Placeholder canvas
কলকাতা বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫ |
K:T:V Clock
Fourth Pillar | এই মোদি যোগী শাহের দল আসলে হিন্দুই নন
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published By: 
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫, ০৩:২৫:১৬ পিএম
  • / ৩৪ বার খবরটি পড়া হয়েছে

কালিদাসের শ্রেষ্ঠ রচনা অভিজ্ঞানম শকুন্তলম-এ কণ্ব মুনির আশ্রমের বর্ণনা আছে। সেই আখ্যান পরে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর লিখেছেন, আবার অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরও তাঁর শকুন্তলা বইতে লিখেছেন। আসুন অবন ঠাকুরের বই থেকে সেই আশ্রমের বর্ণনা পড়া যাক, আর বইয়ের সঙ্গেই আছে তাঁরই আঁকা সাদা-কালো কিছু ছবি।

এক নিবিড় অরণ্য ছিল, তাতে ছিল বড় বড় বট, সারি সারি তাল তমাল, পাহাড় পর্বত আর ছিল ছোট নদী মালিনী। মালিনীর জল বড় স্থির-আয়নার মতো। তাতে গাছের ছায়া, নীল আকাশের ছায়া, রাঙা মেঘের ছায়া, সকলই দেখা যেতো। আর দেখা যেত গাছের তলায় কতগুলি কুটিরের ছায়া। নদীতীরে যে নিবিড় বন ছিল, তাতে অনেক জীবজন্তু ছিল। কত হাঁস, কত বক, সারাদিন খালের ধারে বিলের জলে ঘুরে বেড়াত, কত ছোট ছোট পাখি, টিঁয়াপাখির ঝাঁক গাছের ডালে ডালে গান গাইত, বর্ষায় ময়ূর নাচত।

ওই যে কুটির, ওগুলোই ছিল কণ্বমুনির আশ্রম। সেখানেই আশ্রমিকদের সামগান, যজ্ঞ, উপাসনা এবং শিক্ষা। সেখানেই আসবেন রাজা দুষ্মন্ত, সেখানেই দেখা হবে কণ্বমুনির পালিকা কন্যা শকুন্তলার সঙ্গে। সেটাই অভিজ্ঞানম শকুন্তলমের কাহিনির শুরুয়াত। তো রাজা দুষ্মন্ত আসছেন কেন? অভিজ্ঞানম শকুন্তলম বলছে উনি জানতেনই না যে এখানে কণ্ব মুনির আশ্রম ছিল। উনি তো এসেছিলেন মৃগয়ায়। একবার ভাবুন কণ্বের মতো মহর্ষির আশ্রম সে দেশের রাজা জানতেন না, কারণ কণ্বও চাইতেন না যে রাজা বা সাধারণ মানুষ তাঁর আশ্রমে হরবখত আসুক, এতে তাঁর সাধনা, শিক্ষাদানের ক্ষতি হবে বলেই তিনি মনে করতেন। মানে রাজা মানেই সব কিছুর নিয়ন্ত্রক নয়, রাজা মানেই দেশের মালিক নয়। আমাদের দেশের শিক্ষা এবং ধর্মচর্চা ছিল শহর নাগরিক জীবন থেকে বহু দূরে। রাজার মহলে যা হত তা ছিল নিয়ম মাফিক বা প্রজাকল্যাণের জন্য বা রাজার কিছু ইচ্ছাপূরণের জন্য যজ্ঞ। রাজমহলে নিজের ব্যবহারের জন্য ছোট মন্দির আর যজ্ঞের জন্য যজ্ঞসভা থাকত। মুনি ঋষিরা এসে সেই যজ্ঞ অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ করে চলে যেতেন। তপস্যা সাধনার ক্ষেত্র তৈরি হত লোকালয় থেকে বহু দূরে। পাহাড় পর্বতের গুহায়, গহন অরণ্যে। কেদারনাথ, বদ্রীনাথ, কামাখ্যা, সোমনাথ থেকে শুরু করে ভারতবর্ষের প্রত্যেকটা বড় মন্দির ছিল লোকালয় থেকে বহু দূরে। সেগুলো ছিল মুনি ঋষিদের সাধনাক্ষেত্র। বহু পরে মানুষ একটার পর একটা মন্দির আবিষ্কার করেছে, কোনওটা নির্জন সৈকতে, কোনওটা গভীর অরণ্যে বা সুউচ্চ পর্বত শিখরের গুহায়। প্রাচীন মন্দিরের একটা বড় মন্দির, সে হিন্দু বৌদ্ধ বা জৈন, কোনওটাই লোকালয়ের মধ্যে নয়।

