। সেই ট্র্যাকারই জানাচ্ছে, গত মাসে তাজিকিস্তান সীমান্ত পেরিয়ে গিয়েছে ইউরেশিয়ান গ্রিফন প্রজাতির শকুনটি। বাসার খোঁজে। সঙ্গীর সন্ধানে।
দেখুন আরও খবর: