কলকাতা: সোমবার কলকাতার কসবায় (Kasba Incident) বেসরকারি স্কুলের ছ’তলা থেকে পড়ে মৃত্যু হয় দশম শ্রেণির এক ছাত্রের। এই ঘটনার পর স্কুলের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ করে মৃতের পরিবার। তাদের দাবি, স্কুল কর্তৃপক্ষই ছাত্রকে খুন করে আত্মহত্যার গল্প সাজাচ্ছে। স্কুলের বিরুদ্ধে ছাত্রটিকে মানসিক নির্যাতন করার অভিযোগ এনেছেন তাঁর বাবা। এই অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার রাতে স্কুলের অধ্যক্ষসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় খুনের অভিযোগ দায়ের করে পুলিশ। এরই মাঝে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হল ওই বেসরকারি স্কুলটি। একটি নোটিস (Notice) দিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, পরবর্তী নোটিস না দেওয়া অবধি স্কুল বন্ধ থাকবে (Shut Down)।
বৃহস্পতিবার সকালে ছেলেমেয়েদের স্কুলে দিতে গিয়ে অভিভাবকেরা দেখেন, মূল গেটে একটি নোটিস লাগিয়ে রেখেছে। এই নোটিসে স্বাক্ষর রয়েছে প্রিন্সিপালেরও। ছাত্রমৃত্যুর ঘটনাটিকে অনভিপ্রেত বলে চিহ্নিত করা ও হয়েছে। শিক্ষাবর্ষের মাঝপথে পড়ুয়াদের অন্য স্কুলে ভর্তি করাতে পারবেন কি না, তা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে তাঁদের মধ্যে।
আরও পড়ুন: মমতা-অভিষেকের ধরনা কর্মসূচিকে ভয় পাচ্ছে শাহি পুলিশ, ফের অনুমতি চাইল তৃণমূল
একইসঙ্গে ছাত্রের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য চিকিৎসকদের বিশেষ দল গঠন করেছে পুলিশ। ঘটনার পর রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ স্কুলের প্রিন্সিপাল কসবা থানার ওসিকে মেল করে সমস্ত ঘটনার বিবরণ জানান। এই ঘটনায় স্কুলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ছাত্রের বাবা বলেন, আজ প্রজেক্ট জমা দেওয়ার কথা ছিল। দিতে পারেনি বলে, ওকে বকাবকি করেন শিক্ষকরা। কান ধরে দাঁড় করিয়েও রাখা হয়েছিল সবার সামনে। ও অপমানিত বোধ করেছিল। ওই ছাত্রের পরিবারের অভিযোগ, কেন স্কুলের নিরাপত্তারক্ষীরা ছাত্রের গতিবিধির দিকে নজর রাখল না। স্কুল কর্তৃপক্ষের বয়ানেও অসঙ্গতি রয়েছে। তিনি আরও বলেন, করোনার সময় স্কুলের বেতন কমানে নিয়ে আমি অন্য অভিভাবকদের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলাম। প্রধানশিক্ষিকা আমাকে বলেছিলেন, আপনাকে চিহ্নিত করে রাখা হল। ওরা আমার ছেলেকে মারধরকে মেরে ফেলেছে।
মৃত ছাত্রের বাবা আরও বলেন, পাঁচতলা থেকে পড়ে তাঁর ছেলের শরীরের কোনও হাড় ভাঙেনি। কান এবং মুখ থেকে রক্ত পড়ছিল। সেই কারণেও সন্দেহ হচ্ছে। ঘটনার পর স্কুল থেকে ফোন করা হয়েছিল। বলা হয় তাঁর ছেলে সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়েছে। তবে চিকিৎসার পর সুস্থ আছে। হাসপাতালে পৌঁছে তাঁরা ছেলের মৃত্যুসংবাদ পান। এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বিচার চেয়েছে মৃত ছাত্রের পরিবার।