প্রাচীন নগর জীবনের পুংখানুপুংখ ছবি পাওয়া যায় সংস্কৃত সাহিত্যে। সেখানেও দেখা যাবে ধর্ম গৃহে পালন হচ্ছে, যজ্ঞ রাজানুকুল্যে রাজসভায় আর তপস্যা, ধর্মাচরণ, ধর্মশিক্ষা পালন হচ্ছে আশ্রমে, নগর সভ্যতা থেকে বহু দূরে। ৫৬টা ক্যামেরা নিয়ে সাধনার ঢপবাজি নয়, আমাদের দেশের সাধকেরা একান্তে বসে জ্ঞানচর্চা করতেন। আসুন আমাদের দেশের কিছু সাধক, হিন্দু সাধুসন্তদের সাধনভূমির খোঁজ করা যাক। হিন্দু নবজাগরণের চূড়ামণি বিবেকানন্দ দিয়েই শুরু হোক। বিবেকানন্দের তপস্যার প্রথম বর্ণনা পাই বরানগর বাটীতে, রামকৃষ্ণের মৃত্যুর পর সেখানে কিছু গুরুভাইদের নিয়ে এক বাড়ি ভাড়া নেওয়া হয়েছিল, সেখানে চালহীন চুলোহীন কিছু সাধু সকাল থেকে সন্ধ্যে তপস্যা, ধ্যান সাধনায় ব্যস্ত ছিল, কেউই সে খবর রাখতেন না। তাদের দিন গুজরান হতো মাধুকরীতে, দরজায় দরজায় ভিক্ষা করে। এরপরে তাঁর তপস্যার দীর্ঘতম দিনগুলো কেটেছিল হিমালয়, মাউন্ট আবু আর কন্যাকুমারিকা। হিমালয়ে তিনি আলমোড়াতে দীর্ঘদিন সাধনা করেছেন, সেই সময় আলমোড়া আজকের আলমোড়া নয়, ১৮৯০ সালে পিথোড়াগড় আজকের মতো ছিল না। সেখানে নির্জন জায়গায় তিনি তপস্যা করেছেন মাসের পর মাস। ১৮৯১-তে তিনি মাউন্ট আবুর ওপর নক্কি লেকের চম্পা গুহায় ৩ মাস তপস্যা করেছেন। ১৮৯১ তে নক্কি লেক ছিল এক দুর্গম জায়গা।

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | ২৬/১১-র উগ্রপন্থী তাহাউর রানাকে কি এবারে ফাঁসিতে ঝুলতে হবে?

এরপর আসুন সেই বিখ্যাত তপস্যার জায়গাতে যা আজ বিবেকানন্দ রক নামে পরিচিত। বেঙ্গালুরুতে স্বামীজি মহীশূর রাজ্যের দেওয়ান স্যার কে শেষাদ্রী আইয়ারের সঙ্গে পরিচিত হন এবং পরে তিনি মহীশূরের মহারাজা শ্রী চামারাজেন্দ্র ওয়াদিয়ারের অতিথি হিসেবে রাজপ্রাসাদে অবস্থান করেন। বিবরণ অনুসারে স্যার শেষাদ্রী স্বামীজির পাণ্ডিত্য বিষয়ে মন্তব্য করেন, “এক আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব এবং ঐশ্বরিক শক্তি যা তার দেশের ইতিহাসে তাদের চিহ্ন রেখে যেতে নিয়তি নির্ধারিত ছিল।” মহারাজা স্বামীজিকে কোচিনের দেওয়ানের কাছে পরিচয় করিয়ে দিতে একটি পত্র এবং একটি রেলওয়ে টিকিট দেন। ভারতের বেঙ্গালুরু থেকে তিনি ভ্রমণ করেন ত্রিচূড়, কোদুনগ্যালোর, এর্নাকুলাম। এর্নাকুলামে ১৮৯২ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বরের প্রথমভাগে তিনি নারায়ণ গুরুর সমসাময়িক ছত্তাম্পি স্বামীকালের দেখা পান।[ এর্নাকুলাম থেকে তিনি ভ্রমণ করেন ত্রিবান্দ্রম, নাগেরকৈল এবং ১৮৯২ খ্রিষ্টাব্দের বড়দিনের প্রাক্কালে পায়ে হেঁটে কন্যাকুমারী পৌঁছন। বিবরণ অনুসারে স্বামীজি “ভারতীয় পাহাড়ের শেষ প্রান্তে” তিন দিন ধরে ধ্যান করেন যা পরে বিবেকানন্দ রক মেমোরিয়াল হিসেবে খ্যাতি লাভ করে। কন্যাকুমারীতে বিবেকানন্দ “এক ভারতের স্বপ্ন” দেখেন, যাকে সচরাচর বলা হয়ে থাকে “১৮৯২ খ্রিস্টাব্দের কন্যাকুমারী সঙ্কল্প”। তিনি লিখেছিলেন,

“ক্যামোরিন অন্তরীপে মা কুমারীর মন্দিরে বসে ভারতীয় পাহাড়ের শেষ প্রান্তে বসে – আমি এক পরিকল্পনা করি: আমরা এতগুলো সন্ন্যাসী ঘুরে বেড়াচ্ছি এবং মানুষকে অধিবিদ্যা/দর্শনশাস্ত্র শেখাচ্ছি – এ সব কিছুই পাগলামি। আমাদের গুরুদেব কী বলতেন না, ‘খালি পেট ধর্মের জন্য ভালো নয়?’ জাতি হিসেবে আমরা আমাদের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য হারিয়েছি এবং এটাই ভারতের সকল অনিষ্টের কারণ। আমাদের জনসাধারণকে জাগাতে হবে।” যারা এখন সেই বিবেকানন্দ রকে গেছেন, তাঁরা কিছুটা হলেও বুঝতে পারবেন ১৮৯২তে কতটা দূর্গম ছিল এই জায়গা। এবং এই দূর্গম জায়গাতে বসে তিনি কিসের চিন্তা করছেন? দেশের। কালীঘাটের মন্দিরে বসে করতে পারতেন, নিদেন পক্ষে দক্ষিণেশ্বরে বসে। করেননি। কালীঘাটের মন্দিরের কথা যখন এল তখন বলে নিই, এ মন্দিরও কিন্তু লোকালয়ে তৈরি হয়নি, তখন চিৎপুর থেকে ঠনঠনিয়া হয়ে চৌরঙ্গি হয়ে কালীঘাট হয়ে বড়িশা যাওয়ার রাস্তা ছিল ঘন জঙ্গলের মধ্য দিয়ে, সেখানেই আদিগঙ্গার উপর নির্জন জায়গায় তৈরি হয়েছিল কালীঘাটের মন্দির। সপ্তদশ শতাব্দীর দ্বিতীয় ভাগে অন্ধ্রপ্রদেশের ভিজয়নগরমের নরসিংহ রাওয়ের পুত্র ছিলেন শিবরাম। তরুণ বয়সেই তিনি গৃহত্যাগ করেন, পুষ্করে গিয়ে সাধনা করতে থাকেন, নাম হয় গণপতি সরস্বতী। কিন্তু স্থানীয় মানুষজন এই তেলঙ্গানা থেকে আসা সন্ন্যাসীকে ত্রৈলঙ্গস্বামী বলে ডাকতে থাকেন। এর পর তিনি চলে যান নেপালের গভীর অরণ্যে সেখানে নাকি ১০ বছর সাধনা করেন, লোকচক্ষুর আড়ালে। স্বামী ত্রৈলঙ্গস্বামী ভারতবর্ষের সাধকদের মধ্যে অন্যতম। উত্তরাখণ্ডের বরফ ঢাকা প্রান্তরে এক নাগাড়ে সাধনা করেছিলেন রামদাস কাঠিয়াবাবা, ভারতের সাধকদের মধ্যে তিনি প্রসিদ্ধ নাম।

পূর্ব পাঞ্জাবের এক গ্রাম থেকে কিশোর রামদাস সংসার ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন ভগবানকে খুঁজতে। হিমালয়ের প্রান্তে পেয়ে যান তাঁর গুরুদেবকে, ওই ঠান্ডায় তাকে দেওয়া হয়েছিল তিন হাত লম্বা এক কাপড়, আর কোমরে বেঁধে দেওয়া হয়েছিল একটা লাঠি, যার ফলে শোবারও যো ছিল না। বরফ ঢাকা গুহায় বরাদ্দ ছিল একটা ধুনি। সেখানেই তিনি সাধনা করেন ১৫ বছর লোকচক্ষুর আড়ালে। নেমে আসেন সমতলে কিন্তু কোমরের কাঠ খোলেননি, মানুষের মঙ্গলকামনায় কাজ করে গেছেন সারাজীবন। এখনও উত্তরাখণ্ডের দুর্গম জায়গায় কাঠিয়াবাবার আশ্রম আছে যেখানে বিপদে পড়লে রাতের আশ্রয়, খাবার পাওয়া যায় বিনামূল্যে। উজ্জ্বয়িনীর এক ব্রাহ্মণের ঘরে জন্ম নিয়েছিল পীতাম্বর। ন’ বছর বয়সে মাকে ছেড়ে সংসার ছেড়ে তিনি ধর্মসাধনায় চলে যান দেওঘরের তপোবনে। উনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় ভাগের কথা। এই পীতাম্বর এক নাগাড়ে ওই তপোবনে এক গুহায় ধ্যান করেছেন, সিদ্ধি লাভ করেছেন। তাঁর নাম হয়েছে বালানন্দ ব্রহ্মচারী। আজ ওনার নামে হাসপাতাল স্কুল কলেজ হয়েছে, দেশের বিভিন্ন জায়গায়। পেরামবুদুরের পণ্ডিত আসুরি কেশবাচার্য দাক্ষিণাত্যের পার্থসারথি মন্দিরে গিয়েছিলেন পুত্র সন্তানের কামনায়। কিছুদিন পরে পুত্রসন্তান হলে তাঁর নাম রাখা হয় রামানুজ, যিনি বড় হওয়ার পরে গোটা দেশ তাকে জানে আচার্য রামানুজ নামে। তিনি তাঁর প্রথম সাধনা করেছিলেন বিন্ধ্যপর্বতের জঙ্গলে। ভয়ঙ্কর সেই জঙ্গলেই তাঁর প্রথম তপস্যা। যা তাঁকে এক রাতে পেরাম্বুদুর থেকে কাঞ্চিতে নিয়ে গিয়েছিল। সেসব আলৌকিক কথা বাদ দিলেও আচার্য রামানুজ ১৩০ বছর জীবিত থেকে দক্ষিণে বৈষ্ণব ধারণাকে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন।

আনুমানিক ১১৩৮ সনে ২৪ পরগনার বারাসাতে কচুয়া গ্রামে রামকানাই ঘোষালের চতুর্থ সন্তান লোকনাথ, পরবর্তীতে তিনিই হন লোকনাথ ব্রহ্মচারী। ১০ বছর বয়সে পৈতের দিনই দণ্ডি নিয়ে সংসার ত্যাগ করেন তিনি। তারপর কালীঘাটের জঙ্গলে বহুবছর তপস্যা ধ্যান, এরও পরে হিমালয়ে ৩০ বছর সাধনা করার পরে সমতলে নেমে হাজির হলেন ওপার বাংলার বারদী গ্রামে। তাঁর সাধনা তপস্যাও ছিল নগরজীবনের বাইরে নিভৃতে। পাঞ্জাবের মালের কোটলার কাছে খুরদা গ্রামে ভোলাদাসের বাড়ি। তিনিও ছোটবেলায় বাড়ি ছেড়ে ভগবানকে খুঁজে পেতে রওনা দেন গুরু খুঁজতে। একটা কৌপিন পরে উত্তরাখণ্ডের বরফ ঢাকা গুহার পাশে উন্মুক্ত স্থানে তাঁর তপস্যা চলতে থাকে, একবার নদীতে পড়ে যান, পাহাড়ি এক মানুষ তাঁকে বাঁচায়। এরপর আরও কঠিন তপস্যা কনখল হরিদ্বারের কাছে বিল্বকেশ্বর পর্বতে। ২৭ বছরের সাধনার শেষে নেমে আসেন সমতলে। তাঁর নাম হয় ভোলানন্দ গিরি। তিনি বলতেন গৌরি শঙ্কর সীতা রাম/সদা বোলো চারো নাম/ সদগুরু দিয়া হর কা নাম/ খালি জিহ্বা কৌনো কাম? তাঁর খ্রিস্টান মুসলমান শিষ্যও ছিল। বাঘা যতীন, মানে যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ছিলেন এনার ভক্ত। বুড়িবালামের তীরে ইংরেজদের সঙ্গে লড়াইয়ে মারা যাওয়ার সময়েও ওনার গলায় ছিল ভোলানন্দ গিরি মহারাজের দেওয়া রুদ্রাক্ষ। ভগবান মানে তো মানেন, না মানেন তো না মানেন, কিন্তু ভারতবর্ষের সাধকদের ইতিহাস পড়লে একটা কথা খুব পরিষ্কার যে ধর্ম সাধনা, তপস্যা কোনওটাই লোকালয়ে হত না। আঠেরোশো শতাব্দীর আগে লোকালয়ের মধ্যে গড়ে ওঠা একটা মন্দিরও নেই। হিন্দু ধর্মের তীর্থ স্থান, মন্দির সবই তৈরি হয়েছে নগরজীবনের বাইরে। তার কারণ হিন্দু ধর্ম ছিল ব্যক্তিগত অভ্যাস রীতিনীতি, তপস্যা, সাধনা ছিল সন্ন্যাসী, মুনি ঋষিদের জন্য। খানিকটা মাস্টার্স করার মতো, বা পিএইচডিও বলতে পারেন, যার জন্য লাগত নিভৃত সাধনা। এমনকী রাজানুগ্রহের বাইরে থেকেই এই সাধনা হত, তাঁরা সাধনা করতেন তপস্যা করতেন দুর্গম জায়গায় অরণ্যে, পর্বতের গুহায়, যে বোধ প্রাপ্ত হত তা নিয়ে নেমে আসতেন সমতলে, সে চিন্তা সে বোধকে ছড়িয়ে দেবেন বলে। একরাশ মিডিয়া ক্যামেরা নিয়ে গুহায় বসে ফোটসেশন করনেওয়ালা মোদিজি এর বিন্দুবিসর্গও জানেন না। জানা সম্ভব নয়। আর সেই ঐতিহ্যের সামনে এই আদতে রাজনৈতিক ধান্দাবাজের দল যখন বসন রাঙিয়ে হিন্দুত্বের কথা বলেন তখন জানবেন তা আসলে গদি বাঁচানোর কৌশল মাত্র, আর কিছুই নয়।

