সাকিল মুস্তাক, সল্টলেক: আন্তর্জাতিক অস্ট্রেলিয়ান ভুয়ো কল সেন্টারের (International Australian fake call center) হদিশ। সাইবার ক্রাইম উইং (Cyber Crime Wing) এর হাতে গ্রেফতার ২১, তার মধ্যে চারজন মেয়ে। আরও তথ্য পেতে একুশ জনের মধ্যে চারজনকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এদের কাছ থেকে ২৯ টি কম্পিউটার, ২৩ টি মোবাইল ফোন, দুটো ল্যাপটপ দুটো রাউটার, একটা হার্ডডিক্স, ২৯ টি পোর্ট এবং তিনটি পেনড্রাইভ, ভিকটিমদের তথ্য, অ্যাটেনডেন্স রেজিস্টার কার্ড এবং দুটো অ্যাটেনডেন্স রেজিস্টার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
সাইবার ক্রাইম উইং এর ডিআইজি অঞ্জলি সিং (Cyber Crime Wing DIG Anjali Singh) জানিয়েছেন, একটি সূত্র মারফৎ তারা খবর পায় যে লেকটাউনের দক্ষিণ দাড়িতে একটি ইন্টারন্যাশনাল কল সেন্টার চলছে। সেই সূচনা থেকে একটি আইপি এড্রেস পায় তারা। এরপরই সিসি ডব্লিউ টিম সেই আইপি অ্যাড্রেস ধরে ওই কল সেন্টারের হদিশ পায়। এরপরেই সে কল সেন্টারে সিসি ডাব্লু টিম পৌঁছে গিয়ে দেখা যায় সেখানে কুড়ি ২২ জন ২৮ থেকে ২৯ টি ল্যাপটপ কম্পিউটার নিয়ে কাজ করছে International Calling চলছে এবং তাদের কানে হেডফোন লাগানো রয়েছে। এরপরেই তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ডকুমেন্টস চাওয়া হয়।
কিন্তু তারা কোন ডকুমেন্টস না দেওয়ার পরে জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায় যে তারা এখানে একটা ইন্টারন্যাশনাল কল সেন্টার চালায়। এরপরে সেই ওপেন কম্পিউটার বা ল্যাপটপে দেখা যায় সেখানে আই বিম সফটওয়্যার লাগানো রয়েছে। সেই সফটওয়্যার কে নিয়ে ওরা ন্যাশনাল ভি ও আই পি কল করছে।
আরও পড়ুন: ATM থেকে টাকা তোলার চার্জ বাড়ছে, কবে থেকে লাগু দেখে নিন
এরপর তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা জানায় তারা চেন্নাই এবং ফ্রান্সের আইপি নিয়ে অস্ট্রেলিয়ান সিটিজেনদের কে ভি ও আই পি কল করা হয়।
সেই কল করে ওনাদেরকে জানানো হয় যে তারা ন্যাশনাল ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক সেটা একটা অস্ট্রেলিয়ান নেটওয়ার্ক সার্ভিস প্রোভাইডার আছে। সেই সার্ভিসে তারা কাজ করে এবং তারা ওখানকার কর্মচারী। তারা ন্যাশনাল ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক সার্ভিস প্রোভাইডারের কর্মচারী পরিচয় দিয়ে অস্ট্রেলিয়ান সিনিয়র সিটিজেনদেরকে বলে যে আপনার যে নেটওয়ার্ক সার্ভিস আছে সেটা পপার ওয়্যার এর উপরে কাজ করছে সেই proper war কে তারা অপটিক্যাল ফাইবারে শিফট করব। এই কথা বলে তাদেরকে প্রতারণা করা হয়। যদি কেউ রাজি হয়ে যায় সেই কলটাকে ম্যাচুয়ার করে ওরা টালিগঞ্জের একটা কল সেন্টারের অফিস আছে সেখানে কল শিফট করে।
এই কল সেন্টার শিপ করার পরে ওখানকার যে মালিক আছে তারা চায় না এবং দিল্লির মাধ্যমে ডলার এবং গিফট কার্ডকে হাওয়ালার মাধ্যমে ক্যাশ করতো। এবং নিজের অ্যাকাউন্টে টাকা নিত।
পুরো জিজ্ঞাসাবাদ করে আমরা একুশ জনকে গ্রেফতার করেছে তাদের মধ্যে চারজন মেয়ে আছে। এরা যখন অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকদের ফোন করত তখন তারা একটা ওখানকার নিকনেম ব্যবহার করত। তারা নিজেদের নাম নিত না। এদের কাছ থেকে ২৯ টি কম্পিউটার, ২৩ টি মোবাইল ফোন, দুটো ল্যাপটপ দুটো রাউটার, একটা হার্ডডিক্স, ২৯ টি পোর্ট এবং তিনটি পেনড্রাইভ, ভিকটিমদের তথ্য, অ্যাটেনডেন্স রেজিস্টার কার্ড এবং দুটো অ্যাটেনডেন্স রেজিস্টার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
২১ জনকে গ্রেফতার করা হয় তাদের মধ্যে চারজনকে তারা নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা করবে কারা কল ম্যাচিওর করে টালিগঞ্জের কল সেন্টারে পাঠাত।
গত ৩১ জানুয়ারিতে বারুইপুর সোনারপুরে সাউথ ওইয়িং সোসাইটির মধ্যে একটি কল সেন্টার ধরা পড়েছিল। যারা ইউএস এর সিটিজেনদেরকে ফ্রড করত। সেখান থেকেও অনেক কিছু সিজ করা হয়। সেই কল সেন্টারের মেন আসামি জয় হালদার তাকে গ্রেফতার করে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদ করার পর সাফিকত সাফিকে ৩১ শে ফেব্রুয়ারিতে গ্রেফতার করা হয়। এর থেকে ২৬ লাখ টাকা উদ্ধার হয়।
তার যে কৃপটো ওয়ালেট আছে সেটা পাওয়া গেছে। তার মধ্যে থেকে ২০৪ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এই টাকা এক বছরের মধ্যে ট্রানজেকশন হয়েছে। ২০৪ কোটি টাকা রিকভারি করার কাজ চলছে।
দেখুন অন্য খবর: