কলকাতা: দক্ষিণ কলকাতার (South Kolkata) জেলা কমিটি নিয়ে বিজেপির (BJP) অন্দরে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এমন একজনকে জেলার সহ সভাপতি করা হয়েছে, যাঁর কংগ্রেস (Congress) এবং বিজেপিতে যাতায়াত প্রায় নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন অভিযোগ করে দলের এক শ্রেণির কর্মী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে (Amit Shah) চিঠি দিয়েছেন।
বিজেপি কর্মীবৃন্দের নামে অমিত শাহকে লেখা ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, এটা কোন প্রদেশের জেলা কমিটি? পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ কলকাতা না বিহার, উত্তরপ্রদেশ, জনমানসে তা ঠিক স্পষ্ট নয়। তার মধ্যে আবার কংগ্রেসের দালাল সৌমেন দত্ত রায় দলে তৃতীয় বার ফিরে এসে একলাফে জেলার সহ সভাপতি হয়ে গিয়েছেন, যাঁর কংগ্রেস বিজেপিতে যাওয়া- আসা রোজকার ব্যাপার। যিনি সুযোগ সন্ধানী এবং বিজেপিকে পিঠে ছুরি মারতে সিদ্ধহস্ত। উনি যে বিজেপির ঘরের খবর কংগ্রেসকে পাচার করছেন না বা উনি যে আবার কংগ্রেসে ফিরে যাবেন না, তার নিশ্চয়তা কোথায়? এ তো নিজের ঘরে দুধকলা দিয়ে কালসাপ পোষার শামিল। তাঁকে অবিলম্বে সমস্ত দায়িত্ব থেকে না সরালে দলের সাধারণ কর্মীরা কেউই লোকসভা ভোটে দলের হয়ে মাঠে নামবেন না।
আরও পড়ুন:তৃণমূলের প্রতি ক্ষোভ থেকে বিজেপিতে যোগ, দাবি ধূপগুড়ির প্রাক্তন বিধায়কের
ওই চিঠিতে আরও অভিযোগ, এই সব গোলমেলে কমিটি গঠন আর চ্যাংব্যাংদের দলে ঢুকিয়ে সংগঠনে জায়গা দেওয়ার পিছনে উত্তরবঙ্গের এক সাংসদের (যিনি প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী) কলকাঠি কাজ করছে। বিক্ষুব্ধদের বক্তব্য, দলের রাজ্য সভাপতিকে শাজাহান সাজিয়ে তার নামে এসব হচ্ছে। অথচ তাঁর কোনও ক্ষমতাই নেই। তাঁর কাঁধে বন্দুক রেখে সংগঠন চালাচ্ছেন মিরজাফর। আর ওই মিরজাফরকে কব্জা করে পুতুল নাচ নাচাচ্ছেন উত্তরবঙ্গের ঘসেটি বেগম।
বিক্ষুব্ধরা চিঠিতে লিখেছেন, বাংলার বিজেপির জেলা কমিটিতে ২৫ জনের মধ্যে ১৩ জনই অবাঙালি (৫২ শতাংশ)। রাজ্য স্তরে অবাঙালি, যুব মোর্চায় অবাঙালি, উত্তর কলকাতায় অবাঙালি, দক্ষিণ কলকাতায় অবাঙালি, কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা সবাই গোবলয়ের। আর ঠিক এইখানেই বিজেপি মার খাচ্ছে। ভোট চাইতে গিয়ে কর্মীরা মানুষের কাছে কী জবাব দেবেন?
বিজেপির রাজ্য, জেলা থেকে শুরু করে একেবারে মণ্ডল স্তরের নতুন কমিটি নিয়ে জেলায় জেলায় নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। নেতৃত্বের মধ্যে বাঙালি, অবাঙালি নিয়েও বিস্তর প্রশ্ন রয়েছে। বিভিন্ন জেলায় এই কমিটি ঘিরে বিজেপির অন্দরে প্রায়ই বচসা থেকে শুরু করে মারামারি পর্যন্ত ঘটছে। দলের এক প্রবীণ নেতা বলেন, এরকম চলতে থাকলে লোকসভা ভোটে ৩৫ তো দূরের কথা, বিজেপি ৩টি আসনও পাবে না।