হিন্দু ধর্মে বিগ্রহ তো খুব আধুনিক, বৈদিক সভ্যতার দেবতারা তো নিরাকার, প্রাক বৈদিক সভ্যতায় বরং দু’ চারটে মুর্তি পাওয়া গেছে। সেই হিন্দু ধর্মের ঠিকেদারি নেওয়া আরএসএস বিজেপি এখন অতি আধুনিক খ্রিস্টান ধর্ম বা মুসলমান ধর্মকে অনুসরণ করছেন। যেখানে ধর্মে একজন ইশ্বর, একটাই কেন্দ্র, একই পদ্ধতি একই মন্ত্রোচ্চারণ হবে। হিন্দু ধর্মের কাল্ট ফিগার বানাতে চান তাঁরা রামকে, তাঁরা চান সেই রাম হবেন নিরামিশাষী, তাঁরা চান সেই রামের মন্ত্রপাঠ হবে সংস্কৃততে, তাঁরা চাইছেন সেই ধর্মের কেন্দ্র হবে অযোধ্যা।
অতি চরম মূর্খও হিন্দু ধর্মের এই পরিণতির কথা মেনে নেবে না, আস্তিক নাস্তিক একই সঙ্গে হাসিতে ফেটে পড়বে কারণ ধর্ম নয় মোদিজির লক্ষ্য ধর্মকে ঢাল বানিয়ে দেশ শাসন, তাই রাম রাজ্য নয় তিনি রামমন্দির গড়তেই সময় কাটিয়ে দিলেন।

এদেশে শঙ্করাচার্যও পূজিত হন, বিবেকানন্দও, রামানুজম বা চৈতন্যও হিন্দু সমাজের অংশ, কবীর বা নানকও তাই। এদেশ ভক্তির, এদেশ শাক্তের, এদেশ সাংখ্য দর্শনের, এদেশ একেশ্বরবাদীদের, এদেশের বহুইশ্বরবাদ প্রচলিত, এদেশে ধর্মস্থলে পূজিত হন আস্তিক মুনি ঋষিরা, একই আসনে যজ্ঞের ফল ভাগ করে নেন নাস্তিক চার্বাক পন্থীরা। এদেশে ভগবান বাস করে মানসলোকে, মন্দির তো বাহ্যিক আড়ম্বর মাত্র। এক্কেবারে ছোট্ট করে সারসংক্ষেপে বলতেই পারেন, এই মোদি যোগী শাহের দল আসলে হিন্দুই নন, তাঁরা ভেকধারী রাজনীতিবিদ, যাঁরা গদি দখলের জন্য হিন্দু ধর্মকে ব্যবহার করছেন।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১ ১২
১৩ ১৪ ১৫১৬ ১৭ ১৮ ১৯
২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫ ২৬
২৭ ২৮ ২৯ ৩০  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

হাড্ডাহাড্ডি লড়াই, সেমিফাইনালে বার্সেলোনা, পিএসজি
বুধবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫
এপ্রিলেই ধনী হবে ছয় রাশির জাতক, জানুন রাশিফলের বিস্তারিত আপডেট
বুধবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫
ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় সোনিয়া, রাহুলের বিরুদ্ধে ইডির চার্জশিট
বুধবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫
গরম থেকে কবে মিলবে মুক্তি? জানুন আবহাওয়ার বিস্তারিত আপডেট
বুধবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫
অবিশ্বাস্য, এমনভাবে হারতে পারে শুধু KKR
মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫
মুর্শিদাবাদে তদন্তকারী দল পাঠাচ্ছে মানবাধিকার কমিশন!
মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫
শ্রেয়সের পঞ্জাবের ব্যাটিং বিপর্যয়, নাইটদের লক্ষ্য ১১২
মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫
ইজরেয়ালিদের জন্য ‘নো এন্ট্রি’! বড় ঘোষণা করল মলদ্বীপ সরকার
মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫
কলকাতার আকাশে সিঁদুরে মেঘ, বড় বিপদের পূর্বাভাস দিল সমীক্ষা
মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫
বাংলায় ধেয়ে আসছে সাইক্লোন?
মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫
স্কুলে স্কুলে বোমাতঙ্ক
মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫
শকুনের দৃষ্টি! দেখুন স্পেশ্যাল রিপোর্ট
মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫
মহাকাশে মাত্র ১১ মিনিটের সফর, শুরু হল আমেরিকায়, খরচ কত?
মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫
নববর্ষের দিন নদিয়াতে ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনা
মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫
সলমনের গাড়ি উড়িয়ে দেবার ‘হুমকি’ দেওয়া ব্যক্তি পুলিশের জালে!
মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.
Developed By KolkataTV Team