কলকাতা: এবার ‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস’ সংস্থার সব ডিরেক্টর, সিইও এবং সদস্যদের সম্পত্তির খতিয়ান চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সম্পত্তির এই খতিয়ান আদালতে পেশ করতে হবে। একই সঙ্গে ওই সংস্থার রেজিস্ট্রেশন কবে হয়েছে, সংস্থার সঙ্গে সিনেমা জগতের কোনও যোগাযোগ ছিল কি না, তাও ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জানাতে হবে বলে বৃহস্পতিবার নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। আইনি মহল মনে করছে, ইডির দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পরের দিনই আদালতের এই নির্দেশের ফলে অভিষেকের উপর চাপ কিছুটা বাড়ল।
ইডির ডাকে সাড়া দিয়ে গতকাল সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিয়েছিলেন অভিষেক। দীর্ঘ সাড়ে নয় ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদপর্বে লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস নিয়ে ইডি আধিকারিকরা অভিষেককে বেশি প্রশ্ন করেন। জিজ্ঞাসাবাদে অভিষেক জানান, তিনি এখনও ওই সংস্থার সিইও পদে রয়েছেন। রাতে সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বেরিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে সাংবাদিক বৈঠক করেন তৃণমূল নেতা। তিনি বলেন , আজকের নিট ফল মাইনাস ২। শিক্ষা দুর্নীতির দশ পয়সা এই সংস্থায় ঢুকেছে, তা ইডি প্রমাণ করে দেখাক। সাহস থাকলে আমার বয়ান ইডি বৃহস্পতিবার আদালতে পেশ করুক।
‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের’ প্রাক্তন সিওও সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এখন জেলবন্দি। গ্রেফতার হওয়ার আগে সুজয়কৃষ্ণ সাংবাদিকদের বলেছিলেন আমার সাহেবকে কেউ ছুঁতে পারবে না।তাঁর সাহেব কে, জানতে চাওয়া হলে সুজয়কৃষ্ণের জবাব ছিল, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সুজয়কৃষ্ণকে জেরার সূত্রেই অভিষেকের সংস্থার সঙ্গে শিক্ষা দুর্নীতির যোগ সামনে আসে।সেই সূত্র ধরেই অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি। দিন কয়েক আগেই বিচারপতি অমৃতা সিনহা ইডিকে ভর্ৎসনা করে বলেছিলেন, অভিষেককে একবার সমন পাঠিয়ে আপনারা হাত গুটিয়ে বসে থাকলেন? উপর তোলা থেকে কি আপনাদের চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল? সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, তাঁর বিরুদ্ধে কোনও কঠোর পদক্ষেপ করা যাবে না। তারা তো তদন্ত করতে বাধা দেয়নি।
বিরোধীদের অভিযোগ, ‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস’ আসলে একটি ভুয়ো সংস্থা। আরও কিছু শিখণ্ডী সংস্থা বানিয়ে সেগুলির মাধ্যমে বেআইনি লেনদেন হত। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে ওই সংস্থা নিয়ে প্রথম প্রশ্ন তুলেছিলেন বামফ্রন্ট সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেব। অভিষেকের বাবা এবং মা ওই সংস্থার ডিরেক্টর বলে অভিযোগ। অভিষেকের স্ত্রীও সংস্থার ডিরেক্টর পদে ছিলেন।