রায়গঞ্জ: শিক্ষাদানের মহান ব্রত যার কাজ, তিনিই প্রকৃত শিক্ষক। শিক্ষককে বলা হয় মানুষ গড়ার কারিগর। অভাবী পরিবারের সন্তানদের মধ্যে, যাদের সম্ভাবনা রয়েছে এমন ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বুনিয়াদপুরের অর্জুন মন্ডল। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বছরের পর বছর সরকারি চাকরির কোচিং দিয়ে চলেছেন অর্জুনবাবু।
ছোট থেকেই নিজেও অনেক ঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়েই জীবনের পথে অগ্রসর হয়েছেন অর্জুনবাবু। বর্তমানে উচ্চপদস্থ আধিকারিক তিনি। জীবনে সফলতার মুখ দেখলেও শেকড়ের টান ভুলে যাননি অর্জুনবাবু। একটা সময় বহু শিক্ষক বিনামূল্যে পড়িয়েছেন তাঁকে। করোনা কালে প্রথম উপলব্ধি হয়, অসহায় দরিদ্র ছাত্রদের জন্য কিছু করতে হবে। যেই ভাবা সেই কাজ! সেই থেকেই শুরু বিনামূল্যে চাকরির পরীক্ষার প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা ছাড়িয়ে পার্শ্ববর্তী উত্তর দিনাজপুর মালদা থেকেও বহু ছাত্র-ছাত্রী অর্জুনবাবুর কাছে সরকারি চাকরির প্রশিক্ষণ নিতে আসেন প্রত্যহ। কয়েক বছরে WBCS, West Bengal Police, SSC,Army, BSF,CRPF, ANM ,GNM বিভিন্ন চাকরির জন্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রচুর ছাত্র ছাত্রী ইতিমধ্যেই সরকারি চাকরি পেয়েছেন।
আরও পড়ুন: ভিজিটিং কার্ড ছাপিয়ে খুনের অর্ডার নেওয়া হয়, এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনা
একটা সময় পয়সার অভাবে যে ছাত্রছাত্রীরা বড় সংস্থা এবং কোচিং সেন্টারে সরকারি চাকরির প্রশিক্ষণ নেওয়ার কথা ভাবতেও পারত না। তাদের পাশে দাঁড়িয়ে স্বপ্নকে সত্যি করে চলেছেন প্রত্যেক মুহূর্তে অর্জুন মন্ডল। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পড়ানোর পাশাপাশি ছাত্রদের সমস্যায় বইপত্রসহ বিভিন্ন শিক্ষণ সামগ্রী দিয়ে সবসময় সাহায্য করেন এই শিক্ষক।
সরকারি চাকরির প্রশিক্ষণ নিতে আসা ছাত্র সুমিত চক্রবর্তী বলেন, বর্তমানে শিক্ষাকে বিজনেস মডেলে না দাঁড় করিয়ে আমাদের স্যার যেভাবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে আমাদের শিক্ষা প্রদান করে চলেছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়। আরেক ছাত্রী বুলটি সরকার বলেন, বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে সম্পূর্ন বিনা পয়সায় স্যার যেভাবে চাকরির পরীক্ষার প্রশিক্ষণ দিয়ে চলেছেন তা ভাবাই যায় না। পাশাপাশি যতটা যত্ন করে পড়ান এবং সবদিক থেকে আমাদের সাহায্য করেন তা সত্যিই আমাদের অবাক করে। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সরকারি চাকরির প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়ে শিক্ষক অর্জুন মন্ডল বলেন হয়তো সবার প্রয়োজন নেই, তবে পয়সার অভাবে যেন একজন ছাত্রেরও স্বপ্নের উড়ান বন্ধ না হয় সেজন্যই আমার এই উদ্যোগ।